জ্বালানির তেলের দামে দিশেহারা কৃষক

57

দেশে জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে কৃষকের জীবনে। গণপরিবহন, কৃষি ও নিত্যপণ্যের খরচে এখন দিশেহারা কৃষক। কৃষকের জীবনে বাড়তে থাকা ভোগান্তিতে হুমকিতে পড়তে পারে কৃষিক্ষেত্র।

কথা হয় মাদারীপুর সদর উপজেলা কৃষক তোবারেক আকনের সঙ্গে। তিনি আক্ষেপ নিয়ে বলেন, আগে ধান, পাট, মুসুরি ডাল, সরিষা চাষ করে ভালো লাভ হতো। কারণ তখন জ্বালানি তেলের দাম কম ছিল পরিবহন ও সেচে খরচ কম হত। এখন সব কিছুর অনেক দাম বৃদ্ধি পেয়েছে এজন্য খরচ বেশি হয় তাই লাভ হয় না। আগে প্রতি বিঘা জমিতে খরচ হত ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা, এখন খরচ ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। তাহলে কিভাবে আমরা ফসল রোপণ করব। এরকম জ্বালানি তেলের দাম থাকলে পরবর্তীতে আমরা আর কৃষিকাজ করতে পারব না। তাই আমাদের সরকারের কাছে দাবি সরকার যেন একটু জ্বালানির তেলের দাম কমিয়ে দেয়।

কৃষক মোশারেফ আকন বলেন, এবার পাটে প্রতি মণে খরচ হয়েছে ১ হাজার টাকার ওপরে। পাট বিক্রি করা হইছে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা আর অতিরিক্ত ভালো পাটের দাম দিয়েছে ১২০০ টাকা। এবার পাট যা চাষ করেছি তা উৎপাদনের চাইতে বিক্রির দাম কম পাওয়ায় লোকসান গুনতে হয়েছে। এভাবে যদি পাট উৎপাদন করে ন্যায্য দাম না পাওয়া যায় তাহলে আগামীতে আর পাট চাষ করে কি হবে। মূল্য কথা আগে জ্বালানি তেলের দাম কম ছিল আট এখন জ্বালানির তেলের দাম বেশি থাকায় এরকম হয়েছে। তাই সরকারের কাছে দাবি জ্বালানি তেলের দামটি কমিয়ে দিলে সঠিক দাম পাব।

শুধু তোবারেক আকন আর মোশারফ আকন নয় আরও অনেক কৃষক আক্ষেপ করে বলেন, যদি আগামীতে জ্বালানি তেলের দাম না কমে তাহলে ফসল চাষে খরচ আরও বাড়বে।

মাদারীপুর ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রভাব সব খাতে পড়েছে। এখানে আমার একক কোনো মন্তব্য নেই। যদি দাম বৃদ্ধি নিয়ে কেউ অরাজকতা করে, আবার সরকারের বেঁধে দেওয়া দামেও ভোক্তার চাহিদা মেটানো না হয় আমরা তখন অ্যাকশনে যাব।

মাদারীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. সন্তোষ চন্দ্র চন্দ বলেন, ‘কৃষি উৎপাদন হয়তো কমেনি। কিন্তু এর নেতিবাচক প্রভাব সব সেক্টরে পড়েছে। সারের মূল্য বৃদ্ধিতে খুব বেশি সমস্যা হতো না। এখন জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির ফলে বিদ্যুতের দাম বেড়ে গেছে, পরিবহন ভাড়া বেড়ে গেছে, যে কারণে সব কিছুর দাম বেড়ে গেছে। তাই কৃষিখাতেও বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে।’