হাঁস পালন একটি লাভজনক পেশা। হাঁস পালন লাভজনক ও সহজে পালন করা যায় বলে বর্তমান সময়ে অনেক শিক্ষিত বেকার হাঁস পালনের দিকে ঝুঁকে পড়ছেন। যারা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে নতুন হাঁসের খামার করছেন তারা হাঁসের খাদ্য ব্যবস্থাপনা ঠিকঠাকভাবে করতে পারেন না । এই পোস্টটি মূলত তাদের জন্য যারা নতুন খামারি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন কিন্তু হাঁসের খাদ্য ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে অবগত নন। আসুন জেনে নেয়া যাক বয়স অনুসারে হাঁসের খাদ্যের
উপাদান ০-৮ সপ্তাহ ৯-২০ সপ্তাহ ২১-বিক্রি
গম /ভুট্রা ভাংগা ৪৫ ৪৩ ৪৮
চালের কুড়া ১২ ৩০ ১২
গমের ভুসি ৫ ১০ ৫
তিলের খৈল ২২ ৮ ১৬
শুটকি মাছের গুড়া ১৫ ৭ ১৩
ঝিনুকের চূন্ন ০.৫০ ১.৫০ ৫.৫০
লবন ০.২৫ ০.২৫ ০.২৫
ভিটামিন মিনারেল ০.২৫ ০.২৫ ০.২৫
টোটাল ১০০ ১০০ ১০০
ডিম পাড়ার আরেক ফরমোলেশন
গম ৩০%
ধান ভাংগা ৪০
কালো তিল খৈল ১০
স ইয়াবিন খোল ১০
শুটকি মাছের গুড়া ৮
ঝিনুক ভাংগা ২%
টোটাল ১০০কেজি
নিচে বিভিন্ন বয়সের হাঁসের জন্য সুষম খাদ্য তৈরির একটি ফরমোলেশনঃ
খাদ্য উপাদান (%) বাচ্চা হাঁস(০-৬ সপ্তাহ) বাড়ন্ত হাঁস(৭-১৯ সপ্তাহ)
গম ভাঙা ————- ৩৬.০০ ———————— ৩৮.০০
ভুট্টা ভাঙা ———— ১৮.০০ ————————- ১৮.০০
চালের কুঁড়া ———- ১৮.০০ ————————- ১৭.০০
সয়াবিন মিল ——— ২২.০০ ————————- ২৩.০০
প্রোটিন কনসেনট্রেট – ২.০০ —————————- ২.০০
ঝিনুক চূর্ণ ———— ২.০০ —————————- ২.০০
ডিসিপি ——— —— ১.২৫ —————————- ১.২৫
ভিটামিন প্রিমিক্স —- ০.২৫ —————————- ০.২৫
লাইসিন ————— ০.১০ ————————— ০.১০
মিথিওনিন ———— ০.১০ ————————– ০.১০
লবণ ——————- ০.৩০ ————————- ০.৩০
———————————————————————————
মোট ১০০.০০ ———————— ১০০.০০
নিচেরটা ও অনুসরণ করা যায়
খাদ্য উপাদান পরিমাণ (%)
গম ভাঙা ৪৫
চালের কুঁড়া ২০
গমের ভুষি ১২
তিলের খৈল ১২
শুটকি মাছের গুঁড়া ১০
লবন ০.৫
ভিটামিন ০.২৫
—————————-
মোট ১০০
ডিম পাড়া শুরুর ২ সপ্তাহ আগে থেকে শেষ পর্যন্ত
বা ডিম পাড়া হাঁস(২০ সপ্তাহ থেকে তদুর্ধে) হাঁসকে খাওয়ানোর চার্টঃ
খাদ্য উপাদান পরিমাণ (%)
গম ভাঙা ৪০
চালের কুঁড়া ২৫
গমের ভুষি ৫
তিলের খৈল ১২
শুটকি মাছের গুঁড়া ১০
ঝিনুক ভাঙা ৭.২৫
লবন ০.৫
