অতি বর্ষণে যশোরাঞ্চলে শীতকালীন সবজির চারা নষ্ট

334

20170705_110336
তরিকুল ইসলাম মিঠু, যশোর থেকে: সপ্তাহ জুড়ে বিরামহীন বৃষ্টিতে যশোরাঞ্চলের শীতকালীন সবজি চারা সিংহভাগ নষ্ট হয়েছে গেছে। ফলে বিপাকে পড়েছে এ অঞ্চলের কৃষকরা।

এসব এলাকার ক্ষেতগুলোতে বাঁধাকপি, ফুলকপি, মরিচ ও টমেটাসহ সব ধরনের সবজির চারা নষ্ট হয়ে গেছে। বিশেষ করে সবজি অঞ্চল খ্যাত বাঘারপাড়া, ঝিকরগাছা, চৌগাছা, মনিরামপুর, চুড়ামনকাঠি, হৈবতপুর, সাতমাইল, বারীনগর, নোঙরপুর এলাকার শত শত চাষিদের শীতকালীন সবজির চারা নষ্ট হয়ে গেছে।

চলতি মৌসুমে যশোর জেলায় ১১ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। তবে তা সপ্তাহ জুড়ে বিরামহীনভাবে বৃষ্টির কারণে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র যশোর সদর উপজেলায় ৩ হাজার ৩শ হেক্টর জমিতে সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। তবে চলতি বৃষ্টিতে কী পরিমাণ সবজির চারা নষ্ট হয়েছে সে বিষয়ে কৃষি বিভাগ নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেনি।

এদিকে বৃষ্টির কারণে ক্ষেতে পানি জমে যাওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। শীতকালন এসব সবজি উৎপাদনের খরব বেড়ে যাওয়াসহ বাজারে শীতের সবজির সরবারহ কমে যাবে বলে মনে করছে কৃষিবিদরা।

রোববার সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, চৌগাছা বাগডাঙা এলাকায় মৌসুমী বৃষ্টির কারণে সবজির নার্সারিতে পানি বেঁধে গেছে। নার্সারিতে ঢেকে দেয়া পলিথিন এক পাশে পড়ে আছে। চারার গোড়ায় পানি জমে চারা পচে নষ্ট হয়ে গেছে।

02

বাগডাঙ্গা গ্রামের চাষি ইমানউল্লার সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতি বছর এ এলাকার চাষিরা শীতের দু’মাস আগেই শীতকালীন সবজির চারা উৎপাদন করে থাকে। প্রায় সারা মাঠেই সব কৃষকরাই চারা উৎপাদন করে থাকে। অনেকে নিজের ক্ষেতে চারা রোপন করা ছাড়াও সবজির চারার ব্যবসা করে। শীত আসার আগেই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে চাষিরা এ খানে সবজি চারা ক্রয় করতে আসে। যে কারণে প্রতিটি কৃষক এখানে চারা উৎপাদন করে থাকেন। কিন্তু গত সপ্তাহ খানেক ধরে বিরমহীন বৃষ্টিতে মাঠের অধিকাংশ সবজি খেতের চারা নষ্ট হয়ে গেছে।

চারা উৎপাদনকারী নেসারউদ্দিন জানান, সে নিজে প্রতি বছর চার বিঘা জমিতে সবজি উৎপাদন করেন। তাছাড়া তিনি সবজির চারার ব্যবসাও করে থাকেন দীর্ঘদিন ধরে। এ বছর তিনি প্রায় ৫ কাঠা জমিতে ফুলকপির বীজ রোপন করেছে। এক কাঠার চারায় তার চার বিঘা জমিতে রোপন করা যাবে। আর বাকি চার কাঠা জমির চারা তিনি বিক্রি করবেন বলে জানান।

যশোর জেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমদাদ হোসেন বলেন, “যশোরের ৮টি উপজেলায় এবছর ১১ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। তবে গত সপ্তাহ জুড়ে বিরামহীনভাবে বৃষ্টির কারণে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। তবে কী পরিমাণ ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে সেটি এখনো নিশ্চিত করে বলতে পারেননি তিনি। তবে তিনি শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘‘এ বৃষ্টির কারণে এ বছর শীতকালীন সবজির দাম অনেক অংশ বৃদ্ধি পাবে।”

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/এমএস