আগাছানাশকের পরিচিতি ও আগাছার পরিবেশ বান্ধব দমন পদ্ধতি

1673

সিনজেনটা বাংলাদেশ লিমিটেড এর তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের যে সমস্ত আগাছানাশক বেশ পরিচিতি লাভ করেছে তার মধ্যে রিফিট ৫০০ ইসি, লগরান ৭৫ ডব্লিউজি, লেজার ১০ ডব্লিউপি, গ্রামোক্সোন ২০ এস এল ইত্যাদি অন্যতম।

আগাছানাশক ব্যবহার করে সহজেই আগাছা দমন করা যায়। এর পদ্ধতি অধিকতর কার্যকর ও সাশ্রয়ী হওয়ায় এ জনপ্রিয়তা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। আগাছানাশক ব্যবহারে কম সময়ে এবং কম খরচে বেশি পরিমান জমির আগাছা দমন করা যায়। তরল, দানাদার ও পাউডার এ তিন ধরনের আগাছানাশক বাজারে পাওয়া যায়।

এ মধ্যে তরল ও পাউডার জাতীয় আগাছানাশক নির্দিষ্ট পরিমান পানির সাথে মিশিয়ে নির্দিষ্ট পরিমান জমিতে স্প্রে মেশিন দিয়ে ছিটাতে হয় এবং দানাদার আগাছা নাশক সারের মতো জমিতে ছিটিয়ে ব্যবহার করা যায়।

প্রি-ইমারজেন্স আগাছানাশক ধান লাগানোর ৩-৬ দিনের মধ্যে এবং পোস্ট-ইমারজেন্স আগাছানাশক আগাছার বৃদ্ধি ও মৌসুমভেদে রোপন বা বপনের ১০-১৫ দিনের মধ্যে ব্যবহার করতে হয়। জমিতে কখন এটি ব্যবহার করতে হবে তা নির্ভর করে আগাছানাশকের উপাদানের উপর।
ধান রোপন বা বপনের ৩-৬ দিনের, মধ্যে জমিতে ১-৩ সেন্টিমিটার পানি থাকা অবস্থায় প্রি-ইমারজেন্স আগাছা নাশক, যেমন রিপিট ৫০০ ইসি, সুপারহিট ৫০০ ইসি, সুপারকিন ৫৩% ডব্লিউপি, টপস্টার ৮০ ডব্লিউপি, এইমকোর ৫ জি, একটিভার ২৫ ইসি ইত্যাদি প্রয়োগ করতে হয়। আর্লি পোস্ট ইমারজেন্স আগাছানাশকে জমিতে আগাছার বৃদ্ধি ১-২ পাতা বিশিষ্ট হলেই ব্যবহার করা যায়। যেমন সানরাইজ ১৫০ ডব্লিউজি, সিরিয়াস ১০ ডব্লিউপি ও সাথী ১০ ডব্লিউপি। নাবি বা লেট-পোস্ট ইমারজেন্স আগাছানাশক আগাছা যখন বড় হয়ে যায়, অর্থাৎ আগাছা যখন ৩-৪ পাতা বিশিষ্ট হয় তখন ব্যবহৃত হয়। েেযমন: ২-৪ ডি অ্যামাইন, এমসিপিএ ৫০০, এগ্রোজন এবং এইম ৪০ ডব্লিউপি। উল্লিখিত বিভিন্ন উপাদানের আগাছানাশক রোপণকৃত জমিতে প্রয়োগ করার পর সাধারণত আর আগাছা পরিষ্কার করার প্রয়োজন হয় না।

ভক্ষণকারী জীব, পোকামাকড়, ছত্রাক ও পরজীবির মাধ্যমে পরিবেশের কোন ক্ষতি না করে কোন স্থানের আগাছা দমন করাই হচ্ছে জৈবিক আগাছা দমন পদ্ধতি। কিছু কিছু অঞ্চলে সমন্বিত ধান হাঁস পদ্ধতি ব্যবহার করে জৈবিক আগাছা দমন করা সম্ভব হয়েছে। ধানের চারা রোপণের ৭-১৪ দিন পর ২০-২৫ দিন বয়সে হাঁসের বাচ্চা সারি করে লাগানো ধান ক্ষেতে অবমুক্ত করতে হয় এবং ধানের ফুল আসার আগে ধান ক্ষেত থেকে হাঁস উঠিয়ে নিতে হবে তাছাড়া সমন্বিত ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির মাধ্যমে আগাছা দমন করা যায়, যেমন আগাছামুক্ত পরিষ্কার বীজ ব্যবহার, ভালোভাবে জমি প্রস্তুত করা, বিশেষ ক্ষেত্রে নিড়ানি ব্যবহার করা, ব্রি-উইডার দিয়ে আগাছা পরিষ্কার করা ইত্যাদি।

লেখক:
কৃষিবিদ সুদীপ্ত চন্দ্র সিংহ।

ফার্মসএন্ডফার্মার/১০নভেম্বর২০২০