আসছে শীত, মুরগির খামারিরা এখনই সতর্ক হোন

412

বাংলাদেশে শীতের শুরুতে এবং শেষে পোল্ট্রি খামারীরা সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই দুই সময়ই দিন ও রাতের তাপমাত্রার মধ্যে ব্যাপক তারতম্য ঘটে। এই সময়ে দিনে প্রচন্ড গরম এবং রাতে হঠাৎ ঠান্ডা পরে যায়।

এছাড়াও আমাদের দেশে অন্যান্য দেশের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম শীত থাকায় শীতের শুরুতেই বিভিন্ন শীত প্রধান দেশ হতে পরিযায়ী পাখিরা আসতে শুরু করে। অনেক সময় তারা সাথে করে বিভিন্ন ধরনের পরজীবী, ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস এবং ফ্লু এর জীবানু নিয়ে আসে।
এইসব বিভিন্ন কারনে শীতের শুরু এবং শীতের শেষের দিকটায় বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় ফার্মে রোগ ব্যাধির সংক্রমণ বেশী দেখা যায়।
প্রতি বছরই অসংখ্য মুরগি, কোয়েল ও হাঁসের খামার শূণ্য হয়ে যেতে দেখছি শীতের শুরু এবং শেষে। আবারও আসছে শীত তাই এখনই সঠিক সময় সতর্ক হওয়ার।

শীতে পোল্ট্রি ফার্মে বিশেষ সতর্কতাঃ
২। এসময় লালন পালনের উদ্দেশ্যে হাট-বাজার হতে সবরকম হাঁস মুরগি ক্রয় হতে বিরত থাকুন।
৩। শেডের চারিপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে শেডের ভিতর ও বাহিরে ৩:১ অনুপাতে চুন+ব্লিচিং পাউডার প্রয়োগ করুন।
৪। অন্তত একদিন পর পর জীবানুনাশকের গ্রুপ পরবির্তন করে করে শেডের ভিতর এবং বাহিরে স্প্রে করুন।
৫। মেঝের লিটার সবসময় শুকনা ও ঝরঝরে রাখুন।
৬। দুই সপ্তাহ অন্তর অন্তর প্রতি ১০বর্গফুট জায়গার জন্য ২৫০গ্রাম হারে শুকনা চুন গুড়া করে লিটার উলট পালট করে মিশিয়ে দিন।
৭। শীত শুরু হওয়ার আগেই মুরগির জন্য- রানিক্ষেত, ফাউল কলেরা এবং হাঁসের জন্য- ডাক প্লেগ, ডাক কলেরা আর সম্ভব হলে হাঁস মুরগি সবার জন্যই বার্ড-ফ্লু ভ্যাক্সিন দিয়ে দিন।
৮। খামার এলাকায় কোনরকম প্রাণী যেন প্রবেশ না করতে পারে সেদিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিন।
৯। খামারে ভিজিটর নট এলাউড করুন।

১০। নিজে বায়ো সিকিউরিটি মেনে চলুন এবং খামার কর্মীদের এবিষয়ে প্রশিক্ষণ দিন।
১১। প্রয়োজন ছাড়া হুটহাট ঔষধ ও এন্টিবায়োটিক প্রয়োগ হতে বিরত থাকুন।

১২। সপ্তাহে ১-২ দিন ১লিটার পানিতে ০১গ্রাম পরিমাণ হলুদ গুড়ো ভাল করে মিশিয়ে ০১বেলা পাখিকে খেতে দিতে পারেন।
১৩। সপ্তাহে ১-২দিন ১লিটার পরিমাণ পানিতে ০১চা চামচ দেশী রসুন পেস্ট করে মিশিয়ে ১বেলা খাওয়াতে পারেন।
১৪। বিশুদ্ধ মধু সপ্তাহে ২দিন ১লিটার পরিমাণ পানিতে ০১চা চামচ করে ১বেলা খেতে দিতে পারেন।
১৫। বেশী শীতের সময় সকালে ও রাতে খাবার পানি অবশ্যই কুসুম গরম করে খেতে দিবেন।

১৬। হাঁস মুরগির প্রতি ১০০ কেজি খাবারের সাথে ১০০-২০০ গ্রাম হারে কালোজিরা, মেথি এবং আজওয়াইন মিশিয়ে খাওয়াতে পারেন।
১৭। শীতে মুরগির ঘর গরম রাখার ব্যবস্থা নিন। ঘর গরম রাখার ক্ষেত্রে গ্যাস ব্রুডার এবং ইনফ্রারেড হিটিং বাল্ব ব্যবহার করতে পারেন।
১৮। খামারে থাকা হাঁস-মুরগি গুলোর সুষম খাবার নিশ্চিত করুন। দূর্বল শরীরের যেকোন রোগ সহজেই বাসা বাঁধতে পারে।
শীতের জড়তা কাটিয়ে আপনার ফার্মে চীর বসন্ত লেগে থাকুক সেই প্রত্যাশা রইল।

ফার্মসএন্ডফার্মার/ ০৮ অক্টোবর ২০২১