যে খাবার ছয় প্রকার খাদ্য উপাদান পরিমিত পরিমাণে সরবরাহ করে তাকে সুষম খাবার বলা হয়। শ্বেতসার বা শর্করা, আমিষ বা প্রোটিন, চর্বি বা তেল, খাদ্যপ্রাণ বা ভিটামিন, খনিজ লবণ ও পানি হলো আবশ্যকীয় খাদ্য উপাদান।
সুষম খাদ্য:
০ শরীরে শক্তি ও কাজ করার ক্ষমতা দেয়;
০ শরীরের বৃদ্ধি ও ক্ষয়পূরণ করে;
০ শরীরকে রোগমুক্ত রাখাতে সাহায্য করে।
গবাদিপশুর খাদ্য প্রধানত দুই ভাগে বিভক্ত ১. ছোবড়া বা আঁশজাতীয় খাদ্য। ২. দানাদার খাদ্য।
ছোবড়া বা আঁশওয়ালা খাদ্য
এ প্রকার গোখাদ্যে আয়তনের তুলনায় পুষ্টি উপাদন তুলনামূলক কম থাকে। এটি প্রধানত শ্বেতসার বা শর্করা জাতীয় খাদ্য উপাদান সরবরাহ করে। এর পাচ্যতা কম তবে জাবর কাটা প্রাণীদের জীবনধারণ, বৃদ্ধি ও উৎপাদনের জন্য এ খাদ্যর পরিমিত সরবরাহ প্রয়োজন। ছোবড়াজাতীয় গোখাদ্যগুলো হলো লিগুম বা শিমজাতীয় কচি ঘাসের খড়, নাড়া, খড় বা বিচালি, গোচারণ ঘাস এবং রক্ষত ঘাস।
দানাদার খাদ্য
যেসব খাদ্যে আয়তনের তুলনায় খাদ্যমান অপেক্ষাকৃত বেশি এবং সহজপাচ্য তাকে দানাদার খাদ্য বলা হয়। দানাদার গোখাদ্যগুলো হলো চালের কুঁড়া গমের ভুসি, ভুট্টা, বিভিন্ন প্রকার খৈল, কলাই, ছোলা, খেসারি, সয়াবিন ও শুকনো মাছের গুঁড়া এসব। আমিষের পরিমাণ ভিত্তিতে দানাদার খাদ্যগুলো তিন ভাগে করা যায়। ক. কম আমিষ সমৃদ্ধ খাদ্য যেমন- কুঁড়া, ভুসি (৫-১৫% আমিষ)। খ. মধ্যম আমিষসমৃদ্ধ খাদ্য যেমন- খৈল, কলাই, ছোলা ২০-২৫% আমিষ। গ. উচ্চ আমিষ সমৃদ্ধ খাদ্য শুকনো মাছের গুঁড়া, কসাই খানার মাংসের কণা, রক্তের গুঁড়া ৩৫-৪৫% আমিষ।
বাছুরের খাদ্য
বাছুর প্রসবের পরেই বাছুরকে তার মায়ের প্রথম দুধ অর্থাৎ কাচলা দুধ খাওয়াতে হবে। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণ রোগ প্রতিরোধক উপাদান রয়েছে। বাছুরের প্রধান খাদ্য দুধ কারণ জন্মের পর পর প্রথম সপ্তাহে বাছুর দুধ ছাড়া কিছুই খেতে পারে না। বাছুরের ওজনের প্রতি ১০ কেজির জন্য ১ কেজি দুধ প্রতিদিন খেতে দিতে হবে। গরুর বাচ্চা ৩০ কেজির ওপর ওজন হলেও ৩ কেজি দুধ সরবরাহ করতে হবে। দুই সপ্তাহ থেকে বাছুরকে সামান্য কিছু ঘাস ও দানাদার খাবার দেয়া যেতে পারে। বাছুরের বয়স ৭-৮ মাস হওয়ার পরে যথেষ্ট পরিমাণে আমিষ জাতীয় দানাদার খাদ্য দিতে হবে। প্রথমত, ছোবড়াজাতীয় খাদ্য না দিয়ে সহজপাচ্য সবুজ ঘাস দিতে হবে। বাছুরের শারীরিক বৃদ্ধি প্রধানত পরিপাকযোগ্য আমিষ সরবরাহের ওপর নির্ভরশীল। বয়স বাড়ার সাথে খাদ্যের পরিমাণও বাড়বে।
দুধালো গাভীর খাদ্য
