সার হিসেবে আবর্জনা ও বিষ্ঠার ব্যবহার

1057

আবর্জনাঃ
রান্নাঘরের ফেলে দেওয়া সবজির খোসা, মাছের আঁশ- কাটা, মোরগ-মুরগির নাড়িভুঁড়ি-হাড়, ভাত, ডাল, রুটি, চা, তরিতরকারি থেকে শুরু করে গাছের পাতা, পুরোনো কাগজ, খড়খুটো, ঘাস সবকিছু থেকে সার তৈরি করা যায়। এ সারকে আবর্জনা সার বলা হয়। আবর্জনা থেকে এ সার তৈরির বেলায় কিছু নিয়ম মানতে হয়। আবর্জনা যেখানে সেখানে না ফেলে এক মিটার লস্বা, এক মিটার প্রস্থ ও এক মিটার গভীর একটি গর্তে ফেলে আবর্জনা সার তৈরি করা যায়। আবর্জনা থেকে সার তৈরি হয় বলে পরিবেশের জন্য ভালো। করণ একদিকে যেমন নোংরা, পচাঁ ও দুর্গন্ধ থেকে পরিবেশে থাকে সুরক্ষিত, তেমনি নাম মাত্র খরচে মানসম্পন্ন জৈব পাওয়া যায়। গর্তে আবর্জনা ফেলে তৈরি জৈব সারে নাইট্রোজেন থাকে কম। এ জন্য এক লিটার পানিতে ২০ গ্রাম ইউরিয়া মিশিয়ে আবর্জনায় ছিটিয়ে দিতে হবে। ছিটাতে হবে এমনভাবে, যেন আবর্জনা থেকে দরদর করে পানি না পড়ে, বরং হাতে দিয়ে চাপ দিলে আঙুলের ফাঁকে পানি জমে। সারের গুণগত মান বৃদ্ধির জন্য গর্তে দুই কেজি এস.এস.পি (সিঙ্গল সুপার ফসফেট) সার ভালো করে ছিটিয়ে দিতে হবে। এরপর গর্তে জমানো আবর্জনার ওপর গোবর ও মাটি লেপে দিয়ে তিন মাস রাখতে হবে। এতে কাক, বিড়াল, কুকুর আবর্জনা এলোমেলো করতে পারবে না। এগুলো পচতে থাকবে। তিন মাস পর গর্তের আবর্জনাগুলো একই মাপের অন্য একটি গর্তে বদল করে দিতে হবে। তারপর ছয়-সাত সপ্তাহ পর এই সার ব্যবহার করতে হবে। বেশি দিন পচানো ঠিক নয়, কারণ তাতে সারের গুণগত মান নষ্ট হয়ে যাবে।

বিষ্ঠা থেকে কম্পোস্টঃ
হাঁস -মুরগীর বিষ্ঠা প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট গর্তে ফেলতে হবে। এক মিটার প্রস্থ, এক মিটার গভীর ও তিন মিটার লম্বা গর্ত করে নিচ থেকে ওপর পর্যন্ত পলিথিন বিছিয়ে গর্ত তৈরি করে নিতে হবে। এরপর প্রতিদিন বিষ্ঠা সংগ্রহ করে গর্তে রাখতে হবে। বিষ্ঠার পরিমাণ ১০ কেজি হলে আড়াই লিটার পানি এবং আধা কেজি চুন ছিটিয়ে দিতে হবে। একইভাবে আগের মতোই গর্তে জমানোর প্রথম ১৫ দিন, প্রতি তিন দিন পরপর উল্টে দিতে হবে। এরপর প্রতি সাত দিনে একবার নাড়াচাড়া করে দিলেই হবে। কম্পোষ্টের মান বাড়তে গর্ত বিষ্ঠা দিয়ে ভর্তি হয়ে গেলে “ভিরকন-এস” এক ভাগ ১০০ গুণ পানির সঙ্গে মিশিয়ে স্প্রে মেশিন বা ঝাঁঝরি দিয়ে বিষ্ঠার ওপর ছিটিয়ে দিতে হবে। এবার পলিথিন বাইরের প্রান্ত দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে দেড় মাস।

কপোষ্ট পরীক্ষাঃ
দেড় মাস পর বিষ্ঠাগুলো গাছ পচাঁ গন্ধের মত গন্ধ সৃষ্টি করবে। কপোষ্ট দেখতে হবে গাঢ় বাদামি রঙের। শরীরে লাগলে গরম অনুভূত হবে না। এ রকম কপোষ্ট জমিতে সার হিসাবে প্রয়োগ করা যাবে। এ সারে ক্ষতিকর রোগ জীবাণু বেঁচে থাকতে পারে না।

ফার্মসএন্ডফার্মার/০৭জুন২০