মুরগির রোগ প্রতিরোধের সহজ উপায় হলো খামারে পালনকৃত মুরগিকে নিয়মিত ভ্যাকসিন প্রদান করা এবং সে লক্ষে মুরগির দেহে ভ্যাকসিন প্রয়োগের মাধ্যমে দীর্ঘস্থায়ী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলা। মুরগির দেহে রোগ প্রতিরোধের লক্ষে দু’ধরণের ভ্যাকসিন যথা – জীবন্ত ভ্যাকসিন (Live Vaccine) এবং নিস্ক্রিয় ভ্যাকসিন (Killed Vaccine) উৎপাদন করা হয়। বাংলাদেশে এল.আর.আই মহাখালী ,ঢাকায় সরকারীভাবে পোলট্রি ভ্যাকসিন সমূহের মধ্যে বি.সি.আর.ডি.ভি, আর.ডি.ভি,গামবোরো ভ্যাকসিন,মারেক’স ভ্যাকসিন,ফাউল কলেরা ভ্যাকসিন,ফাউল পক্স ভ্যাকসিন,পিজিওন পক্স ভ্যাকসিন.ডাক কলেরা ভ্যাকসিন ও ডাক প্লেগ ভ্যাকসিন। এছাড়াও দেশের বেশ কয়েকটি স্বনামধন্য ঔষধ প্রস্তুতকারক কোম্পানী বিশ্বস্ততার সহিত গুণগতমানের ভ্যাকসিন বাজারজাত করছেন। আবার বেশ কয়েকটি ঔষধ প্রস্তুতকারক কোম্পানী বিশেষ করে এফ.এন.এফ এবং ইনসেপ্টা দক্ষতার সহিত বেশ কিছু সংখ্যক পোলট্রি ভ্যাকসিন উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ করছেন।
পোলট্রি ভ্যাকসিন প্রদানের নিমিত্তে অত্যাবশ্যকীয় দ্রব্যাদি –
১। বড় মুখ বিশিষ্ট থার্মোফ্লাক্স – যাতে অতি সহজে ভ্যাকসিনের শিশি থার্মোফ্লাক্সে ঢুকানো ও থার্মোফ্লাক্স থেকে বের করা যায়,
২। পযর্প্ত পরিমান বরফ,
৩। স্ট্রেলাইজড সিরিঞ্জ ও ড্রপার,
৪। ডিস্টিল্ড ওয়াটার,
৫। ডিস্টিল্ড ওয়াটার মাপার জন্য মেঝারিং সিলিন্ডার
৬। ছোট তোয়ালে দু’টো ।
ভ্যাকসিন সংরক্ষণ :–
ভ্যাকসিন সাধারণত +২ থেকে +৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এবং ডাইল্যুয়েন্ট রুম তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হবে অথবা ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক কোম্পানীর নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে। পোলট্রি ভ্যাকসিন সর্বদা সূর্যালোক থেকে দূরে অন্ধকারযুক্ত স্থানে রাখতে হবে।
ভ্যাকসিন মিক্সিং পদ্ধতি :–
ডাইল্যুয়েন্ট (Diluent) ব্যবহার করার পূর্বে রাত্রীকালীন সময় রেফ্রিজারেটরের শীতল তাপমাত্রায় অর্থাৎ +২ থেকে +৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হবে (Store the diluent bottle/ bottles in the refrigerator overnight before use, to chill) ।প্রথমাবস্থায় খুব অল্প পরিমান ডাইল্যুয়েন্ট জীবাণুমুক্ত সিরিঞ্জে নিয়ে ভ্যাকসিনের শিশিতে ঢুকিয়ে খুব আস্তে আস্তে ভ্যাকসিনের শুকনা বড়িটিকে (Freeze dried pellet) গুলানোর পর সিরিঞ্জের মাধ্যমে ডাইল্যুয়েন্ট বোতলে ট্রান্সফার করতে হবে। একইভাবে ১ থেকে ২ বার ভ্যাকসিনের ভায়াল ডাইল্যুয়েন্ট দ্বারা ধৌত করে পূণরায় ডাইল্যুয়েন্ট বোতলে নিতে হবে(Rinse the vaccine vial 1 or 2 times with diluent in similar manner as reffered above) । ভ্যাকসিন