ছাগলকে সুস্থ সবল ও কর্মক্ষম রাখা এবং ছাগল থেকে সঠিক উৎপাদন পেতে হলে এদেরকে সঠিকভাবে যত্ন বা পরিচর্যা করতে হবে। পরিচর্যা বলতে সময়মতাে খাবার পরিবেশন করা , গর্ভবতী ছাগীর যত্ন , অসুস্থ ছাগলকে ওষুধ খাওয়ানাে , ঘরদোর পরিষ্কার – পরিচ্ছন্ন করা ইত্যাদি বুঝায়। প্রতিটি ছাগলের জন্য সাধারণ পরিচর্যা ছাড়াও গর্ভবতী ছাগী , নবজাতক বাচ্চা , প্রজননের পাঠা প্রভৃতির জন্য কিছু বিশেষ পরিচর্যার প্রয়ােজন হয়।
ছাগলকে সুস্থ ও কর্মক্ষম রাখতে আমাদের যা করা দরকার তা আমরা অনেকেরই জানি না। আমাদের দেশে বর্তমান সময়ে ছাগল পালন বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ছাগল পালনের মাধ্যমে অনেকেই তাদের দারিদ্রতাকে দূর করে হয়েছেন স্বাবলম্বী। ছাগল পালন করে লাভবান হওয়ার জন্য ছাগলকে সুস্থ ও কর্মক্ষম রাখার কোন বিকল্প নেই। চলুন তাহলে জেনে নেই ছাগলকে সুস্থ ও কর্মক্ষম রাখতে আমাদের যা করা দরকার সেই সম্পর্কে-
ছাগলকে সুস্থ ও কর্মক্ষম রাখতে আমাদের যা করা দরকারঃ
১। ছাগলকে প্রতিদিন সকালে ঘর থেকে বের করে কিংবা ঘরের আশেপাশের খোলা জায়গায় চরতে দিতে হবে। এতে ছাগল মুক্ত পরিবেশে থেকে বড় হতে পারবে এবং ছাগল শারীরিকভাবে শক্তিশালী হবে।
২। দিনের বেলাতে ছাগলের গায়ে যাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ সূর্যের আলো পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সূর্যের আলোতে ছাগলের শরীর সবল থাকে এবং প্রয়োজনীয় ভিটামিন ডি এর অভাব পূরণ হয়।
৩। ছাগলকে ঘর থেকে বের করার পর ঘরকে ভালোভাবে ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করে দিতে হবে। এতে করে ঘরে কোন জীবাণু থাকলে তা মুক্ত হয়ে যাবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে যাতে পানি জমাট বেধে না থাকে।
৪। পালিত ছাগলগুলোকে নিয়মিত সুষম খাবার সরবরাহ করতে হবে। সময়মতো ছাগলগুলোকে সুষম খাদ্য প্রদান করলে এরা সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে খুব দ্রুত বেড়ে উঠবে।
৫। প্রতিটি ছাগলকে আলাদাভাবে দানাদার খাদ্য সরবরাহ করতে হবে। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর খাবার দিতে হবে। পাতাসহ ডাল ঝুলিয়ে সরবরাহ করলে ভালো হয়।
৬। ছাগলের শরীর নিয়মিত ব্রাশ দিয়ে ঘষে পরিষ্কার করতে হবে। এতে লমের ভিতরের ময়লা বেরিয়ে আসবে এবং রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া বