ব্রুডিং অবস্থায় বাচ্চা মারা যাওয়া রোধে করণীয়

443

IMG_20190304_171659-696x385-600x332ব্রুডিং অবস্থায় বাচ্চা মারা যাওয়া রোধে করণীয় সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই জানা নেই। আমাদের দেশে হাঁস–মুরগি পালন একটি লাভজনক পেশা। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই হাঁস-মুরগি পালন করা হয়ে থাকে। হাঁস-মুরগি পালনের ক্ষেত্রে ব্রুডিং অবস্থায় অনেক সময় বাচ্চা মারা যায়। আসুন জেনে নেই ব্রুডিং অবস্থায় বাচ্চা মারা যাওয়া রোধে করণীয় সম্পর্কে-

ব্রুডিং অবস্থায় বাচ্চা মারা যাওয়া রোধে করণীয়ঃ
১। ব্রুডিং এ সঠিক তাপমাত্রা না দেয়া হলে।

প্রতিকারঃ বাচ্চা প্রতি ২ ওয়াট করে তাপের ব্যবস্থা রাখতে হবে। অর্থাৎ ৩০০ বাচ্চার জন্য ৬০০ ওয়াট তাপের ব্যবস্থা রাখতে হবে।

২। শীতকালে ব্রুডারে পর্যাপ্ত জায়গা/ফ্লোরস্পেস না দিলে।

প্রতিকারঃ শীতকালে ২৫০-৩০০ বাচ্চার জন্য ৭-৮ ফুট ব্যাসের ব্রুডার বানিয়ে ব্রুডিং করতে হবে।

৩। একসাথে অনেকগুলো বাচ্চা ব্রুডিং করলে বা বাচ্চার ঘনত্ব বেশী হয়ে গেলে।

প্রতিকারঃ শীতের সময় ব্রুডার প্রতি ২৫০-৩০০ টা বাচ্চা দিয়ে ব্রুডিং করতে হবে। যত কম বাচ্চা দিয়ে ব্রুডিং করবেন তত মর্টালিটি হ্রাস পাবে।

৪। ব্রুডার পর্দা দিয়ে ঢেকে না দিলে তাপ ব্রুডার থেকে বেরিয়ে গিয়ে তাপের অপচয় ঘটায় এবং ঠান্ডা বাতাস ব্রুডারের ভিতর প্রবেশ করার সুযোগ সৃষ্টি করে। ফলে ব্রুডারের তাপমাত্রা কমে গিয়ে মর্টালিটি ঘটে।

প্রতিকারঃ ব্রুডারের চারপাশ ও উপরে কাপড়/সংবাদপত্র দিয়ে ঢেকে তাপ সংরক্ষন করতে হবে। এক্ষেত্রে কিছু অংশ ফাঁকা রেখে অ্যামোনিয়া ও কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস বের হয়ে যাবার ও বিশুদ্ধ বাতাস ব্রুডারের ভিতর প্রবেশের ব্যবস্থা রাখতে হবে।

৫। লিটারের পুরুত্ব কম হলে ফ্লোর থেকে ঠান্ডা লেগে বাচ্চার শরীরের তাপমাত্রা কমিয়ে দেয়। এসময় উপর থেকে যতই তাপ দেন না কেন নীচ/ফ্লোর থেকে ঠান্ডা লাগলে বাচ্চার মর্টালিটি বন্ধ হবে না।

প্রতিকারঃ ফ্লোর থেকে যেন ঠান্ডা না লাগে সেজন্য লিটারের পুরুত্ব ৩-৪ ইঞ্চি করে দিতে হবে।

৬। পর্যাপ্ত খাদ্য ও পানির পাত্র না দেয়া হলে বাচ্চা পরিমান মত খাদ্য ও পানি গ্রহন করতে পারে না। ফলে এনার্জি লস ও ডিহাইড্রেশনের কারনে বাচ্চা মারা যেতে পারে।

প্রতিকারঃ ৫০ টা বাচ্চার জন্য ১ টা ট্রে ফিডার ও ১ টা পানির পাত্র দিতে হবে। শীতকালে পানির পাত্র নিয়ে কিপ্টামি অনেক বড় ক্ষতি করতে পারে।

৭। হাডলিং এর অপর নাম গাদাগাদি করা বা এক সাথে জড়ো হওয়া। আর্লি চিকস্ মর্টালিটির অন্যতম একটি কারন হলো হাডলিং। সাধারনত বাচ্চাগুলো ঠান্ডা অনুভব করলে এবং যথেষ্ট ফ্লোরস্পেস না পেলে একত্রে জড়ো হতে থাকে এবং একটার উপর অারেকটি উঠে। এর ফলে অনেক বাচ্চা চাপা পরে মারা যায়।

প্রতিকারঃ প্রয়োজন মতমত তাপমাত্রা ও ফ্লোরস্পেস প্রদান করে বাচ্চার গাদাগাদি করার প্রবনতা রোধ করা যায়।

৮। কোল্ড শকের কারনে অনেক ক্ষেত্রে আর্লি চিকস্ মর্টালিটি হতে পারে। সাধারনত অধিক সংখ্যায় বাচ্চা ব্রুডিং করলে অনেক সময় পানি পান করতে গিয়ে বাচ্চা পানির পাত্রে পড়ে যায় এবং তীব্র শীতে মারা যায়। তাছাড়া ঠান্ডা পানি প্রদান করলে ও লিটার ভিজে গেলে বাচ্চা ঠান্ডা পেয়ে কোল্ড শকে মারা যেতে পারে।

প্রতিকারঃ বাচ্চা যেন পানির পাত্র পড়ে না যায় সেদিকে সতর্ক হতে হবে। সম্ভব হলে কুসুম গরম পানি বাচ্চাকে দেয়া যেতে পারে। তাছাড়া অল্প করে (২৫০-৩০০) বাচ্চা ব্রুডিং করতে হবে।

পরামর্শঃ

শীতকালে বাচ্চার শরীর গরম রাখতে ও শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখতে রাতের পানিতে মধু ও রসুনের রস ব্যবহার করতে পারেন।

মধুর ডোজ- ১-২ মিলি/লিটার
রসুনের ডোজ- ১০০ গ্রাম/৫০০ বাচ্চা

ফার্মসএন্ডফার্মার/৭ফেব্রু২০২০