খেজুরের আমদানি শুল্ক আরও কমানোর দাবি ব্যবসায়ীদের

84

রোজার আগে আগে সরকার খেজুরের আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ কমালেও, তা ‘যথেষ্ট’ মনে করছে না ফল আমদানিকারকদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইম্পোর্টার অ্যাসোসিয়েশন’।

এই শুল্ক হ্রাসকে ‘অতি সামান্য’ হিসেবে বর্ণনা করে সংগঠনটি বলছে, যে পরিমাণ কমানো দরকার, সেই পরিমাণ কমেনি। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলেও, সরকার কয়েকগুণ শুল্ক দিয়ে রাখায় দাম বাড়তি।

গতকাল সোমবার ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ‘বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইম্পোর্টার অ্যাসোসিয়েশন’-এর পক্ষে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন সংগঠনের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘রমজানে ৫০ থেকে ৬০ হাজার মেট্রিক টন খেজুরের চাহিদা রয়েছে। অতীতে যে শুল্ক ধরা হতো, তা আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ থাকলেও বর্তমানে যে শুল্ক, তা বাজারমূল্য থেকে অনেক বেশি। তাই চাহিদা অনুযায়ী আমদানি করা হয়নি।’

এই ব্যবসায়ীর ভাষ্য, ‘খেজুর আমদানিতে পিপি ব্যাগে আগের শুল্কায়ন মূল্য ছিল কেজিপ্রতি ৫.৪৫ টাকা, আর বর্তমানে করা হয়েছে ৬৫ টাকা। ড্রাই কনটেইনারে ছিল ১০.৯৩ টাকা, যা বর্তমানে ধরা হয়েছে ১৬৪ টাকা। এছাড়া হিমায়িত কনটেইনারে ছিল কেজিপ্রতি ১০ টাকা, যা এখন ২৬২ টাকা। রিটেইল প্যাকেটজাত কার্টন ছিল ২১.৮৪ টাকা, যা বর্তমানে ১৮০ টাকা।

শুল্ক না কমালে খেজুরের মূল্য অস্বাভাবিক বেড়ে নিম্ন আয়ের মানুষের কেনা কষ্টসাধ্য হয়ে উঠবে বলে মন্তব্য করেন সিরাজুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘খেজুরে যেভাবে ডিউটি কমানোর কথা, সেভাবে তো কমেইনি, বরং আমদানির চেয়ে ৩ গুণ শুল্ক ধরা হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে খেজুরের দাম এ বছর মানভেদে ৫০ থেকে ১০০ ডলার কমেছে। কিন্তু আমাদের দেশে সরকার এই পণ্যে কয়েকগুণ শুল্ক দিয়ে দাম বাড়িয়েছে।’

রোজা সামনে রেখে গত ২৯ জানুয়ারি মন্ত্রিসভার বৈঠকে ভোজ্যতেল, চিনি, খেজুর ও চালের ওপর শুল্ক কমানোর নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ৮ ফেব্রুয়ারি পাঁচটি আলাদা প্রজ্ঞাপনে এসব পণ্যের শুল্ক বিভিন্ন পর্যায়ে কমানোর ঘোষণা দেয়।

ওই প্রজ্ঞাপনে খেজুরের আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়; বলা হয় আমদানিকারকরা ৩০ মার্চ পর্যন্ত এই সুবিধা পাবেন।

শুল্ক কমানোর এই পরিমাণ ‘অতি সামান্য’ মন্তব্য করে সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘অথচ বর্ধিত শুল্কায়ন ও আমদানি শুল্ক কমানো হবে, সেই আশায় আমদানিকারকরা অনেক খেজুরবাহী কনটেইনার চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছানোর পরেও পোর্টে রেখে দিয়েছেন।’

খেজুর নিয়ে ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘শুল্ক না কমালে খেজুর বিক্রি করতে পারব না। আর খেজুর বিক্রি করতে না পারলে ব্যাংকের ঋণ শোধ করতে পারব না।’

‘সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ, মানুষকে খেজুর খাওয়ার ব্যবস্থা করে দেন, শুল্ক কমিয়ে দেন। এখন যে মূল্য রয়েছে এ মূল্যে খেজুর বিলাসী পণ্যের কাতারে চলে গেছে। কিন্তু খেজুর তো বিলাসী পণ্য না।’