ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয়ার পরপরই বাংলাদেশে পণ্যটির বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। শুল্কযুক্ত দামের পেঁয়াজ এখনও আমদানি না হলেও দেশের বাজারে একদিনের ব্যবধানে কেজিপ্রতি অন্তত ২০ টাকা বেড়ে গেছে। বাজারে সিন্ডিকেটের প্রভাবে হঠাৎ এমন অস্থিরতা তৈরি হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। যদিও ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরবরাহ কম থাকায় পণ্যটির দাম বাড়ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এতদিন ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে কোনো শুল্ক দিতে হতো না বাংলাদেশকে। তবে ১৯ আগস্ট হঠাৎ পেঁয়াজ রপ্তানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয় দেশটি। দেশটির বাজারে পেঁয়াজের দামের নাগাল টানতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে জানানো হয়। গতকাল (২০ আগস্ট) থেকে এটি কার্যকর হয়ে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বহাল থাকবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সবশেষ ভারত থেকে ৩৮ থেকে ৪৬ টাকায় পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে। শুল্ক আরোপের পর কেজিপ্রতি ৫৩ থেকে ৬৫ টাকা পর্যন্ত খরচ পড়বে। এদিকে ভারত থেকে এখনও বাড়তি দামে পেঁয়াজ আমদানি শুরু করেননি ব্যবসায়ীরা। তারপরও কেবল শুল্ক আরোপের খবর শুনেই দেশের বাজারে দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত শনিবার দেশের অন্যতম বৃহৎ ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে ভালো মানের ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ৪৬ থেকে ৫০ টাকা। গতকাল রোববার বিক্রি হচ্ছে ৬৬ থেকে ৭০ টাকা। এছাড়া চট্টগ্রামের রিয়াজ উদ্দিন বাজারসহ বিভিন্ন খুচরা দোকানে কেজিপ্রতি পেঁয়াজ ৮০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে।
এদিকে রাজধানীর পাইকারি বাজার কারওয়ান বাজারে দেশি ভালো মানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা দরে। একদিন আগেও যা বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা। আর ভারতের আমদানি করা পেঁয়াজ গতকাল বিক্রি হয়েছে ৭০ টাকা কেজিতে, শনিবার যার দাম ছিল ৫০ টাকা।
কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন, শুল্ক আরোপের ঘোষণায় পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে। আমাদের দেশের ব্যবসায়ীদের স্বভাব এমনই। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তি দামের পণ্য দেশে আসার আগেই দাম বাড়িয়ে দেন তারা। আবার কোনো সময় দাম কমলেও পণ্য এখনও আসেনি বলে দাম কমাতে চান না।
গতকাল এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত ১৩ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিয়েছি, দেশে এসেছে মাত্র তিন লাখ টন। এর অর্থ হলো, দেশেও পেঁয়াজ আছে। মাঠ পর্যায়েও খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, দেশের কৃষকদের নিকট এখনও তুলনামূলকভাবে পেঁয়াজের মজুত আছে। কাজেই ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করলেও দেশে পেঁয়াজের দামে তেমন প্রভাব পড়বে না। শুল্ক আরোপের ঘোষণায় এখন দাম কিছুটা বাড়লেও কয়েক দিন পর কমে আসবে।’ যদিও বাস্তব অবস্থা ভিন্ন।