কুঁচিয়া রপ্তানি হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে

788

PIRGASA-KUCHIA-1
দেশের বাজারে তেমন চাহিদা না থাকলেও বিদেশের বাজারে রয়েছে কুঁচিয়ার ব্যাপক চাহিদা। এই মাছ দেশের পাইকারি বাজারগুলোতে এখন বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি দরে। বগুড়ার বেশ কয়েকটি উপজেলা থেকে প্রতি সপ্তাহে গড়ে প্রায় ৪ হাজার কেজি কুঁচিয়া ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে।

জানা যায়, বগুড়ার সোনাতলা, সুখানপুকুর, আদমদীঘি ও বগুড়া সদরের বেশকিছু এলাকার বিভিন্ন মৎস্য খামার, পুকুর, হাওর, বিল, নদী-নালা থেকে কুঁচিয়া সংগ্রহ করা হচ্ছে। উল্লেখিত এলাকার আদিবাসি এবং হতদরিদ্ররা বড়শি বা হাত দিয়ে গর্তে থাকা কুঁচিয়া ধরে পাইকারদের কাছে বিক্রি করছে। প্রায় প্রতিদিনই কুঁচিয়া মাছ ধরা হলেও বছরের নভেম্বর থেকে জুন মাস পর্যন্ত কুঁচিয়া মাছ ধরার উপযুক্ত মৌসুম। প্রতিদিন একজন শিকারি গড়ে ৪ থেকে ৭ কেজি কুঁচিয়া মাছ ধরতে পারেন।

বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার ধুন্দার গ্রামের কুঁচিয়া মাছ শিকারি নিমাই চন্দ্র জানান, পুকুর অথবা জলাশয়ের ধারে ছোট ছোট গর্ত চিহ্নিত করে মোটা সুতার সঙ্গে বড়শি বেঁধে তার সঙ্গে কেঁচো অথবা ছোট ব্যাঙ লাগিয়ে গর্তের মধ্যে ফেলে একটু নাড়া দিলেই কুঁচিয়া বড়শিতে আটকে যায়। স্থানীয়ভাবে প্রতি কেজি কুঁচিয়া বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়। একই উপজেলার ইউসুবপুর গ্রামের রমেশ উরাও জানান, সকাল হলে ২/৩ জন করে একটি দলে বিভক্ত হয়ে কুঁচিয়া শিকার করতে বের হন। সারাদিনে গড়ে ৫ থেকে ৭ কেজি কুঁচিয়া শিকার করতে পারেন। দিন শেষে সংগ্রহকৃত কুঁচিয়াগুলো পাইকারদের হাতে তুলে দিয়ে ৬০০ থেকে ১০০০ টাকা আয় করতে পারেন। এই কুঁচিয়া কেনাবেচা করেই তাদের সংসার টিকে আছে।

ওমরপুর বাজারের আড়তদার রাশেদ খন্দকার ও সত্যেন সরকার জানান, তারা সরাসরি কুঁচিয়া বিদেশে পাঠাতে পারেন না। প্রতি সপ্তাহে ৯০০ কেজি থেকে ১২০০ কেজি পর্যন্ত এই মাছ ঢাকায় পাঠান। কয়েকদিন পর এই মাছ ২৫০০ থেকে ৩০০০ কেজি পর্যন্ত পাঠাতে পারবেন। ঢাকার আড়তদাররা কুঁচিয়া চীন, হংকং, ভারত, জাপানসহ বিশ্বের কয়েকটি দেশে রপ্তানি করেন। এসব দেশের এক শ্রেণির মানুষের প্রিয় খাদ্য কুঁচিয়া।

কুঁচিয়া মাছকে ঘিরে আদমদীঘি উপজেলায় ৩টি আড়ত গড়ে উঠেছে। আড়তগুলো থেকে প্রতি সপ্তাহে ২ হাজার কেজিরও বেশি মাছ ঢাকার পাইকারদের কাছে বিক্রি করা হয়। সান্তাহারের মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটে প্লাবনভূমি উপকেন্দ্রে কুঁচিয়ার চাষাবাদ নিয়ে গবেষণার কাজ চলছে।

ফার্মসএন্ডফার্মার/১২জানু২০২০