ইলিয়াস, রাজশাহী থেকে: আম ও পেয়ারায় সফলতার পর এবার লিচুতে আসছে ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতি। রাজশাহীতে এখনও কৃষকরা এ পদ্ধতিতে লিচু চাষ শুরু করেনি। তবে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করার আগে নিজে পরীক্ষামূলকভাবে এই প্রযুক্তির ব্যবহার করেছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা। এতে বেশ সফলতাও পেয়েছেন তিনি।
রাজশাহীর পবা উপজেলার মতিয়াবিলে এ বছর নিজের খামারের একটি লিচু গাছে ব্যাগিং পদ্ধতির ব্যবহার করেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক মঞ্জুরুল হক। এই প্রযুক্তির ব্যবহারে তার লিচুর উৎপাদন অনেক বেড়েছে। পাশাপাশি লিচু আকারে বড় হয়েছে, রঙও হয়েছে টকটকে লাল।
কৃষি কর্মকর্তা মঞ্জুরুল হক জানান, প্রতিটি ব্যাগ সাড়ে তিন টাকা দরে কিনে তিনি ব্যবহার করেন। একটি ব্যাগে জায়গা হয়েছে ২৫ থেকে ৩০টি লিচুর। লিচুর দুই-তিনটি থোকাও ব্যাগে ভরা গেছে। প্রায় ১৫ বছর বয়সের বোম্বাই জাতের এই গাছটি থেকে তিনি গত বছর চার হাজার পিস লিচু পেয়েছিলেন। এবার প্রায় ৬ হাজার লিচু আছে তার গাছে।
তিনি জানান, ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতি ব্যবহারে ঝড়েও তার গাছ থেকে কোনো লিচু ঝরেনি। চামচিকা, বাদুড় ও কাঠবিড়ালিতেও কোনো লিচু নষ্ট করতে পারেনি। ফলে বেড়েছে উৎপাদন। আর ব্যাগের ভেতর সুরক্ষিত অবস্থায় থাকায় বেড়েছে লিচুর আকার, রঙ হয়েছে টকটকে লাল। এসব লিচু শতভাগ রাসায়নিকমুক্ত।
মঞ্জুরুল হক বলেন, চাষিদের মধ্যে এই প্রযুক্তি সম্প্রসারণের আগে আমি নিজে ব্যবহার করে দেখলাম। তাতে ভালো ফলাফলও পেলাম। ফ্রুট ব্যাগিং করা লিচু স্বাভাবিক সময়ের চেয়েও ১০ থেকে ১৫ দিন বেশি গাছে রাখা যায়। এতে ভালো দামও পাওয়া যায়। এ পদ্ধতিটি চাষিদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পারলে তারা লাভবান হতে পারবেন।”
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক আবদুল হান্নান তার লিচুগাছ পরিদর্শনের গিয়ে বলেন, ‘‘মঞ্জুরুল হক একটি গাছেই ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতি ব্যবহার করে সফলতা পেয়েছেন। তার এই সফলতা কাজে লাগাবে কৃষি বিভাগ।’’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক দেব দুলাল ঢালি বলেন, ‘‘পাবনার ঈশ্বরদীতে কিছু কিছু লিচু গাছে ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতির ব্যবহার হয়। তবে রাজশাহীর চাষিরা এখনও এই প্রযুক্তি ব্যবহার করেন না। রাজশাহীতে পরীক্ষামূলক ব্যবহারে ভালো ফল পাওয়ায় আগামী বছর থেকে এই প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য চাষিদের উদ্বুদ্ধ করা হবে।’’
ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/এম