রণজিৎ রাজ, টাঙ্গাইল থেকে: চলতি বন্যায় টাঙ্গাইলের ৯টি উপজেলায় রোপা আমন, বোনা আমন ও কালিজিরা ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে এবং ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের লক্ষ্যে কৃষি বিভাগের পরামর্শে কৃষকরা বাড়ির উঠান ও উচু জায়গায় বীজতলা তৈরি করে রেখেছেন। জমি থেকে বন্যার পানি নেমে গেলেই কৃষকরা পুনরায় নতুন করে ধানের চারা লাগাবেন।
জানা গেছে, উজানের ঢল ও টানা বৃষ্টিপাতের কারণে টাঙ্গাইলের নয় উপজেলায় এবারের বন্যার কবলে পরে। দ্বিতীয় দফায় বন্যার পানিতে তলিয়ে যায় কৃষকের ফসলি জমি। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় ব্রিধান ৪৯, বিআর ১১ ও বিনাশাইল আগাম জাতের রোপা আমন, বোনা আমন ও সুগন্ধী ধানের।
সদ্য লাগানো ধানের চারা বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। স্থানীয় কৃষি বিভাগও চিন্তিত হয়ে পড়েছেন ধানের লক্ষমাত্রা অর্জন নিয়ে। পরে কৃষি বিভাগ কৃষকদের পরামর্শ দেন বাড়ির উঠান ও উচু স্থানে বীজতলা তৈরির।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার দাইন্যা ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ওসমান গনি জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের নিজেদের বাড়ির উঠান ও উচু স্থানে ব্রিধান ৪৬, বিআর ১১ ও ২২ এবং কালিজিরার লেট জাতের ধানের বীজতলা তৈরির পরামর্শ দেয়া হয়। এ জাতের ধান দেরিতে রোপন করলেও অল্প সময়েই ফসল ঘরে তোলা যায়। ব্যতিক্রমী এ পরামর্শ পেয়ে প্রাণ ফিরে পান কৃষকরা।
তারা একবুক আশা নিয়ে নিজেদের বাড়ির উঠান ও উচু স্থানে বীজতলা তৈরি করেন। স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তাদের সার্বক্ষণিক তৎপরতায় দ্রুত বেড়ে উঠছে এসব বীজতলা। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে কৃষকরা আবারো নেমে পড়বেন ধান আবাদে।
টাঙ্গাইল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবু আদনান জানান, জেলায় চলতি মৌসুমে ৩২ হাজার ৩৪৫ হেক্টর জমিতে বোনা আমন রোপন করা হয়েছিল। এর মধ্যে বন্যায় ক্ষতি হয়েছে ৫ হাজার ৩৯০ হেক্টর। এছাড়া ৮১ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন রোপন করা হয়েছিল। বন্যায় ক্ষতি হয়েছে ১৪ হাজার ৫০০ হেক্টর। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। বন্যার পর এসব কৃষকদের পুর্নবাসন করা হবে।
ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/এম