ঝালকাঠি : জেলায় চলতি আমন মৌসুমে ৬০টি স্থানে বন্যা সহিষ্ণু ভাসমান বীজতলা তৈরি করে সফলতা পেয়েছেন প্রান্তিক কৃষকরা।
কলার ভেলায় তৈরি এসব বীজতলায় সোনালি ধানের স্বপ্ন বুনছেন চাষিরা। বন্যা এলাকার কৃষকরা যেন রোপা আমনের চাষ করতে পারে এজন্য এসব বীজতলায় উৎপাদিত চারা বিনা মূল্যে চাষিদের দেয়া হচ্ছে। বীজতলা তৈরির খরচ বহন করেছে কৃষি বিভাগ।
ঝালকাঠি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক শেখ আবু বকর সিদ্দিক জানান, এ বীজতলা অতিবৃষ্টি ও বন্যায় ডোবে না। সেচের প্রয়োজন পড়ে না। কীটনাশক ছিটাতে হয় না। এমনকি সারেরও প্রয়োজন পড়ে না। এমন বীজতলা এত দিন ছিল কৃষকদের স্বপ্নে। সেই স্বপ্নের বীজতলা বাস্তবেই তৈরি করেছেন কৃষকরা। দু’একটি নয়, এমন অর্ধশত বীজতলা তৈরি হয়েছে ঝালকাঠিতে। বন্যা ও বৃষ্টির জন্য যেসব এলাকার বীজতলা পানিতে ডুবে গিয়েছিল, সেসব জায়গায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নিজেদের উদ্যোগে কলাগাছের ভেলায় ভাসমান বীজতলা তৈরি করে চারা উৎপাদনের উদ্যোগ নেয়। এ চারা কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে।
কৃষি বিভাগ বলছে, দক্ষিণাঞ্চলে প্রতিবছরই বন্যা, অতিবৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে বীজতলা নষ্ট হয়। তাই যথাসময়ে ফসল উৎপাদনে বিলম্ব হয়ে থাকে। একই সঙ্গে ফসলের ঘাটতি হয়। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় প্রান্তিক কৃষকরা। সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষকদের ভাসমান বীজতলা তৈরি করতে এ বছর কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হয়। অতিবৃষ্টির কারণে বীজতলার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে জেলার ৬০টি স্থানে ভাসমান বীজতলা তেরি করা হয়। সদর উপজেলায় ১৫টি, নলছিটিতে আটটি, রাজাপুরে ১২টি এবং কাঁঠালিয়ায় ২৫টি।
একেকটি ভাসমান বীজতলায় এক কেজি অঙ্কুরিত বীজ ছিটানো হয়েছিল। তাতে যে চারা জন্মে, তা এক বিঘা জমিতে রোপণ করা সম্ভব। পানির ওপর ভাসমান থাকার কারণে এরূপ বীজতলায় পানি সেচের দরকার হয়নি। ভাসমান বীজতলা তৈরির কারণে এ বছর জেলায় কোন বীজ সংকট দেখা দেয়নি বলে জানাল শেখ আবু বকর ছিদ্দিক।
আগামীতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করার জন্য কৃষকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।
ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/এম