রংপুরে জিংক সমৃদ্ধ ব্রি ধান৭৪’র ওপর কৃষক মাঠদিবস

344

সেখ জিয়াউর রহমান, রংপুর থেকে: আরডিআরএস বাংলাদেশ এবং ডিএই যৌথ ব্যবস্থাপনায় হারভেস্ট প্লাস বাংলাদেশ প্রকল্পের ব্রি ধান৭৪ কর্তনের ওপর এক কৃষক মাঠদিবস ২১ মে রংপুরের মিঠাপুকুরস্থ ঘোলপুকুর গ্রামে অনুষ্ঠিত হয়।

চেংমারী ইউনিয়ন ফেডারেশন চেয়ারম্যান মোছা. পেয়ারী বেগমের সভাপতিত্বে এ উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) উপপরিচালক স. ম. আশরাফ আলী ।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা কৃষি অফিসার মো. খোরশেদ আলম, উপসহকারি কৃষি অফিসার মো. তাহমিদুর রহমান, কৃষ্ণ মোহন সরকার, হারভেস্টপপ্লাস বাংলাদেশ’র কৃষি গবেষণা ও উন্নয়ন অফিসার মো. রুহুল আমিন মন্ডলএবং বিশিষ্ট সমাজসেবক ডা. মো. মমতাজ হোসেন।

প্রধান অতিথি তাঁর বক্তৃতায় বলেন, ব্রি ধান৭৪ এ প্রচুর পরিমাণে জিংক ও প্রোটিন বিদ্যমান (প্রতি কেজি চালে ২৪.২ মিলিগ্রাম জিংক ও শতকরা ৮.৩ ভাগ প্রোটিন থাকে)। জিংক মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, বুদ্ধিমত্তা বিকাশসহ নানাবিধ শরীরবৃত্ত্বীয় প্রক্রিয়ার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। প্রতিদিন আমাদের শরীরে ১৬ গ্রাম জিংকের প্রয়োজন হয়। আমাদের দেশের শতকরা ৫৭ ভাগের বেশি মানুষ বিশেষ করে নারীরা ও শিশুদের ক্ষেত্রে শতকরা ৪০ ভাগ জিংকের ঘাটতি রয়েছে। এ জাতের ধানের ভাত নিয়মিত খেলে আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর দরিদ্র মানুষের দৈনিক জিংক চাহিদার কমপক্ষে শতকরা ৬০ ভাগ পূরণ করা সম্ভব হবে। জিংকের অভাবে শিশুদের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশ ব্যাহত হয়। বিভিন্ন সংক্রামক ব্যাধি যেমন ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, ম্যালেরিয়াতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। এ ধানের জাত দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জিংকের অভাবজনিত অপুষ্টি লাঘবে টেকসই ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হবে।

মাঠদিবসে স্বাগত বক্তব্যে আরডিআরএস বাংলাদেশ’র প্রকল্প সমন্বয়কারী মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন, আরডিআরএস বাংলাদেশ ২০১৩ সাল থেকে হারভেস্টপ্লাস বাংলাদেশ এর সহযোগিতায় রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলায় বোরো এবং আমন মৌসুমে জিংক সমৃদ্ধ ধানের প্রদর্শনী প্লট বাস্তবায়ন করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি বছর বোরো মৌসুমে রংপুর বিভাগের চার জেলায় (রংপুর, দিনাজপুর, নীলফামারী ও পঞ্চগড়) ৫৫০ জন কৃষকের মোট ৫৫০ বিঘা জমিতে (রংপুরে ২০০ বিঘা) নতুন জাতের ব্রি ধান৭৪ এর প্রদর্শনী প্লট স্থাপন করেছে। ব্রি ধান৭৪ একটি উচ্চ ফলনশীল জিংকসমৃদ্ধ ধানের জাত, যার হেক্টর প্রতি গড় ফলন প্রায় ৭.১ টন (বিঘায় ২২-২৪ মণ), জীবনকাল ১৪৭ দিন।

ঘোলপুকুর গ্রামের কৃষক দানেশ মিয়া ৫ ফেব্রুয়ারি ৩০ শতক জমিতে ব্রি ধান৭৪ রোপণ করেন। ২১ মে ধান কর্তন করা হয়। তিনি ফলন পেয়েছেন ৬.২৩ টন/হে.।

অনুষ্ঠানে আরডিআরএস বাংলাদেশ’র কৃষি অফিসার কৃষিবিদ শামীম আহমেদ, অনুপ কুমার ঘোষ, ঊর্ধ্বতন কৃষি কর্মকর্তা মো. সামছুল আরেফিন, প্রোজেক্ট অফিসারসহ (গ্রোয়িং টুগেদার প্রকল্প) ৩ শতাধিক কৃষাণ-কৃষাণী উপস্থিত ছিলেন।