করোনা ভাইরাসের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে গ্রামের ক্ষুদ্র ও মাঝারি চাষিদের জন্য সরকার যে পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা তহবিল ঘোষণা করেছে, সেখান থেকে ঋণে সুদের হার সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক গত সোমবার ওই ঋণের জন্য নীতিমালা ঘোষণা করে জানিয়েছে, এ তহবিলের আওতায় অংশগ্রহণকারী ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ১ শতাংশ সুদ হারে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা পাবে। আর গ্রাহক পর্যায়ে সুদের হার হবে সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ। করোনা ভাইরাসের কারণে অর্থনৈতিক ক্ষতির মধ্যেও কৃষি উৎপাদন অব্যাহত রাখতে গ্রামের ক্ষুদ্র ও মাঝারি চাষিদের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রবিবার এই পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা তহবিলের ঘোষণা দেন। কেবল গ্রাম অঞ্চলের ক্ষুদ্র ও মাঝারি চাষিরাই এ তহবিল থেকে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ সুদে ঋণ পাবে বলে জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
‘করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে কৃষি খাতে চলতি মূলধন সরবরাহের উদ্দেশ্যে পাঁচ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন স্কিম গঠন ও পরিচালনা’ শীর্ষক নীতিমালায় বলা হয়েছে, করোনা ভাইরাসের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাপনসহ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সীমিত হয়ে পড়েছে। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দীর্ঘায়িত হলে ভবিষ্যতে খাদ্য উৎপাদন হ্রাসসহ বিভিন্ন বিরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কৃষি ও পল্লীঋণ নীতিমালা অনুযায়ী, ব্যাংকগুলোর মোট লক্ষ্যমাত্রার ন্যূনতম ৬০ শতাংশ শস্য ও ফসল খাতে ঋণ বিতরণের নির্দেশনা রয়েছে। সে হিসেবে চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে ব্যাংকগুলোর জন্যে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ২৪ হাজার ১২৪ কোটি টাকার ৬০ শতাংশ, অর্থাৎ প্রায় ১৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা শস্য ও ফসল খাতে ঋণ বিতরণ করা সম্ভব। শস্য ও ফসল খাতে চলমান ঋণপ্রবাহ পর্যাপ্ত থাকায় এ খাতের চেয়ে কৃষির চলতি মূলধন ভিত্তিক খাতগুলোতে বেশি ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে বলে এ খাতগুলোতে ঋণের প্রবাহ নিশ্চিত করা দরকার।
এ প্রেক্ষাপটে চলতি মূলধনভিত্তিক কৃষির অন্যান্য খাতে পর্যাপ্ত অর্থ সরবরাহ নিশ্চিত করা হলে দেশের সার্বিক কৃষি খাতের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সম্ভব হবে। এ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই এ খাতগুলোর জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন স্কিম গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে নীতিমালায় জানানো হয়। ব্যাংকগুলোকে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ঋণ বিতরণ করে মাসিক ভিত্তিতে পুনঃঅর্থায়নের জন্য আবেদন করতে হবে।
ফার্মসএন্ডফার্মার/২১এপ্রিল২০