গুলানোর সময় (During reconstitution of vaccine) ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ও ব্যবহারকারীর হাত সম্পূর্ণরূপে জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে। ভ্যাকসিন ডাইল্যুন্টে গুলানোর পর বরফে সংরক্ষণ করে অতি অল্প সময়ে ব্যবহার সুনিশ্চিত করতে হবে (Vaccine after reconstitution in diluent should be stored on ice & used immediately) ।
ভ্যাকসিন প্রয়োগ পদ্ধতি :–
বিভিন্ন পদ্ধতিতে মুরগিকে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়ে থাকে ( যেমন- স্প্রে পদ্ধতি, চোখে ড্রপ দেওয়া পদ্ধতি, নাসা রন্ধ্র ডিপিং পদ্ধতি, পানির মাধ্যমে খাওয়ানো পদ্ধতি ও ইনজেশনের মাধ্যমে প্রদান পদ্ধতি )। তবে তা’ নির্ভর করে মুরগির বয়স, ভ্যাকসিনের ধরণ এবং ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক কোম্পানীর নির্দেশনার উপর।
নিম্নে ৩ টি বহুল প্রচলিত ভ্যাকসিন প্রয়োগ পদ্ধতি আলোচনা করা হলো –
ক) চোখে ড্রপ দেওয়া পদ্ধতি :-
এ পদ্ধতিতে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করতে হলে ভ্যাকসিনের মাত্রানুযায়ী মুরগির বাচ্চা সমূহকে চিকগার্ড দ্বারা একত্রীকরণ পূর্বক ভ্যাকসিন মিক্সিং করতে হবে। এ উদ্দেশে ডাইল্যুয়েন্টে মিশানোকৃত ভ্যাকসিন প্রতিটি বাচ্চার এক চোখে এক ফোঁটা করে প্রয়োগ করতে হবে। যতদূর সম্ভব ডাইল্যুয়েন্টে মিশানো ভ্যাকসিন অতি অল্প সময়ের মধ্যে প্রয়োগ শেষ করা নিশ্চিত করতে হবে। তুলনামূলকভাবে কম মাত্রার ভ্যাকসিন ( ১০০ মাত্রা, ২০০ মাত্রা, ৫০০ মাত্রা ) নিদির্ষ্ট সময়ের পূর্বে শেষ করা যায়। পক্ষান্তরে বেশি মাত্রার ভ্যাকসিন ( ১০০০ মাত্রা , ২০০০ মাত্রা, ২৫০০ মাত্রা, ৫০০০ মাত্রা ) প্রয়োগের ক্ষেত্রে ভালো দক্ষতা না থাকলে নিদির্ষ্ট সময়ের মধ্যে ভ্যাকসিন প্রয়োগ শেষ করা যাবে না। তাই মুরগিকে বেশি মাত্রার ভ্যাকসিন প্রয়োগের ক্ষেত্রে বেশি সংখ্যক দক্ষতাসম্পন্ন ভ্যাকাসিন প্রয়োগকারী নিয়োগ করাত হবে।
ক ) চোখে ভ্যাকসিন প্রয়োগের কৌশল :–
প্রথমতঃ মুরগির বাচ্চাকে কৌশলে এক চোখের অবস্থান উপরের দিকে ঘুরিয়ে নিয়ে (Hold the chick with one eye turned up) স্থির করে নিতে হবে। পরে মিক্সিংকৃত ভ্যাকসিন ১৬ গজ ভোঁতা নিডিল (Blunt needle of 16 gauge) যুক্ত জীবাণুমুক্ত সিরিঞ্জ কিংবা ড্রপারের সাহায্যে এক ফোটা ভ্যাকসিন এক চোখে (Instill one drope in one eye) প্রয়োগ করতে হবে। অবশ্যই নিশ্চিত হওয়া দরকার যে, প্রয়োগকৃত ভ্যাকসিন চোখে সম্পূর্ণরূপে শোষিত হয়েছে কিনা( Ensure that the vaccine drope is completely absorbed in the eye ) । অর্থাৎ ভ্যাকসিন ড্রপ চোখে সম্পূর্ণরূপে শোষিত না হওয়া পযর্ন্ত বাচ্চা হাত থেকে ছেড়ে দেওয়া উচিৎ হবে না। কারণ ভ্যাকসিন ড্রপ চোখে শোষিত হওয়ার আগেই বাচ্চা হাত থেকে ছেড়ে দিলে মাথা ঝেড়ে ভ্যাকসিন ভ্যাকসিন চোখ থেকে ফেলে দিতে পারে।
