রাজশাহীর দুর্গাপুরে সয়েল হেল্থ ভার্মিকম্পোস্ট ফার্ম’র উদ্বোধন

353

dur1

তুষার কুমার সাহা, রাজশাহী প্রতিনিধি: রাজশাহী ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের ঋণ সহায়তা কর্মসুচির আওতায় গত ১০ এপ্রিল রাজশাহীর দুর্গাপুরস্থ বহরমপুর আইপিএম ক্লাব প্রাঙ্গণে সয়েল হেল্থ ভার্মি কম্পোস্ট ফার্মের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন রাজশাহী বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও সাবেক এমপি ড. আকরাম হোসেন চৌধুরী । ক্লাবের সভাপতি মাইনুল ইসলাম’র সভাপতিত্বে এ উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) উপপরিচালক কৃষিবিদ দেব দুলাল ঢালী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন সাদাত, দুর্গাপুর পৌরসভার মেয়র তোফাজ্জেল হোসেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ড. বিমল কুমার প্রামানিক ও রাজশাহী রিজিওন্যাল ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের প্রেসিডেন্ট আলী হায়দার মর্তুজা।

উদ্বোধনী বক্তব্যে প্রধান অতিথি বলেন, ভার্মি বা কেঁচো কম্পোস্ট সার হচ্ছে একটি উৎকৃষ্ট মানের একের ভেতরে তিন মাত্রার জৈব সার; যা মাটির উর্বরা শক্তি, পানি ধারণ ক্ষমতা ও ফসল উৎপাদন বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে। তিনি পানবরজ ও পান উৎপাদন খ্যাত দুর্গাপুর উপজেলার প্রত্যেক চাষিদের ঘরে ঘরে ভার্মিকম্পোস্ট কারখানা গড়ে তুলে এ সার পানবরজসহ অন্যান্য ফসলে ব্যবহারে কৃষকভাইদের আহবান জানান।। সেইসাথে ৪% সুদে ঋণ সহায়তাদানে এগিয়ে আসার জন্য রাজশাহী ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের প্রধানকে ধন্যবাদ জানান। বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, উপজেলায় প্রায় ৪৭০ হেক্টর জমিতে পানের বরজ রয়েছে। আমরা প্রতি পানচাষিকে ভার্মি কম্পোস্ট ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকি। কৃষি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক এলাকায় প্রায় ১০০ জন কৃষককে এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এলাকায় আরো ১০টি ভার্মি কম্পোস্ট গড়ে উঠেছে, যেখান থেকে প্রতি মাসে ১৫-২০ মন সার ফসলের জমিতে ব্যবহার হচ্ছে। স্বল্প সুদে সর্বচ্চ ১ লাখ টাকা ঋণ সহায়তা দিয়ে সহযোগিতার জন্য তিনি ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে কৃতজ্ঞতা জানান। সভাপতি বলেন, প্রায় ২ কাঠা জমির ওপর স্থাপিত এ ফার্মে লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে ২৫০ টি বড় আকারে চাড়ি বসানো হয়েছে, যা থেকে প্রতি মাসে ৫ হাজার কেজি ভার্মিকম্পোস্ট পাওয়া যাবে। এটি একটি লাভজনক সার, যা গড়ে প্রতি কেজি ১৫/- টাকা হিসেবে বিক্রি হলে ৭৫ হাজার টাকা উপার্জন করা সম্ভব। তিনি আরো বলেন, এটি শুধু আর্থিকভাবে লাভজনক নয়, সার্বিকভাবে ফলপ্রসু।

কৃষকদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন এলাকার আদর্শ পানচাষি মোহাম্মদ আলী। তিনি বলেন, এলাকায় ব্যাপক পানবরজে পান চাষ হয়ে থাকে। ভালো ফলনের আশায় ও পানের পচন রোধে পচা গোবর বা আর্বজনা সার বেশি ব্যবহার করেও কোনো লাভ হয় নাই। কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে পচা গোবরের পরিবর্তে ভার্মিকম্পোস্ট ব্যবহার করে এখন আমরা পানের ফলন ও পানের পচন রোধে বেশ উপকার পাচ্ছি। এ ধরনের উদ্যোগের জন্য তিনি কৃষি বিভাগ ও আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান। অনুষ্ঠানে ক্লাবের সদস্যসহ শতাধিক পানচাষি উপস্থিত ছিলেন।