সাধারণত দুধালো গাভীর প্রতি ১০০ কেজির জন্য ২ কেজি খড় সরবরাহ করতে হয়। ১ কেজি খড় ৩ কেজি তাজা সবুজ ঘাসের সমতুল্য। গাভীকে প্রতি ১০০ কেজি ওজনের জন্য ১ কেজি শুকনো আঁশযুক্ত খাদ্য (খড়) এবং ৩ কেজি তাজা সবুজ আঁশযুক্ত খাদ্য ঘাস দেয়া প্রয়োজন। অর্থাৎ ৫০০ কেজি ওজনের একটি দুগ্ধবতী গাভীকে ৫ কেজি শুকনো খড় এবং ১৫ কেজি সবুজ ঘাস সরবরাহ করতে হবে। দানাদার খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা দুধ উৎপাদনের ওপর নির্ভরশীল। দুধ উৎপাদনের প্রথম ৩ কেজির জন্য প্রয়োজন ৩ কেজি মিশ্র দানাদার খাদ্য এবং পরবর্তী প্রতি ৩ কেজির জন্য প্রয়োজন ১ কেজি মিশ্র দানাদার খাদ্য। অবশ্য যদি দুধে স্নেহ পদার্থের পরিমাণ শতকরা ৪ ভাগ বা তার নিচে থাকে। দুধে স্নেহ পদার্থের পরিমাণ শতকরা ৪ ভাগের বেশি হলে প্রতি ৩ কেজি দুধের পরিবর্তে প্রতি আড়াই কেজি দুধের জন্য ১ কেজি মিশ্র দানাদার খাদ্যের প্রয়োজন হয়। এ হিসাবে দেশি ও সংকর জাতের গাভীকে সর্বোচ্চ ৬ কেজি এবং বিশুদ্ধ বিদেশি গাভীকে সর্বোচ্চ ৮ কেজি মিশ্র দানাদার খাদ্য সরবরাহ করতে হয়।
লবণের চাহিদা পূরণের জন্য গাভীকে মাথাপিছু প্রতিদিন ৬০ গ্রাম খাওয়ার লবণ এবং ৬০ গ্রাম জীবাণুমুক্ত হাড়ের গুঁড়া খাওয়াতে হবে। খাবারে সরবরাহকৃত সবুজ ঘাস গাভীর ‘এ’ ভিটামিনের চাহিদা মেটাতে পারে। ‘বি’ ভিটামিন গবাদিপশু স্বয়ং প্রক্রিয়ার প্রস্তুত করতে পারে। গাভীকে প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে হবে। গবাদিপশুকে যেসব কাঁচা ঘাস খাওয়ানো হয় তার মধ্যে নেপিয়ার ও পারা ঘাস অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক ও উপকারী ঘাসের উৎপাদন পদ্ধতি।
নেপিয়ার ঘাস
গবাদিপশুর প্রধান খাদ্য ঘাস। পুষ্টিকর ঘাসে দেহ গঠনকারী আমিষ উপাদানসহ প্রায় সর্বপ্রকার উপাদন মজুদ থাকে। উন্নতজাতের অধিক ফলনশীল ঘাসের মধ্যে নেপিয়ার উল্লেখযোগ্য। খাদ্যমান বেশি থাকায় গবাদিপশুর জন্য এ ঘাস বেশ উপাদেয় ও পুষ্টিকর।
আমাদের দেশে বর্তমানে খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের জন্য পতিত জমিও ক্রমে খাদ্যশস্য চাষের আওতায় আনা হচ্ছে। ফলে গবাদিপশু আজ চরম খাদ্য সংকটের সম্মুখীন। এ সংকট সমাধানের জন্য সীমিত জমিতে অধিক গোখাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর জন্য উন্নতজাতের ঘাস চাষ করা আবশ্যক। উন্নতমানের ঘাস চাষ করা হলে গবাদিপশুর খাদ্য সমস্যা অনেক কমে যাবে। ফলে মানুষের খাদ্য উৎপাদনের লক্ষও বাধাগ্রস্ত হবে না। নেপিয়ার উন্নতজাতের ঘাস। এ ঘাসের চাষ পদ্ধতি ও গুণাগুণ সম্পর্কে কৃষক অবগত হলে এ ঘাসের চাষে তারা উৎসাহিত হবেন।