খ ) ভ্যাকসিন পানিতে খাওয়ানো পদ্ধতি :–
ভ্যাকসিন পানির মাধ্যমে মুরগিকে খাওয়াতে হলে অতি গুণগতমানের ‘সর তোলা পাউডার দুধ (Skimmed milk powder)’ ব্যবহার করতে হবে। প্রতি ১০ লিটার বিশুদ্ধ পানিতে ৬০ গ্রাম ‘স্কিম্বড মিল্ক পাউডার’মিশিয়ে নিতে হবে। ‘সর তোলা/ননী বিহীন গুড়ো দুধ প্রথমাবস্থায় অল্প পরিসান পানিতে মিশিয়ে নিতে হবে যাতে পাউডার মিশ্রিত দুধের কোন রকম গুটি তৈরি না হয়। তারপর ঐ মিশ্রণ নির্ধারিত মাত্রার সমস্ত পানিতে মিশাতে হবে। ডাইল্যুয়েন্টে মিক্সিংকৃত ভ্যাকসিন দুধ মিশ্রিত অল্প অল্প পরিমাণ পানির সাথে মিশিয়ে পরে উক্ত মিশ্রণ সমস্ত পানির সাথে মিশিয়ে মুরগিকে খাওয়াতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যাতে ঝাঁকের সমস্ত মুরগি একই সঙ্গে আরাম–আয়েশর সহিত ভ্যাকসিন মিশ্রিত পানি খেতে পারে। প্রয়োজনে ভ্যাকসিন প্রয়োগের সময় পানির পাত্রের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে। ভ্যাকসিন মিশ্রিত পানি সরবরাহের পূর্বে এক থেকে দুই ঘন্টা খামারের মুরগিকে সাধারণ পানি পান করানো থেকে বিরত রাখতে হবে। যাতে ঝাঁকের সমস্ত মুরগি পিপাসীত থাকে। তবে পারিপার্শিক তাপমাত্রা কম বা বেশি হলে সাধারণ পানি সরবরাহের বিরতিকালীন সময় আরো কম বা বেশি করা যেতে পারে।
পানিতে ভ্যাকসিন প্রয়োগের ৪৮ ঘন্টা পূর্বে এবং ২৪ ঘন্টা পরে মুরগির শেডে জীবাণুনাশক স্প্রে ও খাবার পানিতে কোন অবস্থাতেই ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার করা যাবে না। পানির ।অবশ্যই শুধুমাত্র পরিস্কার পানি দ্বারা ধৌত করে তা রৌদ্রে ভালোভাবে শুকিয়ে নিতে হবে। তবে পানির পাত্র কোনভাবেই ডিসইনফেকট্যান্ট /জীবাণুনাশক দ্বারা ধৌত করা যাবে না। ভ্যাকসিন সর্বদাই দিনের ঠান্ডা আবহাওয়ায় প্রয়োগ করতে হবে। গরমের দিনে ভাকসিনে ব্যবহার উপযোগী পানি অবশ্যই পরিস্কার ও শীতল হতে হবে। পানি শীতল রাখার নিমিত্তে প্রয়োজনে বরফের টুকরা (Ice blocks) ব্যবহার করতে হবে।
মিক্সিং অনুপাত : —
মিক্সিংকৃত ভ্যাকসিন নিম্নলিখিত তালিকানুযায়ী খাবার পানির সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে অথবা ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক কোম্পানির নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে –
মুরগির বয়স( দিন/সপ্তাহ) ভ্যাকসিনের মাত্রা ও প্রয়োজনীয় পানির পরিমান ননী বিহিন পাউডার দুধের পরিমান ( ৬
গ্রাম/লিটার পানি )
১০০০ মাত্রা ১০০ মাত্রা
০১ – ০৬ দিন ১০ লিটার পানি ০১ লিটার পানি ৬০ গ্রাম
২১ দিন পর থেকে — ৪০ লিটার পানি ০৪ লিটার পানি ২৪০ গ্রাম
