“বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের আত্মত্যাগের প্রতি সমগ্র বাঙালি জাতি চিরকৃতজ্ঞ থাকবে”- চুয়েট ভিসি

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসে চুয়েট পরিবারের শ্রদ্ধা নিবেদন

135
চুয়েটে জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখছেন মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম।
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)-এর মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম মহোদয় বলছেন, “পঁচাত্তরের ১৫ই আগস্ট ছিল ইতিহাসের নৃশংসতম ও কলঙ্কজনক অধ্যায়। বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর স্বাধীনতা বিরোধীরা ইতিহাস বিকৃতির সমস্ত আয়োজন করেছিল। কিন্তু কালের বিবর্তনে দেশবাসীর নিকট সকল সত্য উন্মোচিত হয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধুর লেখা “অসমাপ্ত আত্মজীবনী” ও “কারাগারের রোজনামচা” বই দুটো আমাদের সবারই পড়া উচিত। তাহলে অন্তত নিজের বিবেকের সাথে প্রতারণা করা সম্ভব হবে না। বাংলাদেশ নামক স্বাধীন ভূ-খন্ডের অভ্যুদয় ও বর্তমান উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের আত্মত্যাগ ও অবদানের প্রতি সমগ্র বাঙালি জাতি চিরকৃতজ্ঞ থাকবে।” তিনি আরও বলেন, “দেশের প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী এখনও নানাভাবে তৎপর হয়ে উঠেছে। দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে। আমাদের এ বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে। বর্তমানে দেশের যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন ও সামাজিক স্থিতিশীলতা সেটা নিঃসন্দেহে অভাবনীয়। সেই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে আগামীদিনের সোনার বাংলা ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার মিশনে আমাদের সবাইকে শামিল হতে হবে।” তিনি আজ ১৫ই আগস্ট (মঙ্গলবার) ২০২৩ খ্রি. সকাল ০৯.৩০ ঘটিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের একাডেমিক কাউন্সিল কক্ষে “স্বাধীনতার মহান স্থপতি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস-২০২৩” উপলক্ষ্যে আয়োজিত বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের উপর আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সুনীল ধর, পুরকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. মইনুল ইসলাম, তড়িৎ ও কম্পিউটার কৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সামসুল আরেফিন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন যন্ত্রকৌশল অনুষদের ডিন ও রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির। এতে আরও বক্তব্য রাখেন বিভাগীয় প্রধানগণের পক্ষে পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মো. সানাউল রাব্বী, প্রভোস্টগণের পক্ষে সুফিয়া কামাল হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মোছাঃ ফারজানা রহমান জুথী, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবু সাদাত মুহাম্মদ সায়েম, কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি জনাব প্রকৌশলী সৈয়দ মোহাম্মদ ইকরাম, স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জনাব মো. জামাল উদ্দিন এবং শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ‘১৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী আজহারুল ইসলাম মাহমুদ, পুরকৌশল বিভাগের ‘১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী রাকিব উদ্দিন চৌধুরী ও ‘১৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী সাগরময় আচার্য্য, মেকাট্রনিক্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ‘১৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী বিজয় হাসান। অনুষ্ঠানমালা সঞ্চালনায় করেন উপ-পরিচালক (তথ্য ও প্রকাশনা) মোহাম্মদ ফজলুর রহমান এবং সহকারী রেজিস্ট্রার (সমন্বয়) মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম। অনুষ্ঠানের শুরুতে ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের শাহাদাতবরণকারী সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। পরে তাঁদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা ক্বারী নুরুল্লাহ। এরপর “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্ম” নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। চুয়েট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে বাদ জোহর ১৫ই আগস্টে বঙ্গবন্ধু পরিবারের শাহাদাতবরণকারী এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল শহিদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

এর আগে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও কালো পতাকা উত্তোলন করার মাধ্যমে দিনব্যাপী কর্মসূচীর শুরু হয়। পরে সকাল ০৯.০০ ঘটিকায় চুয়েটের মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা চত্বর সংলগ্ন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শোক দিবসের অনুষ্ঠানমালার সূচনা হয়। এ সময় সঙ্গে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির। এরপর বিভিন্ন অনুষদের ডিনবৃন্দ, ইনস্টিটিউট পরিচালক, বিভাগীয় প্রধান, অন্যান্য পরিচালক ও সেন্টার চেয়ারম্যানবৃন্দ, সকল অফিস প্রধান, ছাত্রকল্যাণ পরিচালক ও প্রভোস্টবৃন্দ, শিক্ষক সমিতি, কর্মকর্তা সমিতি, স্টাফ অ্যাসোসিয়েশন, চুয়েট ক্লাব, কর্মচারী ক্লাব এবং চুয়েট বঙ্গবন্ধু পরিষদের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পরে স্বাধীনতা চত্বর এলাকায় স্মারক বৃক্ষরোপণ করা হয়।