মা‌নিকগ‌ঞ্জে ব্রি ৪৮ ধান চা‌ষে দ্বিগুণ ফলন

409

ধান কাটা

‌মো. সো‌হেল রানা খান, মা‌নিকগঞ্জ: মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপ‌জেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রথমবারের মতো উচ্চ ফলনশীল নতুন জাতের ব্রি ধান ৪৮ (আউশ ধান) চাষ করে দ্বিগুণ ফলন পেয়েছে কৃষকেরা। আগে প্রতি বছর স্থানীয় জাতের ধান চাষ করে যে ফলন পেত নতুন জাতের ব্রি ধান ৪৮ চাষ করে এ বছর তার চেয়ে দ্বিগুণ ফলন পেয়েছে তারা।

আর প্রথম বার চা‌ষেই দ্বিগুন ফলন হওয়ায় নতুন এ জাতের ধান চাষে আগ্রহ বাড়ছে এলাকার কৃষকদের।

সাটুরিয়া উপজেলা কৃষি অ‌ফিস সূত্রে জানা গেছে, সাটুরিয়া উপজেলার কৃষকরা আউশ মওসুমে স্থানীয় বিভিন্ন প্রজাতির ধান আবাদ করে থাকে। এ বছর আউশ মওসুমে সাটুরিয়া উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে প্রদর্শনী হিসেবে স্থানীয় ৩২ জন কৃষকে এবং প্রণোদনা হিসেবে ২০০ জন কৃষকে উচ্চফলনশীল ব্রি ধান ৪৮ (আউশ ধান) বীজ ও সার দেওয়া হয়।

সাটু‌রিয়া উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ জানায়, এনএটিপি ২ প্রকল্পের আওতায় কৃষকদেরকে প্রদর্শনীর জন্য বীজ ও সার সরবরাহ করা হয়েছে। গত সপ্তাহ থেকে প্রদর্শনী স্পট গুলোতে ধান কাটা শুরু হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ও এ জাতের ধানের জীবনকাল কম হওয়ায় এবং পোকামাকড় দমনে কৃষি বিভাগের পরামর্শে প্রতি শতক জমিতে ২০ থেকে ২৫ কেজি পর্যন্ত ফলন হয়েছে যা অন্যান্য বছরের তুলনায় দ্বিগুণ।

সাটু‌রিয়ার বরাঈ‌দের কৃষানী ঝিলিমন বেগম জানায়, স্থানীয় জাতের ধান আবাদ করে প্রতি শতক জমিতে ১০ থেকে ১৫ কেজির বেশি ফলন হয় না। এ বছর নতুন জাতের ব্রি ধান ৪৮ চাষ করে আমরা প্রতি শতাংশ জমিতে ২০ থেকে ২৫ কেজি ফলন পেয়েছি।
সাটু‌রিয়ার পাড়াগ্রা‌মের কৃষক নুরুল ইসলাম জানায়, প্রথম বা‌রের ম‌তো ব্রি ধান ৪৮ চাষ ক‌রে ভাল ফলন পে‌য়ে‌ছি। অন্য ধা‌নের তুলনায় এ ধান‌টি মোটা ও কিছুটা লম্বা।

সাটু‌রিয়ায় কৃষক সেলিম হো‌সেন ও সবদুল মিয়া জানায়, ব্রি ৪৮ ধানের চা‌ষে এবার আমরা বেশি ফলন পেয়েছি। সামনের বছর এ জাতের আউশ ধান আরো বেশি আবাদ করবো।

সাটু‌রিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এমদাদুল হক জানায়, সাটুরিয়া এলাকায় কৃষকরা স্থানীয় আউশ ধানের আবাদ করতো। এ বছর আমরা কৃষকদের সাথে মতবিনিময় সভা করে উচ্চফলনশীল নতুন ব্রি ধান ৪৮ আবাদ করার পরামর্শ দেই এবং প্রদর্শণীর হিসেবে ৩২ জন কৃষককে বীজ সরবরাহ করি। এ ছাড়া ২শ কৃষককে প্রণোদনা হিসেবে বীজ ও সার দেয়া হয়।

কৃষকরা এ ধান চাষ করে প্রচুর ফলন পেয়েছে। তুলনা মূলক খরচ কম হওয়া এবং ফলন বেশি পাওয়ায় এলাকার কৃষকদের মাঝে এ প্রজাতির ধান চাষে আগ্রহ বেড়েছে। তাদের ফলন দেখে এলাকার অন্যান্য কৃষক বীজ পাওয়ার জন্য আগ্রহ দেখাচ্ছে। আগামী মৌসু‌মে প্রায় ৫০০ হেক্টর জমিতে এ ধানের আবাদ হবে ব‌লে অাশা করা যা‌চ্ছে।

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/মোমিন