বাংলাদেশের তেলাপিয়া মাছে কোনো প্রকার ক্যান্সার বা ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্যের খোঁজ মেলেনি জানিয়ে এই মাছ খাওয়া শতভাগ নিরাপদ বলে জানিয়েছে সরকার। ফেইসবুক, ব্লগসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে তেলাপিয়া মাছ নিয়ে ‘অবৈজ্ঞানিক ও ভিত্তিহীন’ প্রচার নজরে আসার প্রেক্ষাপটে বুধবার মৎস্য অধিদপ্তরে ‘তেলাপিয়া মাছের উৎপাদন ও জনস্বাস্থ্য’ শীর্ষক এক সেমিনারে এই তথ্য জানানো হয়। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশের তেলাপিয়া মাছে কোনো প্রকার ক্যান্সার বা স্বাস্থ্য ঝুঁকিপূর্ণ বিষাক্ত দ্রব্য নেই এবং এই মাছ খাওয়া শতভাগ নিরাপদ।” যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশের তেলাপিয়া মাছের স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়টি বাংলাদেশেও প্রচার হওয়ায় জনমনে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে, যা ‘যুক্তিহীন’ মনে করছে মন্ত্রণালয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তেলাপিয়া মাছ নিয়ে নেতিবাচক খবর প্রকাশের পর মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার ৫০টি তেলাপিয়া মাছের নমুনা সংগ্রহ করে গবেষণাগারে পরীক্ষা করে কোনোটিতেই ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য খুঁজে পায়নি। আমেরিকাসহ চীনের তেলাপিয়া মাছে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী দ্রব্য পাওয়া গেলেও বাংলাদেশের তেলাপিয়া সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং ভয়ের কোনো কারণ নেই। বিশ্বে চাষযোগ্য মাছের মধ্যে তেলাপিয়ার অবস্থান দ্বিতীয়, কার্পজাতীয় মাছের পরেই এর স্থান। বিশ্বে তেলাপিয়া মাছ উৎপাদনকারী দেশের মধ্যে বাংলাদেশ সপ্তম। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বিশ্বে ৪ দশমিক ৬৭ মিলিয়ন টন তেলাপিয়া উৎপাদন হয়।
২০০৫ সালে বাংলাদেশে ২০ হাজার টন তেলাপিয়া উৎপাদন হলেও ২০১৫ সালে এসে তা দাঁড়ায় ৩ দশমিক ৪৮ লাখ টনে। বাংলাদেশের মোট মৎস্য উৎপাদনের ১০ শতাংশ তেলাপিয়া। চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে দেশে ৫০০টি তেলাপিয়া মাছের হ্যাচারি গড়ে উঠেছে। এসব হ্যাচারি থেকে বছরে প্রায় ৬০০ কোটি পোনা উৎপাদিত হয়। মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট ১৯৮৬ সালে প্রথম তেলাপিয়া নিয়ে গবেষণা শুরু করে এবং ২০০৫ সালে মালয়েশিয়া থেকে গিফট নামের তেলাপিয়া মাছ আমদানি করে এর উন্নয়ন করে দেশে ছড়িয়ে দেয়।
মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক ইয়াহিয়ার সভাপতিত্বে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মাকসুদুল হাসান খান, মৎস্য অধিদফতরের মহাপরিচালক সৈয়দ আরিফ আজাদ সেমিনারে বক্তব্য দেন। তেলাপিয়া-বিশেষজ্ঞ প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এ এইচ এম কোহিনুর সেমিনারে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
ফার্মসএন্ডফার্মার/০২মে২০