উল্লেখ্য যে,কোন কারণে যদি ননী বিহিন দুধ পাওয়া না যায় সে ক্ষেত্রে ১০০০ মুরগির জন্য ১ লিটার গাভীর দুধ ব্যবহার করা যাবে। তবে গাভীর দুধ ব্যবহার করার পূর্বে ইচ্ছে মতো তাপ প্রয়োগ করে গাভীর দুধকে ননী বিহিন করে নিতে হবে এবং পরে তা’ শীতল করে নিতে হবে।গরম দুধ কোন অবস্থাতেই ব্যবহার করা যাবে না।
পরামর্শ ও সতর্কতা : —
১। ভ্যাকসিন মিশ্রণের পূর্বে ডাইল্যুয়েন্ট শিশি ভালোভাবে পরীক্ষা করে নিতে হবে। বিশেষ করে ডাইল্যুয়েন্টের রং,টার্বিডিটি,ও অন্য যে কোন ধরণের পরিবর্তন।
২। মুরগিকে ভ্যাকসিন দেওয়ার সমস্ত পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণ করার পর পরই ভ্যাকসিনের বড়ি ডাইল্যুয়েন্টে মিক্সার করতে হবে।
৩। কোন অবস্থাতেই জীবাণুযুক্ত যন্ত্রপাতি ভ্যাকসিন দেয়ার সময় ব্যবহার করা যাবে না। ভ্যাকসিন দেয়ার সমস্ত যন্ত্রপাতি পূর্বেই ফুঁটন্ত পানিতে ফুটিয়ে জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে। ভ্যাকসিন দেয়ার যন্ত্রপাতি সমূহ কোন প্রকার ক্যামিকেল পদার্থ দ্বারা জীবাণুমুক্ত করা উচিৎ হবে না।
৪। মুরগিকে ভ্যাকসিন চলাকালীন সময়ে সমস্ত মিক্সারকৃত ভ্যাকসিন বরফ যুক্ত পাত্রে (Ice bath) রাখতে হবে।
৫। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই ডাইল্যুয়েন্টে মিক্সারকৃত ভ্যাকসিন ব্যবহার শেষ করতে হবে।
৬। ভ্যাকসিন মুরগিকে দেয়ার পর ডাইল্যুয়েন্ট মিশ্রিত ভ্যাকসিন বেশি হলে তা পুড়িয়ে ফেলতে হবে এবং সেই সাথে অন্যান্য পরত্যিাক্ত দ্রব্যাদি পুড়ে ফেলা কংিবা খামার থেকে দূরে মাটিতে গর্ত করে পুঁতে রাখতে হবে।
৭। শুধুমাত্র সুস্থ মুরগিযপাখিকে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করতে হবে এবং সেই সাথে ভ্যাকসিন প্রয়োগকৃত মুরগিযপাখিকে অবশ্যআ আরামদায়ক পরিবেশে রাখতে হবে । বিশেষ করে খামারের তাপমাত্রা, খাদ্য,পানি ও উপযুক্ত বায়ু প্রবাহের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৮। ফ্লোকের কোন মুরগি ক্লিনিক্যালি অসুস্থ বা দূর্বল থাকলে অথবা কোন প্রকার ধকলে আক্রান্ত হলে কোনভাবেই সে ফ্লোকে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা উচিৎ হবে না।
৯। ভ্যাকসিন যদি পানিতে খাওয়ানোর মাধ্যমে প্রয়োগ করতে হয় তবে সেক্ষেত্রে ভ্যাকসিন খাওয়া শেষ হলে কমপক্ষে ২৪ ঘন্টা পরে মুরগিকে চিকিৎসার নিমিত্তে এন্টিবায়োটিক ব্যকহার করা যেতে পারে। তবে পানি বিশুদ্ধকরণের জন্য ট্যাবলেট ও ব্লিচিং পাউডার ৪৮ ঘন্টা পরে ব্যবহার করা যেতে পারে।
১০। ভ্যাকসিন প্রদানের সময় মুরগির বাচ্চার ভ্যাকসিন জনিত ধকল বা পীড়ণ কমানোর জন্য ব্রুডিং তাপমাত্রা বাচ্চার বয়স অনুযায়ী স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে প্রায় ৫ ডিগ্রী ফারেনহাইট ( ২.৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস ) বৃদ্ধি করতে হবে এবং উক্ত তাপমাত্রা ভ্যাকসিন দেয়ার পর বাচ্চাগুলো স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে না আসা অব্দি চলতে থাকবে (In time of vaccination reaction , increase the brooder temperature approximately 5 degree F above normal recommendation for age involved until birds are back to normal health) ।