নেপিয়ার ঘাস বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ। এটি গ্রামিণি পরিবারের অন্তর্গত। এ ঘাস একবার চাষ করার পর কয়েক বছর ধরে পাওয়া যায়। এর পাতা ও কাণ্ড দেখতে কিছুটা আখ গাছের মতো। কা- গোলাকৃতি ও সবুজ বর্ণের। এ ঘাস সব ধরনের মাটিতেই জন্মে। তবে বেলে দোআঁশ মাটিতে এর ফলন সবচেয়ে বেশি। এ ঘাসের জন্য উঁচু জমি ভালো। বন্যাকবলিত জমি এ ঘাস চাষের জন্য অনুপযুক্ত। বাংলাদেশের আবহাওয়া নেপিয়ার ঘাস চাষের জন্য খুবই উপযুক্ত।
চাষ পদ্ধতি: এ ঘাস চাষের জন্য জমিতে ৪-৫টি চাষ দিতে হয় এবং মই দিয়ে আগাছামুক্ত করার পর রোপণ করতে হয়। দুই চোখ বিশিষ্ট কাণ্ডাংশ অথবা মূলসহ কাণ্ড চারার জন্য ব্যবহৃত হয়। সারা বর্ষা মৌসুমেই এ ঘাস লাগানো যায়। তবে বর্ষার শুরুতেই রোপণের উৎকৃষ্ট সময়। বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ মাসে প্রথম বৃষ্টির পর জমিতে রোপণ করা হলে প্রথম বছরেই ৩-৪ বার ঘাস কাটা যেতে পারে। ২ চোখসহ কাণ্ডাংশ অথবা মূলসহ কাণ্ড সারিবদ্ধভাবে লাগাতে হয়। এক লাইন থেকে অন্য লাইনের দূরত্ব ২-৩ ফুট হবে এবং এক চারা থেকে অন্য চারার দূরত্ব দেড় ফুট হবে। মাটিতে রস না থাকলে চারা লাগানোর পর পানি সেচের ব্যবস্থা করতে হবে। সাধারণত প্রতি একর জমি রোপণের জন্য ৭-৮ হাজার চারা বা কাটিংয়ের প্রয়োজন হয়।
সার প্রয়োগ ও পানি সেচ : ভালো ফলন ও গাছের বৃদ্ধির জন্য সার ও পানির প্রয়োজন। বর্ষা মৌসুমে পানি সেচের প্রয়োজন হয় না। কিন্তু অন্য সময়ে সাধারণত পানির সেচের প্রয়োজন হয়।
জমি প্রস্তুতের সময় : ১.৫০-২.০০ টন গোবর প্রতি একরে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। এ ছাড়া রাসায়নিক সারের মধ্যে ইউরিয়া, টিএসপি ও এমওপি সার ব্যবহার করা হয়।
সাভার ডেইরি ফার্মের রিপোর্ট অনুযায়ী দেখা যায়, বছরে যথাক্রমে ১১২, ৮৯ ও ৪০ কেজি নাইট্রোজেন, ফসফরাস ও পটাশ প্রতি একরে প্রয়োগ করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। ঘাস দুইবার কাটার পর একরপ্রতি ৫০ কেজি ইউরিয়া জমিতে ছিটিয়ে দিলে অধিক ফলন পাওয়া যায়। সার ছিটানোর আগে দুই সারির মাঝের জায়গায় লাঙল অথবা কোদাল দিয়ে আলগা করে দিতে হবে।
ঘাসের ব্যবহার ও ফলন : নেপিয়ার ঘাস কেটে খাওয়ানো সবচেয়ে ভালো। এতে অপচয় কম হয় এবং পরবর্তী পর্যায়ে ফলন বেড়ে যায়। ঘাস লাগানোর ৩ মাস পরে কাটার উপযোগী হয়। ৩ সপ্তাহ পর পর ঘাস কাটা যায়। প্রথম বছর ফলন কিছুটা কম হয় কিন্তু পরবর্তী ২-৩ বছর পর্যন্ত ফলন বেড়ে যায়। বছরে সাধারণত ৮-১০ বার ঘাস কাটা যায় এবং গড়ে প্রতি একরে বছরে ৩০-৪০ মেট্রিক টন কাঁচার ঘাস পাওয়া সম্ভব। কাণ্ড ঘাসের গোড়ার সাথে রেখে কাটা পরবর্তী ফলনের জন্য ভালো।
