আসন্ন কোরবানির ঈদ আসতে আর মাত্র বাকি প্রায় দু’সপ্তাহ। মেহেরপুরের গরুর হাটগুলোতে বেশী গরু আমদানী হলেও ক্রেতার উপস্থিতি খুবই কম। এতে গরু খামারীরা এবার লোকসান গুনবে বলে আশঙ্কা করছেন। মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সবচেয়ে বৃহৎ বামন্দী গরুর হাট। এ হাটে প্রচুর পরিমাণ গরু আমদানি হলেও ক্রেতার উপস্থিতি খুবই কম। বিশ্বের সাথে বাংলাদেশেও করোনা বিস্তার হওয়ায় এমন পরিস্থিতি হচ্ছে বলে জানালেন একাধিক ক্রেতা- বিক্রেতারা।
এদিকে অনেক খামারীরা সারা বছর ধরে অনেক টাকা ব্যয় করে খামারে গরু লালন-পালন করে আসছেন। লাভের আশায় গরু হাটে নিয়ে আসলেও ক্রেতা না থাকায় লোকসানে গরু বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। সরেজমিনে দেখা যায় মেহেরপুর গরুর হাট ও গাংনীর বামন্দী গরুর হাটে গরুর আমাদানী ব্যাপক হলেও তেমন ক্রেতার দেখা মেলেনি। গত বছরগুলোতে ক্রেতার আনাগোনা লক্ষ্য করা গেছে চোখে পড়ার মতো। তবে এবার সাধারণ ক্রেতাদের ভীড় না থাকলেও জেলার বাইরের অনেক গরু (ব্যবসায়ী) ব্যাপারীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। সাধারণ ক্রেতাদের উপস্থিতি কম হওয়াই ব্যাপারীরা সুযোগ বুঝে কম দামে গরু ক্রয় করতে পারছেন বলে জানা গেছে।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা থেকে আসা এক বিক্রেতা জানান, গত বছর ৬মণ ওজনের গরু এই হাটে ১লক্ষ ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। কিন্তু এবছরে একই ওজনের গরুর দাম মাত্র ৮০ হাজার টাকা দর উঠেছে। এদিকে গাংনী উপজেলার গাঁড়াবাড়িয়া গ্রামের রমজান আলী কম দামে গরু ক্রয় করতে পেরে খুবই খুশি। তিনি বলেন গত বছর গরুর দাম অনেক বেশি ছিল। গত বছর যে গরু কিনতে দেড় লাখ টাকা লেগেছে। এবছর একই ধরণের গরু এবার ১লাখ ১০ হাজার টাকায় পাওয়া গেছে।
বামন্দী গরুর হাটের ইজারাদার নাসিরুদ্দিন জানান এবছর করোনার কারণে প্রথম দিকে হাট বন্ধ ছিল। সামনে ঈদ তাই সীমিত পরিসরে হাটের আয়োজন করা হয়েছে। যে কারণে ক্রেতা-বিক্রেতার উপস্থিতিও আগের তুলনায় অনেক কম হয়েছে। এবারে ইজারা আদায় অনেক কম হবে বলে তিনি দাবি করেন। এদিকে করোনা ভাইরাসের কারণে মাস্ক ব্যবহার ও দূরত্ব বজায় রাখার জন্য সরকারীভাবে নির্দেশনা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। মেহেরপুর জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার জাহাঙ্গীর আলম বলেন করোনা পরিস্থিতিতে খামারিদের মধ্যে কিছুটা হলেও ভীতি সঞ্চার হয়েছে। তবে খামারিরা যাতে পশু বিক্রয়ের জন্য সঠিকভাবে পরিবহন করতে পারে, যাতে কেউ হয়রানীর শিকার না হয় সে জন্য আমরা প্রশাসনের সাথে সম্মিলিতভাবে প্রচেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছি। করোনার জন্য আমরা প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
পশুর হাটে এবার সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে গরু-ছাগল ক্রয় বিক্রয়ের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। তিনি আরও জানান ইতোমধ্যে অনেক খামারি অনলাইনের মাধ্যমে গরু বিক্রি শুরু করেছেন। এ ক্ষেত্রে তিনি ক্রেতা- বিক্রেতা উভয়কেই অনলাইন মাধ্যমে ব্যবহারের আহবান জানান।
ফার্মসএন্ডফার্মার/১৮জুলাই২০