ভ্যাকসিন প্রদানের পূর্বে যে বিষয়ে ভালো ধারণা থাকা অতীব জরুরী –
১। বাজারে অনেক কোম্পনীর আমদানীকৃত বিভিন্ন রোগের ভ্যাকসিন পাওয়া যায় । তবে বর্তমানে দেশেই বেশ কয়েকটি স্বনামধন্য ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানী দক্ষতার সাথে পোলট্রি ভ্যাকসিন বাজারজাত করছে। এর মধ্য থেকে খামারিকে জেনে নেয়া দরকার য়ে, কোন কোন কোম্পানীর ভ্যাকসিন ভালো কাজ করে।
২। ভ্যাকসিন ক্রয়ের পূর্বে অবশ্যই খামারিকে জেনে নিতে হবে যে ,যেখানে ভ্যাকসিন সংরক্ষণ করা হয় সেখানে রেফ্রিজারেটর সঠিকভাবে কাজ করে কিনা। কারণ রেফ্রিজারেটর কাজ না করলে ভ্যাকসিনের কার্যকারীতা নষ্ট হবে। নিরবচ্ছিন্ন বদ্যিুৎ সরবরাহ থাকে কিনা তা একজন সচেতন খামারিকে অবশ্যই সে বিষয়ে মনোযোগ দিতে হবে।
৩। ভ্যাকসিন উৎপাদনের তারিখ ও ভ্যাকসিনের মেয়াদ উত্তির্নের তারিখ ভালোভাবে দেখে নিতে হবে।
৪। ভ্যাকসিন পরিবহন কালে খামারিকে অবশ্যই বড় মুখ বিশিষ্ট ফ্লাস্কে বরফ সহকারে ভ্যাকসিন ও ডাইল্যুয়েন্ট বোতল সংগ্রহ করতে হবে। ভ্যাকসিন পরিবহন কালে খামারি কোনভাবেই ভ্যাকসিন ও ডাইল্যুয়েন্ট বোতল হাতে কিংবা পকেটে করে পরবিহন করতে পারবে না। কারণ হাতে বা পকেটে ভ্যাকসিন ও ডাইল্যুয়েন্ট বোতল পরিবহনকালে দেহের তাপমাত্রা শোষণ করে ভ্যাকসিন তার কার্যকারীতা হারিয়ে ফেলবে।
৫। ডাইল্যুয়েন্টে মিশানো ভ্যাকসিন কোন অবস্থাতেই এক স্থান থেকে অন্য স্থানে কিংবা এক খামার থেকে অন্য খামারে স্থানান্তর করা যাবে না।
৬। ভ্যাকসিন খুব সকাল বেলায় কিংবা সন্ধার পর সূর্যের আলো ও তাপমাত্রা কমে গেলে শীতল আবহাওয়ায় মুরগিকে প্রয়োগ করতে হবে। ভ্যাকসিন প্রদানের সময় খামারে এমোনিয়া গ্যাসের উপস্থিতি কোনভাবেই কাম্য নয়। এক কথায় বলতে হবে ,ভ্যাকসিন প্রদানের সময় খামারে বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা রাখতে হবে। খামারে এমোনিয়া গ্যাসের প্রার্দূভাব থাকলে ভ্যাকসিনের কার্যকারীতা নষ্ট হবে।
৭। ডিমপাড়া মুরগির ক্ষেত্রে ,মুরগিকে আগে কৃমি মুক্ত করে নিতে হবে। কৃমি মুক্ত করার কমপক্ষে এক সপ্তাহ পরে মুরগিকে ভ্যাকসিন করাতে হবে। মুরগি কৃমি দ্বারা আক্রান্ত থাকলে ভ্যাকসিন প্রয়োগে তেমন কোন কাজ হবে না।
বাণিজ্যিক মুরগি বা ব্রিডার মুরগিকে ভ্যাকসিন প্রয়োগের পূর্বে রাণীক্ষেত রোগের টাইটার লেভেল পরীক্ষা করে ভ্যাকসিন প্রদান করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে। অন্যথায় হিতে বিপরীত হতে পারে। তাই ভ্যাকসিন প্রয়োগে খামারিকে যথেষ্ঠ সচেতন হতে হবে।
তথ্যসূত্র: প্রাণিচিকিৎসা.কম