২৫ কেজির ডাটা, ৭ ফুট লম্বা

1007

Khulna-pic-(DATA-)-(2)

শেখ হেদায়েতুল্লাহ, খুলনা থেকে: সবজির বীজ বিক্রি করতে করতে নিজেই হয়ে উঠেছেন দক্ষ ও সফল সবজি চাষী। মাত্র এক বিঘা জমিতে সবজি আবাদ করে বছরে আয় করেন লক্ষাধিক টাকা। এবার ওই জমির ১০ শতাংশ জমিতে ডাটা (বড় শাঁক) আবাদ করে এলাকায় ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি। একটি ডাটা লম্বায় প্রায় সাত ফুট আর প্রতিটি ডাটার ওজন ২০ থেকে ২৫ কেজি।

সফল এই সবজি চাষী জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার ছয়বাড়িয়া গ্রামের গাজী লুৎফর রহমান (৫৫)।

খুলনা শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার আর ডুমুরিয়া উপজেলা সদর থেকে উত্তরে ২০ কিলোমিটার দুরত্বে ছয়বাড়িয়া গ্রাম। ওই গ্রামের পীর মহম্মদ গাজীর ছেলে লুৎফর গাজী অভাবের সংসারে স্বচ্ছলতা আনতে ৩০ বছর পূর্বে শুরু করেন সবজির বীজের ব্যবসা। তিনি বরুনা হাটে বীজ বিক্রি শুরুর মধ্য দিয়ে বীজের ব্যবসা আরম্ভ করেন।

যশোর জেলার কেশবপুর সদর থেকে বীজ কিনে এনে বরুনা হাটে বিক্রি করেন সাপ্তাহিক হাটবারে। এরপর শাহপুর হাট, থুকড়া হাট, কপালিয়া হাট ও কাটাখালী হাটে শুরু হয় তার ব্যবসা। এক সময়ে লুৎফর রহমান চিন্তা করতে থাকেন বীজ বিক্রি করে তো সংসার চলে না। তাই বছর ২০ আগে বাড়ির পাশের ছোট ভিটায় শুরু করেন ছোট পরিসরে সবজির চাষ। তবে তিনি তখন সবজি বিক্রি করার মত চাষ করতেন না। বাজারে বিক্রির জন্য আনা বীজের ফলন দেখতেই তার সবজির আবাদ করা। এভাবে বীজের জাত, ফলন দেখার ইচ্ছা নিয়ে সবজির আবাদকারী হয়ে ওঠেন একজন পেশাদার সবজি আবাদকারী।

সবজিচাষি বীজের ব্যবসায়ী লুৎফর রহমান বলেন, এ বছর বৈশাখ মাসে কেশবপুরের হাবিব সীড হাউস থেকে মাত্র ১৮টাকা দিয়ে ৫০ গ্রাম কাটোরা জাতের দেশী ডাটার বীজ নিযে আসি। ওই বীজ আমার ক্ষেতের এক পার্শ্বে বপন করি। মাত্র ৩০ দিন পর থেকে ডাটা বিক্রি করা শুরু করি। তখন প্রতিটি ডাটা বিক্রি করতাম ১০ টাকা কেজি দরে। এক একটি ডাটার ওজন ছিল ২/৩ কেজি। আস্তে আস্তে ডাটা লম্বা ও বড় হতে থাকে। এখন প্রতিটি ডাটা লম্বায় ৭ ফুটের মত। আর প্রতিটি ডাটার ওজন ২০ থেকে পচিঁশ কেজি। প্রতিটি ডাটা বিক্রি করছি ৭০ থেকে ৮০ টাকায়।

তিনি বলেন, প্রায় ১ বিঘা জমিতে সবজির চাষ করছি। ক্ষেতে বেগুন, পুই শাক, ঢেঁড়শ, মরিচসহ নানা প্রজাতির সবজি রযেছে। নিজের সংসারের প্রয়োজন মেটানোর পাশাপাশি আতীয় স্বজনদেরকেও তিনি অকাতরে সবজি দেন। এছাড়া বাজারে বিক্রি করেও অনেক টাকা আয় করেন।

সফল বীজ বিক্রেতা সবজি চাষী লুৎফর রহমানের ১ ছেলে ১ মেয়ে। ছেলে ও ছেলের বউ পুলিশ বাহিনীতে চাকরি করেন। মেয়েকেও বিয়ে দিয়েছেন।

ডুমুরিয়া উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি অফিসার (বরুনা ব্লক) বিশ্বনাথ দাশ বলেন, গাজী লুৎফর রহমান একজন ভাল বীজ ব্যবসায়ী। তিনি বিভিন্ন জাতের বীজ বিক্রি করেন। অনেক বীজ পরীক্ষা করতে নিজেই ক্ষেতে আবাদ করেন। কাটোরা জাতের দেশীয় উন্নত জাতের ডাটার বীজ বপন করে খুব ভাল ফলন পেয়েছেন।

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/এম