মাছের বিভিন্ন প্রকার রোগের বিবরণ ও প্রতিকার

1530

মাছের ক্ষত রোগ (লাল ক্ষত রোগ)-Epizootic Ulcerative Syndrome : পানির দূষিত পরিবেশে প্রথমতঃ ভাইরাস ও দ্বিতীয় পর্যায়ের এফানোমাইসিস ইনভাডানস নামক এক প্রকার ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া দ্বারা একটি বিশেষ জলজ পরিবেশে এ রোগ সৃষ্টি হয়।

সময়ঃ
সাধারনত শীতের শুরুতে এবং শীতের শেষে এ রোগের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। এ রোগে সাধারণত তেলাপিয়া, মৃগেল, কারপিও, রুই, ঘাসকার্প, কই,সরপুঁটি মাছ আক্রান্ত হয়।

কারনঃ
• এ রোগের মূল কারণ এফানোমাইসিস ইনভাডানস নামক ছত্রাক দ্বারা মূলতঃ মাংসপেশী আক্রান্ত হলে এছাড়াও কিছু ব্যাকটেরিয়া প্রোটোজোয়ারও আক্রমণ ঘটতে পারে।
• পানির দূষিত পরিবেশ হঠাৎ তাপমাত্রার কমতি(শীতকাল অর্থাৎ কম তাপমাত্রা), পিএইচ এর কমতি, অ্যালকালিনিটির কমতি, ক্লোরাইড এর স্বল্পতা।

মাছের ক্ষতরোগ চিনার উপায়ঃ
• মাছের দেহের ভারসাম্যহীনতা দেখা যায়। প্রাথমিক পর্যায়ে দেহে লাল বর্ণের ক্ষত দেখা যায়, আস্তে আস্তে এতে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়। ক্ষতের মধ্যে পুঁজ থাকে। তাছাড়া ক্ষতস্থান ঘিরে তুলার মত আঁশ দেখা যায়।
• আক্রান্ত মাছের দেহে বিশেষ করে নিজের দিকে ও মাথার পিছনে লাল দাগ দেখা যায়।
• ক্ষত পচে খসে পড়ে ও দুর্গন্ধ বের হয়।
• আক্রান্ত মাছ পুকুরের কিনারে ভেসে বেড়ায়।

প্রতিষেধকঃ
প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম। তাই এই রোগ হওয়ার পূর্বে শীত মৌসুম আসার আগে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে তিন থেকে ছয় ফুট গভীরতার প্রতিটি জলাশয়ে ০.৫ থেকে ১ কেজি হারে পাথুরে চুন পানিতে গুলে ঠাণ্ডা করে সমস্ত জলাশয় ছিটিয়ে দিতে হবে।

প্রতিকারঃ
• মাছের ক্ষত রোগ দেখা মাত্র নিরাময়ের জন্য প্রতি শতাংশে আধা কেজি হারে লবণ এবং তার সাথে 6 থেকে 8 মিলি হারে ভালমানের জীবাণুনাশক(বিকেসি-৮০%) সমস্ত পুকুরে ভালভাবে ছিটিয়ে দিতে হবে।
• প্রতি কেজি খাবারের সাথে ৫ থেকে ৭ গ্রাম হারে অক্সিটেট্রাসাইক্লিন অথবা এমোক্সিসিলিন গ্রুপের ঔষধ মিশিয়ে এবং এর সাথে ভিটামিন সি(প্রতি কেজি খাবারে ৩ গ্রাম) যুক্ত ওষধ ৫ থেকে ৭ দিন খাওয়াতে হবে।
• নিম গাছের ডাল পাতাসহ পানিতে ডুবিয়ে রেখেও ভাল ফলাফল পাওয়া যায়।

ফার্মসএন্ডফার্মার/৩০সেপ্টেম্বর২০