তোফায়েল হোসেন জাকির, গাইবান্ধা থেকে: গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলায় কলা চাষে স্বল্প খরচে অধিক লাভ হওয়ায় চাষীদের ভাগ্যবদলসহ কলা চাষে আগ্রহ বাড়ছে।
সাদুল্যাপুর উপজেলা বড় জামালপুর, আরাজী জামালপুর ও খোর্দ্দ রসুলপুর গ্রামসহ বিভিন্ন গ্রামে প্রায় ১৫৫ হেক্টর জমিতে কলা চাষাবাদ হয়েছে। চারদিকে নজর কাড়ছে সবুজে ভরা কলা ক্ষেত।
সোমবার সকালে সরজমিনে উপজেলার কলা চাষী আ. জলিল মিয়া জানান, আমাদের উৎপাদিত কলা দেশের বিভিন্ন জেলাগুলোর চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি করা হচ্ছে। এ কারণে একদিকে যেমন চাষিরা পাচ্ছেন কলার ন্যায্য মূল্য, অন্যদিকে এ বাজার ঘিরে ক্রেতা, বিক্রেতা, স্থানীয় কলা ব্যবসায়ীসহ কয়েক শত পরিবার স্বচ্ছল জীবন যাপন করছেন।
জাহাঙ্গীর আলম জানান, অধিক লাভবান অর্থকরী ফসল হিসেবে কলা চাষকে বেছে নিয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। ফলে এ কলা চাষ কৃষকের জন্য সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে।
উপজেলার কলা চাষী আলমঙ্গীর মণ্ডল বলেন, “জমিতে চারা রোপণের ৮ থেকে ৯ মাস পর ফলন আসতে শুরু হয়। একবার রোপণ করলে ওই গাছ ও তার পাশে গজিয়ে ওঠা গাছ থেকে বার বার ফলন পাওয়া যায়। এছাড়া প্রতি বিঘা জমিতে মাত্র ৩৫ হাজার টাকা খরচ করে লক্ষাধিক টাকার কলা বিক্রি করা সম্ভব।”
তবে চাষিদের অভিযোগ, কলা চাষ লাভজনক খাত হলেও একে উৎসাহিত করতে সরকার বা কৃষি অফিস থেকে কোনো আর্থিক সহযোগিতা তারা পান না।
তারা আরও জানান, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া গেলে অধিক পরিমাণ কলা চাষে আগ্রহী হতেন উপজেলার এ এলাকার কৃষকরা। এর ফলে স্থানীয় ভাবে চাহিদা মিটিয়ে একটি রফতানিযোগ্য পণ্য হিসেবে রাজস্ব খাতে যুক্ত হতে পারে বিরাট অঙ্কের টাকা।
আরাজী জামালপুর গ্রামের কলাচাষি কাওসার মণ্ডল জানান, গত বছর দুই বিঘায় মাত্র এক লাখ টাকা খরচ করে সোয়া ৩ লক্ষাধিক টাকার কলা বিক্রি করা হয়েছে। এ বছর ৩ বিঘায় কলা চাষ করেছেন। এতে তার খরচ হয়েছে দের লাখ টাকা। এবার ৫ থেকে ৬ লাখ টাকার কলা বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন।
উপজেলার আদর্শ কলাচাষি সুমন মণ্ডল জানান, এ বছর তিনি দুই একর জমিতে কলা চাষ করেছেন। এতে তিনি অনেক লাভবান হবেন বলে আশাবাদী। এখানকার কলা সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
সাদুল্যাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সাঈদ মো. ফজলে এলাহী জানান, এ উপজেলায় গত মৌসুমে যেখানে কলা চাষ হয়েছিল ১২০ হেক্টরে, এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৫৫ হেক্টরে। অধিক লাভজনক হওয়ায় এখানকার কৃষকরা কলা চাষে ঝুঁকছেন। এতে উপজেলায় দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কলা চাষ।
তিনি আরও জানান, কৃষি অফিস থেকে আমরা তাদের বাগানে সুষম সার, কীটনাশক সরবরাহসহ পোকামাকড় দমনে আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহারে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে আসছি।
ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/এম