ভিটামিন ০.২৫
——————————–
মোট ১০০
খাওয়ানোর নিয়মঃ
বর্ষা মৌসুমে অর্ধছাড়া অবস্থায় পালনকৃত বাচ্চা হাঁসকে দৈনিক ৪০ গ্রাম এবং বয়স্কগুলোকে ৬০ গ্রাম হারে সুষম খাদ্য দিতে হবে। তবে শুষ্ক মৌসুমে প্রাকৃতিক খাদ্যের পরিমান কমে যায় বলে এসময় ছেড়ে খাওয়ানোর পাশাপাশি ৭০ থেকে ৮০ গ্রাম খাদ্য সরবরাহ করা দরকার। তবে প্রাকৃতিক খাদ্য না দিতে পারলে খাকী ক্যাম্পবেল হাঁসকে দৈনিক ১৭৬ গ্রাম হারে এবং জিন্ডিং হাঁসকে দৈনিক ১৬০ গ্রাম হারে খাদ্য দিতে হবে।
ভিটামিন প্রিমিক্স ১০গ্রাম
প্রতি কুইন্টালে ক্লোলিন ক্লোরাইড ৫০ গ্রাম
কক্সিডিওস্টট ১২ সপ্তাহ পর্যন্ত ১০০কেজিতে ৫০ গ্রাম
বাচ্চার খাবারে ২১% প্রোটিন ,স্নেহ ৪.৫%এবং ডিম পাড়া অবস্তায় ১৮% প্রোটিন লাগবে।
তিল বা বাদাম ছাড়া অন্য কোন খৈল হাস কে দেয়া যাবেনা।
সুযোগ থাকলে শামুক বা গুগলি,ফেলনা ভাত,চাল ধোয়া জল,আনাজ খোসা,মাছের আশ কাটা।
৮ সপ্তাহ পর্যন্ত ৪-৫ কেজি খাবার খায়।
২০ সপ্তাহ পর্যন্ত প্রতি হাসের জন্য ১২.৫ কেজি খাদ্য লাগবে এবং ফুল ডিম আসতে ১৫ কেজি খাদ্য লাগবে।
জলাশয় থেকে প্রতি হাস প্রায় ৪০-৫০ গ্রাম খাদ্য পায়।
কতবার খাবার দিতে হবে
০-৪ সপ্তাহ ৪ বার
৪-৮ ৩ বার
৮ এর বেশি ২ বার
বয়স খাবার
১ম সপ্তাহ ১০-২০ গ্রাম
২য় সপ্তাহ ২১-৩১ গ্রাম
৩য় সপ্তাহ ৩১-৪১ গ্রাম
৪র্থ সপ্তাহ ৪১-৫৫ গ্রাম
৫ম সপ্তাহ ৫৫-৬০ গ্রাম
খাবার দিলে পানি দিতে হবে,হাস খাবার নেয়ার পর পানি নেয় তাছাড়া ঠোট ও চোখ পরিস্কার করার জন্য পানি লাগে।গ্রামে মাটির গামলায়জল দেয়া যায়।বাচ্চা ফুটাতে হলে ৫ টি হাসির জন্য ১ টি হাস দিতে হয় আর বাচ্চা না ফুটাতে চাইলে ১০-১৫ টি হাসির জন্য ১টি হাস দিলে ভাল পানি ছাড়া হাস খাবার খেতে পারেনা। হাস মুরগির ডাবলের চেয়ে একটু কম খায়,পার্থক্য হল হাস কিছু মানে তিনের এক ভাগ বাহির থেকে খায়।
১দিন বয়সে হাসা বা হাসি নির্ণয়ঃ
বাচ্চার লেজের দিক টা বা হাত ধরে উলটে দিন,ডান হাতের বুড়ো আঙুল আর তর্জনীর সাহায্যে জোরে মলদার টিপে ধরুন কিছুটা এগিয়ে নিন। নর হলে ছোট লিংগটা ছোট কাটার মত বেরিয়ে আসবে, নারী হলে কিছুই বের হবেনা।বড় হাসের কন্ঠস্বর তিক্ষ্ম আর মদ্দার সর ফ্যাসফ্যাসে মদ্দার লেজের পালক কোকড়ানো এবং ওপর দিকে তোলা।
ফার্মসএন্ডফার্মার/০৮এপ্রিল২০