রাঙ্গাবালীতে পাঁচ হাজার হেক্টর জমি অনাবাদি

78

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে চলতি আমন মৌসুমে প্রায় পাঁচ হাজার হেক্টর জমি অনাবাদি রয়েছে। জলাবদ্ধতা ও বিলের পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থায় কর্তৃপক্ষের অনীহার কারণে বিপুল পরিমাণ চাষযোগ্য জমি অনাবাদি থাকছে বলে অভিযোগ স্থানীয় কৃষকদের।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, মৌসুমের শুরুতে বীজতলায় (চারার জন্য) যখন ধান রোপণ করি, তখন টানা ১০ দিনের বৃষ্টিতে আমাদের নিচু জমির বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। পরে ফের ক্ষেতে ধান রোপণ করলেও অনেকে কিছু বীজতলা করতে পারছে, আবার অনেকেই বীজতলা করতে পারেনি। এ কারণেই এলাকায় আমন বীজের সংকট দেখা দিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা এলাকায় বেশি দাম দিয়েও আমন বীজ সংগ্রহ করতে পারেননি। এ অবস্থায় চলতি মৌসুমে অনেক কৃষকের জমি অনাবাদি রয়ে গেছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালে উপজেলায় আমন চাষের লক্ষ্যমাত্র ছিল ৩৪ হাজার ৫৩০ হেক্টর জমিতে। চলতি ২০২৩ মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ হাজার ১৬০ হেক্টর। এতে দেখা যায় চার হাজার ৩৭০ হেক্টর চাষযোগ্য জমি অনাবাদি থাকছে। কিন্তু জলাবদ্ধতা ও বীজ সংকটের কারণে এ হিসাবের বাইরেও প্রায় ৮০০ হেক্টর জমি অনাবাদি রয়ে গেছে। সে হিসাবে দেখা যায়, এ বছর উপজেলার প্রায় পাঁচ হাজার ১৭০ হেক্টর জমি অনাবাদি থাকছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ বছর উপজেলায় এক হাজার ৯২০ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি করা হয়েছিল। তবে অতিবৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারণে ৩০০ হেক্টর জমির বীজতলা নষ্ট হয়ে যায়।

মৌডুবী ইউনিয়নের চাষি মো. মাহমুদ ভূইয়া জানান, ‘এ বছর মৌসুমের শুরুতে ছয় একর জমিতে আমন বীজতলা তৈরি করি। কিন্তু অতিবৃষ্টির কারণে ছয় একর জমির জন্য তৈরি সমস্ত বীজ নষ্ট হয়ে যায়। পরে আবার বীজতলা করতে হয়েছে।’

রাঙ্গাবালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, ‘অতিবৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারণে কারণে চারা বিনষ্ট হওয়ায় উপজেলার মৌডুবী ও চালিতাবুনিয়ায় চাষিরা জমি আবাদ করতে পারেননি। এছাড়া আগাম তরমুজ চাষের উদ্দেশ্যে রাঙ্গাবালীতে প্রায় ৮০০ হেক্টর জমি অনাবাদি রয়েছে।’

মৌডুবী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহমুদ রাসেল বলেন, ‘আমি জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছি। যেসব স্থানে জলাবদ্ধতা রয়েছে, সেখানে বেশ কয়েকটি কালভার্ট নিমাণ করা হয়েছে।

কিন্তু নদীতীরবর্তী বেড়িবাঁধের কারণে কিছু জমির পানি নিষ্কাশন সম্ভব হয়নি। তবে বেড়িবাঁধে সুইস নির্মাণ করে জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য চেষ্টা করছি।’

তিনি আরও বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এমপি মহোদয়ের ডিও লেটারসহ জমা দেওয়া হয়েছে এবং প্রাথমিক সমীক্ষার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পদক্ষেপ নিয়েছেন।