১২ লাখ গ্রামীণ জনগণের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে পিডিবিএফ

342

2017-09-17_2_698724
পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের অধীন পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশন (পিডিবিএফ) ১২ লাখ গ্রামীণ জনগণের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে।

জুলাই ২০১২ থেকে জুন ২০১৮ মেয়াদে ৩৩৪ কোটি ২৪ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে চলমান এই প্রকল্পটি দেশের ২০টি জেলার ১০০টি উপজেলায় ১২ লাখ গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর আত্ম কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে অবদান রাখছে। এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে ২২ হাজার উপকারভোগী প্রতিনিধিকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। উপকারভোগীর শতকরা ৯৮ ভাগই হচ্ছে নারী কর্মী।

পিডিবিএফ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মদন মোহন সাহা বাসসকে জানান, সরকার ২০২১ সালের মধ্যে দারিদ্র বিমোচন কর্মসূচির অংশ হিসেবে নারীদের অধিক কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে আরো আরো ১২০টি উপজেলায় এই কর্মসূচি শুরু করার উদ্যোগ নেয়া হবে।

বর্তমানে রংপুর,কুড়িগ্রাম, নীলফামারি, নাটোর, রাজশাহী, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, রাজবাড়ি, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর,গোপালগঞ্জ, বরগুনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, কুমিল্লা, ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া, সুনামগঞ্জে এই কর্মসূচি কার্যকর রয়েছে।

মদন মোহন বলেন, এই প্রকল্পের আদায়কৃত অর্থ উপকারভোগীদের মধ্যে পুনঃঋণের মাধ্যমে ঘূর্ণায়মান করে আয়বৃদ্ধির পাশাপাশি নতুন প্রকল্প গ্রহণ করে অধিক কর্মসংস্থানের জন্য ঋণ দেয়া হবে।

পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মো. মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, বর্তমান সরকারের গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর নারীবান্ধব কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এই কর্মসূচি ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নের উদ্দেশে গ্রামীণ কর্মসংস্থানের উপর সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। পর্যায় ক্রমে দেশের ৫২টি জেলার ৪০০টি উপজেলায় জনকল্যাণে এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।

প্রতি উপজেলায় কমপক্ষে ১২ হাজার উপকারভোগী আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে নিজেদের সাবলম্বী করতে পারবে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের গ্রামীণ দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে সচ্ছল, উৎপাদনমুখী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার লক্ষ্যেই এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। চলতি অর্থ বছরে সরকার দারিদ্র বিমোচনে বরাদ্দকৃত ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা প্রকল্প কার্যক্রম মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এতে কোন কর্মীর কোন প্রকার গাফিলতি বা শৈথিল্য বরদাশ্ত করা হবে না বলে প্রতিমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিরাট অবদান রাখবে উল্লেখ করে প্রকল্প পরিচালক মনোয়ার হোসেন বলেন, এই প্রতিষ্ঠানটি গ্রামীণ জনগোষ্ঠির সমন্বয়ে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দল গঠন করা হয় এবং পরবর্তীতে তাদের নিয়ে সমিতি গঠন করা হয়। সমিতির সদস্যগণ নিয়মিত সঞ্চয় জমা করেন এবং ঋণ সুবিধা লাভ করেন। পিডিবিএফ সমিতির সদস্যগণ সমিতির নিয়মানুসারে পযায়ক্রমে ৫ হাজার থেকে শুরু করে ৫০ হাজার টাকা পযন্ত বিভিন্ন কাজে কোন জামানত বিহীন ক্ষুদ্র ঋণ গ্রহণ করতে পারেন। এছাড়া ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা/ ব্যবসায়ীরা পিডিবিএফ এর সদস্য হিসেবে প্রতিষ্ঠানের নিয়মানুসারে ৩০ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন প্রকল্পে ঋণ গ্রহণ করতে পারেন।

এ ঋণের কিস্তি মাসিক ভিত্তিতে পরিশোধ করতে হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, সমিতির সদস্যদেরকে কৃষি ভিত্তিক আয় বৃদ্ধিমূলক কমকান্ডে (আইজিএ) দক্ষতা উন্নয়নে হাঁস মুরগি ও গাভী পালন, পশু মোটাতাজাকরণ, ছাগল পালন, শাক-সব্জি চাষ, মৎস্য চাষ পালনে বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।

মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটউটের (এসআরডিআই) সহায়তায় কৃষির সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত সদস্যদের ফসলি জমির মাটি পরীক্ষা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ কৃষি খাতে বিরাট অবদান রাখছে বলে মনোয়ার হোসেন উল্লেখ করেন।

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/এম