জমি থেকে কেটে এ ঘাস সরাসরি গবাদিপশুকে খাওয়ানো যায়। এ ছাড়া ২-৩ ইঞ্চি করে কেটে খড়ের সাথে মিশিয়েও খাওয়ানো যায়। নেপিয়ার ঘাসে শতকরা ৭ ভাগ প্রোটিন আছে। নেপিয়ার ঘাস শুকিয়ে সংরক্ষণ করা সুবিধাজনক নয়। তবে কাঁচা ঘাস সাইলেজ করে শুকনো মৌসুমে সংরক্ষণ করা যায়।
চারাপ্রাপ্তির স্থান
০ বাংলাদেশ সরকারের গো-উন্নয়ন ও দুগ্ধখামারগুলো- গো-উন্নয়ন ও দুগ্ধখামার, সাভার, ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম, বগুড়া;
০ সব জেলা কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র;
০ সব উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়।
নেপিয়ার ঘাস চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে গ্রামের চাষিদের ভালোভাবে জানার সুযোগ দিতে হবে। এজন্য শুধু প্রচারণাই যথেষ্ট নয়। চাষিরা যাতে ঘাসের কাটিং বা চারা সংগ্রহ করতে পারে সেজন্য প্রতিটি উপজেলাতে ঘাসের চারা বিতরণের ব্যবস্থা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সবাইকে উৎসাহিত করা এবং নেপিয়ার ঘাস চাষের প্রচলন করা নিঃসন্দেহে লাভজনক হবে।
পারা ঘাস
পারা উন্নতমানের ঘাস এবং এর চাষ করাও সহজ। দেশের অধিকাংশ কৃষক উন্নত জাতের ঘাস সম্পর্কে অবগত নন। এ ঘাসের চাষ পদ্ধতি ও গুণাগুণ সম্পর্কে তারা অবগত হলে আরও উৎসাহিত হবেন। পারা ঘাস দক্ষিণ আমেরিকার ঘাস কিন্তু বর্তমানে দেশের সর্বত্রই এর চাষ হয়ে থাকে। পারা একটি স্থায়ী জাতের অর্থাৎ একবার চাষ করলে কয়েক বছর ধরে ফসল পাওয়া যায়। জলীয় ও আর্দ্র অঞ্চলে এ ঘাস ভালো হয় তাই আমাদের দেশের আবহাওয়ায় এটি খুবই উপযোগী। এ ঘাস দেখতে লতার মতো, কাণ্ড গোলাকৃতি ও সবুজ বর্ণের। সারা গায়ে প্রচুর সূক্ষ্ম লোম আছে।
উঁচু নিচু সব মাটি-জমিতেই জন্মে। এমনকি আবদ্ধ পানি ও লোনা মাটিতেও এ ঘাস জন্মানো সম্ভব। বাংলাদেশের কোনো কোনো অঞ্চলের জন্য এ ঘাস চাষ খুবই সম্ভাবনাপূর্ণ। আম কাঁঠালের বাগানের ফাঁকে ফাঁকে, রাস্তার দুই পাশে সেঁতসেঁত জায়গায়, জলাবদ্ধ স্থানে, এমনকি সমুদ্র উপকূলবর্তী জেলাগুলোর লবণাক্ত জমিতে যেখানে সাধারণত অন্য ফসলের চাষ হয় না, সেসব জমিতেও পারা ঘাস স্বার্থকভাবে চাষ করা যায। অবশ্য শীতকালে অধিক ঠাণ্ডায় এ ঘাসের উৎপাদন কমে যায়।
ঘাস লাগানো : বৈশাখ থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত এ ঘাস লাগানো যায়। তবে গ্রীষ্মের আগে জমি চাষ দিয়ে প্রস্তুত করে রাখতে হবে। গ্রীষ্মে এক পশলা বৃষ্টি হলেই এ ঘাস লাগানো যায়। এ ঘাস লাইন করে ১.৫x১.৫ ফুট ব্যবধানে রোপণ করতে হয়। তবে এক লাইন হতে অন্য লাইনের দূরত্ব তেমন ধরা বাধা নিয়ম নেই। কারণ এ ঘাস অল্প সময়ে সব জমিতে বিস্তার লাভ করে। কাণ্ডাংশগুলো মাটির সাথে ৬০ ডিগ্রি কোণ করে লাগালে ভালো ফল পাওয়া যায়। ঘাসের কাণ্ড অথবা শিকড়যুক্ত ঘাসের গোড়া চারার জন্য ব্যবহৃত হয়। কাণ্ড ছেদনের সময় লক্ষ রাখতে হবে প্রতি খণ্ডে যেন ২-৩টি গিঁট থাকে।
