পানি ঘোলা হলেই কি চুন দেওয়া যাবে? এমন প্রশ্ন অনেকেই করে থাকেন। বিভিন্ন কারনে অনেক সময় পুকুরের পানি ঘোলা হয়ে থাকে। তবে সেক্ষেত্রে কি করতে হবে তা অনেকেই জানেন না। আবার কেউ কেউ দ্বিধায় পড়েন পানি ঘোলা হলে চুন দিবেন কিনা। আসুন সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই-
পানি ঘোলা হলেই কি চুন দিবেন?
এই প্রশ্নটার উত্তরে আমরা কি বলব! এই প্রশ্ন করলে অনেকেই হয়ত বলবেন, চুন প্রয়োগ করেন। আবার অনেকেই বলবেন ফিটকিরি মারেন, আবার কেউ কেউ বলবেন কলা গাছ কেটে টুকরা টুকরা করে দেন। এমনি সব অদ্ভুত উত্তর অনেকেই দিবেন যা শুনলে চোখ কপালে উঠবে।
এই অবস্থায় কি করা প্রয়োজন?
যে কোন বিবেচক লোকের উত্তর হওয়া উচিৎ যে, ‘চাষীর সাথে আগে আরো কথা বলা দরকার’। এখন চাষীর উত্তর যদি এমন হয় যে, “আমার বেলে দোয়াশ মাটির পুকুরে শতকে দেড় কিংবা দুই কেজি চুন দিয়ে পুকুর প্রস্তুতির কাজ করেছি। মাছও নিয়ম মাফিক ছেড়েছি। সার এবং খাদ্যও দিচ্ছি। কিন্তু এখন পানি ঘোলা হচ্ছে”, তাহলে কি হতে পারে ?
এই ক্ষেত্রে এমন আলোচনা বুঝি করা করা যেতে পারে।
– বেশী অক্সিজেনের সংকুলানের জন্য পানি বাড়িয়ে গড়ে ৫-৬ ফুট করেন;
-পানির বর্ণ ধরে রাখার জন্য প্রাকৃতিক খাবার তৈরির ফর্মূলা ব্যবহার করুন!
-প্রয়োজনে খাবারের পরিমান নির্ধারন সাপেক্ষে খাদ্য প্রয়োগ করুন।
উল্লেখ্য যে, প্রয়োজনীয় পরিমান খাবার না পেলে মাছ কিন্তু খাবারের সন্ধানে ঘুরতেই থাকবে । এই সময় মাছ মাটিও খুটবে খুব বেশী যার ফলে পানি ঘোলা হয়ে যাবে।
এমতাবস্থায় আপনি হয়ত ভাবছেন পানি স্বাভাবিকভাবেই ঘোলা হয়েছে তাই চুন দেয়া দরকার।
আবার পানি ঘোলা হলে সালোক সংশ্লেষনের কাজ বাধা পাওয়ায় এক দিকে যেমন প্রাকৃতিক খাদ্য তৈরি কমে যাচ্ছে অন্য দিকে অক্সিজেন তৈরির কাজও বাধাগ্রস্থ হচ্ছে।
প্রাকৃতিক ভাবে অক্সিজেন সরবরাহ কমে গেলে মাছের বিপাক ক্রিয়া এবং আত্তীকরন সঠিকভাবে না হলে আপনার প্রয়োগকৃত খাদ্যেরও সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত হচ্ছে না।
এক্ষেত্রে চুন দেয়াটা বুদ্ধিমত্তার কাজ হবে না। যদি এক্ষেত্রে কেউ চুন দেয়ার পরামর্শ দেন তাহলে বলব যে , “পর্যবেক্ষণটা ঠিক ছিল কিন্তু হিসাবটা ঠিক হল না”।
বরং এ অবস্থায় চাষীকে মিশ্র চাষ হোক তেলাপিয়া কিংবা যে চাষই হোক খাবারের পরিমানটা মাছের নমুনায়ন করেই হোক আর “খাদ্য দানী” বা ” ট্রে” ব্যবহার করেই হোক খাবারের পরিমান নির্ধারন করতে পারলেই আপনার সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করি।
ফার্মসএন্ডফার্মার/০২মার্চ২০