যশোরে বর্ষাকালীন তরমুজ চাষে সফল কৃষক চিত্তরঞ্জন

949

তরমুজ
বৃহত্তর যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার মূলগ্রামের যতীন্দ্র দেবনাথের পূত্র চিত্তরঞ্জন দেবনাথ পেশায় একজন শিক্ষক হলেও তিনি একজন অসাধারণ মেধাবী কৃষক। সব সময় নতুন কোনো চমক দেখাতে চান তিনি। তারই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি বর্ষাকালীন তরমুজ চাষ করে চমক দেখালেন। নিজের ৮৪ শতাংশ জমিতে তিনি এবার তরমুজের চাষ করেছিলেন। সব রকমের খরচ বাদ দিয়ে তিনি প্রায় ২ লক্ষ টাকা আয় করেছেন।

চিত্তরঞ্জন দেবনাথ কৃষি বিভাগের একটি প্রকল্প ন্যাশনাল এগ্রিকালরাচাল টেকনোলজি প্রজেক্ট ফেজ-২ প্রকল্পের (এনএটিপি-২) প্রকল্পের ভোগতি নরেন্দ্রপুর সমবায় সমিতির একজন সদস্য। প্রকল্পের অর্থায়নে তিনি বর্ষাকালীন জরমুজ ও বারোমাসি আম চাষ এবং সিআইজি ব্যবস্থাপনা বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণের পরে উপজেলা কৃষি অফিসার ও উপ-সহকারী কৃষি অফিসারের পরামর্শে যশোর সদর উপজেলায় সরেজমিন তরমুজ চাষ দেখতে যান। সেখান থেকে তিনি উদ্বুদ্ধ হন।

প্রথমে জেসমি-২ ও পরে ব্লাক বেবি জাতের তরমুজের চারা তৈরী করেন এবং ৮৪ শতাংশ জমিতে বৈশাখ মাসের শেষের দিকে রোপন করেন। তার উৎপাদন খরচ হয়েছে ১ লাখ টাকা। তিনি আষাঢ় মাসে ফল সংগ্রহ শুরু করেন। ইতিমধ্যে তিনি ২ লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করেছেন। ক্ষেতে আরো লক্ষাধিক টাকার তরমুজ রয়েছে। চিত্তরঞ্জন দেবনাথের বর্ষাকালীন তরমুজ চাষ দেখে পাশ্ববর্তী কৃষকরাও বর্ষাকালীন তরমুজ চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। তাঁর এই বর্ষাকালীন তরমুজ চাষ এলাকায় ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে।

কৃষক চিত্তরঞ্জন দেবনাথ বলেন, ৮৪ শতাংশ জমিতে এ আবাদ করা হয়েছে। প্রথম আবাদ করায় কিছু সমস্যা হলেও ফলন ধরেছে ভালো। প্রতিকেজি তরমুজ ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তিনি কৃষি বিভাগের ন্যাশনাল অ্যাগ্রিকালচারাল টেকনোলজি প্রজেক্ট ফেজ-২ প্রকল্পের (এনএটিপি-২) সমবায় সমিতির একজন সদস্য। এখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে তিনি বর্ষাকালীন তরমুজ চাষে আগ্রহী হন। দুই বিঘা জমিতে তাঁর খরচ হয়েছে প্রায় ১ লাখ টাকা। এ পর্যন্ত তিনি ২ লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করেছেন এবং ক্ষেতেও ১ লাখ টাকার তরমুজ রয়েছে।

কৃষিবিদ মহাদেব চন্দ্র সানা বলেন, চিত্তরঞ্জন দেবনাথ শিক্ষক হলেও তিনি একজন মেধাবী কৃষক। কৃষিতে লাভজনক পেশার রূপান্তরের জন্য তাঁর এ উদ্যোগ প্রশংসনীয়। তাঁর ক্ষেতে যেভাবে ফলন ধরেছে তাতে প্রায় তিন লাখ টাকা বিক্রি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কৃষি বিভাগ থেকে তাঁকে প্রযুক্তিগত পরামর্শসহ সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। কৃষক চিত্তরঞ্জন দেবনাথ বর্ষাকালীন তরমুজ চাষ করে অন্য কৃষকদেরও এ চাষের প্রতি উদ্বুদ্ধ করে তুলছেন।

কেশবপুরে বর্ষাকালীন তরমুজ চাষের ক্ষেত দেখার জন্য কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি যশোর, খুলনা ও সাতক্ষীরা অঞ্চলের কৃষকরাও আসছেন।
ফার্মসএন্ডফার্মার২৪/জেডএইচ
এগ্রিফার্মস২৪/জেডএইচ