পারা ঘাসের চাষের জন্য বিশেষ কোনো যত্ন নিলেও চলে। তবে ভালো ফসলের জন্য জমি প্রস্তুতের সময় প্রতি একরে ৪ টন গোবর অথবা কম্পোস্ট সার এবং ৩৫ কেজি টিএসপি প্রয়োগ করতে হবে। ঘাস লাগানোর ২-৩ সপ্তাহ পর একরপ্রতি ৩৫ কেজি ইউরিয়া সার দিতে হয়। প্রতিবার ঘাস কাটার পর একরপ্রতি ৩৫ কেজি ইউরিয়া সার দিলে ভালো ফলন আসে।
সাভার ডেইরি ফার্মের রিপোর্ট অনুসারে একরপ্রতি বছরে ১১২ কেজি নাইট্রোজেন, ৮০ কেজি ফসফরাস এবং ৪০ কেজি পটাশ প্রয়োগ করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। ময়লাযুক্ত পানি এবং গোয়াল ঘর ধোয়া পানি ও আবর্জনা এ ঘাসের জমিতে প্রয়োগ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়।
বাংলাদেশের চাষিদের কাছে এ ঘাস চাষ নতুন বিষয়। তাই ঘাসের চাষ পদ্ধতি এবং গুণাগুণ সম্পর্কে চাষিদের ভালোভাবে জানার সুযোগ দিতে হবে। এজন্য ব্যাপক প্রচারের প্রয়োজন।
যেসব স্থানে চারা বা কাটিং ও চাষ পদ্ধতির তথ্য পাওয়া যায়-
০ বাংলাদেশ সরকারের সব গো-উন্নয়ন ও দুগ্ধখামারগুলো। গো-উন্নয়ন ও দুগ্ধখামার, সাভার ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম ও বগুড়া;
০ সব জেলা কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র; সব জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়; সব জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়; বন বিভাগ ও নার্সারিগুলো;
চারা কাটিংস পাওয়া সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আগেই যোগাযোগ করে নেয়া ভালো। আজকাল এ ঘাস বিক্রয় করেও লাভবান হওয়া যায়।
ঘাসের ব্যবহার ও ফলন : পারা ঘাস দ্রুতবর্ধনশীল ঘাস। যখন ২৪-৩২ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয় তখনই এ ঘাস কাটার উপযুক্ত সময়। ঘাস লাগানোর ৩ মাস পরই কাটার উপযুক্ত হয় এবং এরপর প্রায় প্রতি মাসেই ঘাস কাটা যায়। বছরের প্রায় ৮-১০ বার ঘাস কাটা যায় এবং প্রতি একরে বছরে ২০-২৫ টন কাঁচার ঘাস পাওয়া সম্ভব। এ ঘাস কেটে খাওয়ানো যায়। এ ঘাসে শতকরা ১২ ভাগ আমিষ রয়েছে। এটি একটি সুস্বাদু ঘাস। গবাদিপশুর কাছে এ ঘাস খুবই পছন্দনীয়। সর্বশেষে বলা যায়, সংশ্লিষ্ট সবাইকে উৎসাহিত করা এবং এসব উন্নতমানের চাষের প্রচলন করা আমাদের জন্য নিঃসন্দেহে লাভজনক হবে।
রাকিবুল আলম মিরাজ, স্বপ্ননীড়, লন্ডনঘাট, চাঁদপুর (কৃষি কথা)
ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/এম