শিল্পের প্রবৃদ্ধির সাথে বাড়াতে হবে ভোক্তার সংখ্যা, অর্জন করতে হবে শতভাগ আস্থা:মসিউর রহমান

333

DSCN5803

অনুষ্ঠানের শুরুতে পোল্ট্রি শিল্পের রোডম্যাপ-২০২৫ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিলের (বিপিআইসিসি) সভাপতি মসিউর রহমান। তাকে সহযোগিতা করেন বিপিআইসিসি’র মিডিয়া উপদেষ্টা মো. সাজ্জাদ হোসেন।

উপস্থাপনায় বলা হয়- ষাটের দশকে ব্যক্তি উদ্যোগে হাঁটিহাঁটি পা-পা করে শুরু হওয়া পোল্ট্রি শিল্পে ২০১৬ সাল পর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ হয়েছে। সরকারের সহযোগিতা পেলে ২০২১ সাল নাগাদ এ বিনিয়োগের পরিমাণ দ্বিগুন হবে। একই ধারাবাহিকতায় বাড়বে পোল্ট্রি’র প্রতিটি উপখাতের প্রবৃদ্ধি।

২০২১ সালে ডিমের প্রত্যাশিত বার্ষিক উৎপাদন হবে প্রায় ১৪৮০ কোটি, মুরগির মাংসের উৎপাদন ১২.৫ লাখ মেট্রিক টন, একদিন বয়সী বাচ্চার উৎপাদন ৯৮ কোটি এবং পোল্ট্রি ফিডের উৎপাদন হবে প্রায় ৬০ লাখ মেট্রিক টন। এ সময়কালে ডিমের মাথাপিছু বার্ষিক কনজাম্পশন ৫১টি থেকে বেড়ে ৯০টি এবং মুরগির মাংসের মাথাপিছু বার্ষিক কনজাম্পশন ৪.৫ কেজি থেকে বেড়ে ৭.৫ কেজিতে উন্নীত করা সম্ভব হবে বলে মনে করে বিপিআইসিসি।

২০২৫ সালের রোডম্যাপে যে লক্ষ্যমাত্রাগুলো নির্ধারণ করা হয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে:
১. নিরাপদ খাদ্য ও স্বাস্থ্যসম্মত পোল্ট্রি পণ্য উৎপাদনে আন্তর্জাতিক মান অর্জন করা।
২.দেশের সবচেয়ে বৃহৎ কৃষিভিত্তিক শিল্প হিসেবে পোল্ট্রি শিল্পকে প্রতিষ্ঠিত করা এবং এ খাতে নির্ভরশীল মানুষের সংখ্যা ১ কোটিতে উন্নীত করা।
৩. সবচেয়ে সাশ্রয়ী মূল্যের প্রাণিজ আমিষের প্রধানতম যোগানদাতা হিসেবে নিজেদের আত্ম-প্রকাশ ঘটানো
৪. জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা রাখা এবং জাতীয় পুষ্টি সূচকের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখা।
৫. রপ্তানিমুখি শিল্প স্থাপন করা। যেখানে রপ্তানির বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা অন্তত: ১২ থেকে ১৬ হাজার কোটি টাকা।
৬. জাতীয়ভাবে নিউট্রিশন সেনসিটিভ ইকনমিক গ্রোথ অর্জনে সহায়তা করা; এবং
৭. জাতীয় অর্থনীতিতে (জিডিপি) প্রায় ৫ শতাংশ অবদান রাখা।

মসিউর রহমান বলেন, দেশের মানুষের জন্য সবচেয়ে সাশ্রয়ী মূল্যে এবং সবচেয়ে নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত ডিম ও মুরগির মাংস উৎপাদন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করছে বিপিআইসিসি।

তিনি বলেন, সকলের যৌথ প্রচেষ্টায় সেক্টরটি বড় হচ্ছে। তবে লাগসই উন্নয়নের স্বার্থে সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।

মসিউর জানান, পোল্ট্রি খাতের লক্ষ্য অর্জনে চলতি বছর বেশ কিছু কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-তৃণমূল খামারিদের জন্য Excellence Award। সারাদেশের ৮ জেলার মোট ২৪ জন খামারিকে তাদের সফলতার জন্য পুরষ্কৃত করা হবে।

এছাড়া ডিম ও মুরগির মাংসের রেসিপি নিয়ে প্রতিযোগিতা; স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য পোল্ট্রি বিষয়ক গল্প উৎসব; খামারি ও উদ্যোক্তা সম্মেলন; ঢাকায় ২টি এবং ঢাকার বাইরে ৬টি মিডিয়া কর্মশালা এবং পোল্ট্রি ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। এছাড়াও নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে পোল্ট্রি মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড-২০১৭।

পোল্ট্রি বিষয়ে গবেষণার জন্য এ বছর বিশেষ বরাদ্দ রাখা হয়েছে বলে জানান মসিউর রহমান।

সম্প্রতি বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিলের (বিপিআইসিসি) ইফতার মাহফিলে সংগঠনের সভাপতি মসিউর রহমান পোলট্রি খাতের সম্ভাবনা বিষয়ে এক বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

ওই অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন-ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি ফজলে রহিম খান শাহরিয়ার, ওয়ার্ল্ড’স পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন-বাংলাদেশ শাখার সভাপতি শামসুল আরেফিন খালেদ ও সাধারণ সম্পাদক মো. মাহাবুব হাসান; এনিমেল হেলথ কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি এ,কে,এম আলমগীর এবং সাধারণ সম্পাদক ডা. কামরুজ্জামান, বাফিটার সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দিন, ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মো. আহসানুজ্জামান; এসিআই -এর নির্বাহী পরিচালক ড. এফ এইচ আনসারি, রেনেটা’র এনিমেল হেলথ ডিভিশনের প্রধান সিরাজুল হক।

এছাড়াও প্যারাগন গ্রুপ, নারিশ পোল্ট্রি অ্যান্ড হ্যাচারি, আফতাব বহুমুখী ফার্মস, অলটেক বাংলাদেশ, এজি এগ্রো এবং নাহার এগ্রো’র প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/এম