মীরসরাইয়ে বেগুনের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে বেগুনের দাম ভালো থাকায় হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে। উপজেলার চাষিরা সাধারণত রবিশস্যের ওপর নির্ভরশীল। উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, প্রান্তিক চাষিদের কোনো জমি আর পতিত অবস্থায় নেই। বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে সবুজের সমারোহ। চারদিকে বেগুন গাছের সবুজ রঙে ভরে উঠেছে ফসলের মাঠ।
চলতি মৌসুমে বেগুনের বাম্পার ফলন ও ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। কোনো কৃষক ঘরে বসে নেই। প্রতিদিন সকাল হলেই কৃষকরা ক্ষেতের বেগুন বিক্রি করাসহ বেগুন ক্ষেতে পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত সময় পার করেন। বেগুন চাষে কৃষকরা লাভবান হওয়ায় আগ্রহ বাড়ছে অন্যান্য কৃষকদের। তাই গত বছরের চেয়ে চলতি মৌসুমে ব্যাপকহারে চাষিরা বেগুন চাষ করছেন। যাদের নিজস্ব জমি নেই, তারাও অন্যের জমি লিজ নিয়ে বেগুন চাষে সচ্ছল জীবিকা নির্বাহ করছেন। এ অঞ্চলের কৃষকরা বেগুন চাষের পাশাপাশি সারা মৌসুমে বিভিন্ন ধরনের সবজির আগাম চাষ করে বদলে দিয়েছেন নিজের ভাগ্যের চাকা।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ১৩০ হেক্টর জমিতে বেগুন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। এরই মধ্যে ১০০ হেক্টর জমিতে বেগুনের আবাদ হয়েছে। তবে উপজেলার দুর্গাপুর ও করের হাট ইউনিয়নে বেগুনের আবাদ বেশি হয়। এবার বেগুন ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা মণ বিক্রি করছেন পাইকারদের কাছে। আর খুচরা বিক্রেতারা প্রতি মণ বিক্রি করে এক হাজার ১০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকায়।
করেরহাট ইউনিয়নের পশ্চিম জোয়ারের দিয়ার চর এলাকার বেগুনচাষি নুরুল আবছার ও সুরুজ মিয়া জানান, প্রতি বছর তারা নিজ উদ্যোগে আগাম বেগুন চাষ করেন। নিজের জমি না থাকায় স্থানীয়দের থেকে দেড় বিঘা জমি লিজ নিয়ে বেগুন চাষ করেছেন। তারা জানান, উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় বিগত ৮ থেকে ১০ বছর ধরে বেগুন চাষ করছেন। তারা আরও জানান, এ বছর বেগুনের দাম ভালো। তবে গত বছরের চেয়ে একটু ফলন কম।
দুর্গাপুর ইউনিয়নের বেগুনচাষি ইউছুফ জানান, গত বছরের তুলনায় এবার বেগুনের দাম ভালো। প্রথমদিকে এক হাজার ৩০০ থেকে দেড় হাজার টাকা দরে প্রতি মণ বেগুন বিক্রি করছি। এখন একটু কম দামে বিক্রি হচ্ছে। আশা করছি, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আরও মাসখানেক বেগুন বিক্রি করতে পারব। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রঘুনাথ নাহা বলেন, চাষিদের বেগুন চাষে উদ্বুদ্ধ করা ও বিভিন্ন সহযোগিতা দেয়ার চেষ্টা করে আসছি। এ অঞ্চলের মাটি বেগুন চাষের উপযোগী হওয়ায় চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ১৩০ হেক্টর জমিতে বেগুন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও ইতোমধ্যে ১০০ হেক্টর জমিতে বেগুনের আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূল ও বেগুনের দাম ভালো থাকায় এ বছরও কৃষকরা বেগুন চাষে লাভবান হবেন বলে আমার বিশ্বাস।