বর্তমানে রাজশাহীর বাজারগুলোতে ব্রয়লার মুরগির প্রতিকেজিতে কমেছে ১০ টাকা। অপরদিকে ডিমের দামে কোন পরিবর্তন না হয়ে স্থিতিশীল রয়েছে। পোল্ট্রি ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখন মুরগি কেনা খুব রিস্ক। কখন দাম পড়ে যায় আন্দাজ করা যাবে না।
সাধারণ মানুষ হটাৎ মুরগির দাম বাড়ার কারণ হিসেবে তেলের দাম বাড়াকে দায়ী করলেও রাজশাহী পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের বক্তব্যের সাথে মিলে নি। এই সংগঠন জানায়, এক মাস আগে ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা তোলা বন্ধ ছিল ফলে ৩০ দিন পর সামান্য আমদানি কমেছে। ফলে দাম বেড়েছে। এখন কমছে অর্থ্যাৎ মাংস উৎপাদনে ফিরেছেন খামারিরা।
পোল্ট্রি সংশ্লিষ্টরা জানায়, বাজেট পরবর্তী সময়ে সরকারি সহযোগিতার দিকে বেশ আশাবাদী ছিলেন খাত সংশ্লিষ্ট সকলেই। খামারিরা চাতক পাখির মতো চেয়ে থেকেছেন- পোল্ট্রি ফিডের দাম হয়ত কমবে। কিন্তু সে আশায় গুড়েবালি। উল্টো খাদ্যের দাম বাড়তি রেখে কমে গেছে মুরগির দাম। কিন্তু এই চালান যেসব খামারি ধরতে পেরেছেন তারা মোটামটি লাভবান হতে পেরেছেন।
অন্যান্য মুরগির দাম বাড়তি থাকায় মাংস উৎপাদনের দিকে যেমন, ব্রয়লার, সোনালি, কক এসব মুরগির বাচ্চা আবারো খামারে তুলতে শুরু করেছেন বলে জানান রাজশাহী পোল্ট্রি এসোসিয়েশন।
আজ সোমবার (১৫ আগস্ট ২০২২) রাজশাহীর সাহেব বাজার এলাকার খুচরা ও পাইকারী দোকান ঘুরে দেখা গেছে। ব্রয়লার মুরগির দাম প্রতিকেজিতে ১০ টাকা কমে গেছে। খামারি পর্যায়ে ১৭০-১৮০ টাকা দাম হলেও তা খুচরা বাজারে এসে ১৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মুরগি দোকানদার মিঠু হোসেন বলেন, পোল্ট্রি মুরগি ১৯০ টাকা দরে বেঁচা হচ্ছে। ব্রয়লারের আমদানী নাই। এখন মুরগি কেনা যাবে না কারণ এখন দাম কমবে। দাম কমতে থাকলে রাতের মধ্যে ১০ টাকা কেজিতে নাই হয়ে যায় ফলে লোকসান হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়ছে কারণ বাজারে ব্রয়লার মুরগি একটু কম। সোনালি ২৮০ টাকা, কক মুরগি ২৮০ টাকা, হাঁস ৪৫০ টাকা, রাজহাঁস ৪৫০ টাকা কেজি বিক্রি করছি।
একই বাজারের ফাহিম ডিম ভান্ডারের মালিক মাসুদরানা বলেন, ডিমের দামে খামারিরা কিছুটা লাভবান হচ্ছেন। খাবারের দাম বেশি থাকলে লাভ কিছুটা কম হয়। লাল ডিম পাইকারিতে হালি ৪৮ টাকা টাকা আর সাদা ডিম ৪৬ টাকা দরে বিক্রি করছি।
রাজশাহীর পবা উপজেলার পোল্ট্রি খামারি ও উদ্যোক্তা মুজিবুর রহমান বলেন, মূলত প্রান্তিক এক হাজার-দু-হাজার মুরগির খামারিরা ধ্বংশ হয়ে গেছে। বাণিজ্যিকভাবে যেসব মুরগি ও ডিমের উৎপাদন হচ্ছে তা বাজারে আসলে দাম কমতে পারে। গতকয়েকদিনে মুরগিতে ৫০ টাকা বেড়েছে, আবার আজ ১০ টাকা কমেছে। এমন উঠানামার মধ্যেই আছি। এক চালান দাম পেলে পরের চালানেই শেষ! ১৩০ টাকার কম দামে মুরগি বিক্রি করে কোন লাভ নাই।
খাদ্যের দামে উৎপাদিত মুরগির ডিমের দাম তুলনামূলক ঠিক আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের দেশের সিন্ডিকেট সবকিছুর দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। ৪-৫ দফায় পোল্ট্রি খাদ্যের দাম বেড়ে এখন আকাশচুম্বী। ১৮’শ টাকার খাদ্যের বস্তা এখন ৩৩’শ টাকা। সরকারের কোন পদক্ষেপ নেই। খামারি মরলে তাদের কি?
জানতে চাইলে রাজশাহী পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক বলেন, রাজশাহীতে করোনায় ৭০ ভাগ খামার বন্ধ। মাঝখানে উৎপাদন খরচ আরো বেড়ে গেলো, কারণ ভুট্টা, সয়াবিন মিল, প্রোটিনের দাম বেড়েছে। রেডি মুরগির দাম কমায় খামারিরা আরো বিপাকে পড়েছে। এখন দাম বেড়েছে তা কয়েকদিনের মধ্যে কমে আগের দামে চলে যাবে।
ফার্মসএন্ডফার্মার/১৬আগস্ট ২০২২