বরই চাষ করে ভাগ্যবদল শিক্ষিত রাকিবুলের

178

নড়াইল জেলার লোহাগড়ায় উন্নতজাতের কুল বরই চাষ করে ভাগ্যবদল হয়েছে কাশিপুর ইউনিয়নের এড়েন্দা গ্রামের শিক্ষিত যুবক মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলামের। রাকিবুল (২৭) এড়েন্দা গ্রামের মো: জহর শেখের ছেলে। প্রথমে শখের বশে কুল বরই লাগালেও এখন তিনি বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষ শুরু করেছেন।নিজের গ্রাম এড়েন্দা এবং মল্লিকপুর গ্রামে লিজ নেওয়া প্রায় পাঁচ একর জমিতে রোপণ করেছেন ১৫ শতাধিক কুলের চারা। চাষ শুরুর পর বছর ঘুরতে না ঘুরতেই বাগানের কুলগাছে আশাতীত ফলন হয়েছে। কুল বাগানে ছোট ছোট গাছে কুল বরই ভরে গেছে। স্নাতক পাস রাকিবুলের চাষ করা কাশ্মীরি কুল, থাই কুল, বলসুন্দরী কুল ও সিডলেস কুলের বাগান দেখতে প্রতিনিয়ত লোকজন ভিড় জমাচ্ছেন।

মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম গত দুু’বছর আগে শখের বশে কাশ্মীরি কুল, থাই কুল, সিডলেস কুল ও বলসুন্দরী জাতের পাঁচ শতাধিক কুলের চারা মেহেরপুর থেকে এনে রোপণ করেন। ফলন ও লাভ ভালো হওয়ায় এ বছরও চাষ করেছেন বিভিন্ন জাতের কুল বরই।তিনি বলেন, গত দু’বছর আগে আমি যশোরে এক আত্মীয় বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে কুল বরইয়ের বাগান দেখি। তখন থেকে কুল বরই চাষে আমার আগ্রহ বাড়ে।প্রথমে আমি তিন বিঘা জমিতে পাঁচ শতাধিক বলসুন্দরী, কাশ্মীরি, থাই ও সিডলেস জাতের কুল বরইয়ের চারা রোপণ করি। চারা রোপণের পর ভয়ে ছিলাম কি হয়। তবে ফলন ভালো হওয়ায় এ বছর ১৫ শতাধিক চারা লাগিয়েছি। আমার খরচ হয়েছে ১২ লাখ টাকা। আশা করছি খরচ বাদে প্রায় ৭/৮ লাখ টাকা লাভ হবে।

কুল বাগানে কাজ করে খেয়ে-পরে ভালো আছেন ১০/১২টি পরিবার। উপজেলার অন্য বেকার যুবকরা এ ধরনের কুল বাগান করে নিজেদের ভাগ্য বদলাবেন এমনটি প্রত্যাশা রাকিবুলের। বলসুন্দরী কাশ্মিরী, থাই, নারকেল জাতের কুল ছাড়াও বাগানে সিডলেস কুলসহ ৫ প্রকার কুল চাষ করেছেন। এসব কুল খেতে মিষ্টি, সুস্বাদু এবং পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ফল হওয়ায় বাজারে চাহিদাও রয়েছে প্রচুর। তার এ সাফল্যে ইতোমধ্যেই এলাকায় ব্যাপক সাড়া পড়েছে। এলাকার অনেক যুবক কুল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

স্থানীয়দের কয়েকজন জানান, এবাগান দেখে তারা অভিভূত। তাদের জমিতেও এই ধরনের কুল বাগান করবেন বলে জানান। একুল বাগানের কথা শুনে দেখতে এসেছেন তারা। আগামী বছর তারাও এখান থেকে কুলের চারা ও পরামর্শ নিয়ে চাষ করবেন বলে জানান।

লোহাগড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ফারজানা আক্তার জানান, এ উপজেলায় কাশ্মীরি কুল বরইসহ বিভিন্ন জাতের কুলের আবাদ হচ্ছে। আকারে বড় ও সুস্বাদু কাশ্মীরি কুলের বেশ চাহিদা রয়েছে। আমাদের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা নিয়মিতভাবে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।কুল বরইয়ের চারা রোপণ ও চাষের জন্য উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।