প্রযুক্তির কল্যাণে এখন পৃথিবীর দূরবর্তী অনেক কিছুই আমাদের হাতের নাগালে চলে এসেছে। ঘরে বসেই পাওয়া যাচ্ছে দুনিয়ার তাবৎ খবরাখবর। এমনকি প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের কৃষি, সাহিত্য এবং নানামুখী উৎসাহব্যঞ্জক খবরাখবরও। আদান-প্রদানের এই অবাধ প্রবাহের সুযোগ কাজে লাগাচ্ছেন অনেকেই। এ কারণে সুদূর আমেরিকার গাছপালাও এসে থিতু হয়েছে আমাদের দেশে। আবার আমাদের গাছপালা পৌঁছে গেছে সেখানে।
গত কয়েক দশকে উৎসাহী প্রকৃতিপ্রেমিক ও কৃষিবিদদের হাত ধরে অন্য গাছপালার পাশাপাশি ভিনদেশি অনেক শাকসবজিও আমাদের দেশে চাষ হচ্ছে। উপযোগিতার কারণে এসব শাকসবজি দ্রুত ছড়িয়েও পড়ছে সারা দেশে। এদের কোনো কোনোটি সীমিতভাবে টবেও চাষ করা যায়।
এসব শাকসবজির মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয়- লেটুসপাতা, ব্রকলি, ক্যাপসিকাম, চেরি টমেটো, চায়নিজ ক্যাবেজ ইত্যাদি। বিভিন্ন নার্সারিতে এসব শাকসবজির চারাও পাওয়া যায়। ঢাকায় সরকারিভাবে আসাদগেট ফলবীথি হর্টিকালচার সেন্টারে দেশি-বিদেশি শাকসবজির চারা বিক্রি হয়। চারা সংগ্রহ করে আপনিও এসব শাকসবজি চাষ করতে পারেন।
অবশ্য বিদেশি শাকসবজি হওয়ার কারণে চাষের ক্ষেত্রে বাড়তি কোনো যত্নের প্রয়োজন নেই। টব বা বেড যেখানেই রোপণ করা হোক না কেন, আগে মাটি প্রস্তুত করা প্রয়োজন। তারপর পরিমাণমতো প্রাকৃতিক সার মিশিয়ে মাটি ঝরঝরে করে নিতে হবে। চারা রোপণের পর চাই নিয়মিত সেচ। গাছের গোড়ায় পানি জমতে দেবেন না। এসব সবজি চাষে পর্যাপ্ত রোদ প্রয়োজন। তবে সুযোগ থাকলে দুপুরের চড়া রোদে ঘণ্টা দুয়েক ছায়ার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। তাতে অতিরিক্ত তাপমাত্রা থেকে অনেকটা সুরক্ষিত থাকবে। চারা রোপণের ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে নিড়ানি প্রয়োজন। ক্যাপসিকামের গাছগুলো কাঠি দিয়ে বেঁধে দিতে হবে। আর চেরি টমেটোর গাছ মাচায় তুলে দিলে ভালো ফলন পাওয়া যায়।
চায়নিজ ক্যাবেজ অনেক আগেই এসেছে আমাদের দেশে। সীমিতভাবে বিভিন্ন স্থানে চাষও হতে দেখা যায়। গড়নের দিক থেকে এরা বাঁধাকপির মতোই। আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের সালাদের সঙ্গে ক্যাবেজ ব্যবহার করতে দেখা যায়। ক্যাবেজের আগেই আমাদের দেশে ব্রকলির চাষ শুরু হয়েছে। বিশেষ করে সাভারের বিভিন্ন স্থানে সীমিতভাবে এটি চাষ হচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের সুপ তৈরিতে ব্রকলির ব্যবহার হয়। আমাদের দেশে অনেকেই ব্যাক্তিগতভাবে ব্রকলির চাষ করেন।
আমাদের দেশে সচরাচর যে জাতের ক্যাপসিকাম বেশি দেখা যায় সেটি দেখতে অনেকটা বড়সড় মরিচের মতো। এখনো যাঁরা চেনেন না তাঁদের কাছে ক্যাপসিকাম মানে মোটাসোটা মরিচ! এর ইংরেজি নাম সুইট পেপার বা বেল পেপার।
আমাদের দেশে চেরি টমেটো অনেকটাই নতুন। তবে ফলন প্রাচুর্য, স্বাদের ভিন্নতা এবং নজরকাড়া রঙের কারণে এটি সারা বিশ্বেই বেশ জনপ্রিয়। এদের মধ্যে হলুদ রঙের টমেটোগুলো সুমিষ্ট স্বাদের। এ কারণে বর্তমানে ফল হিসেবেই খাওয়া হয়। এসব ছাড়াও পার্সলে এবং সেলেরি সালাদের অন্যতম উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
ফার্মসএন্ডফার্মার২৪/জেডএইচ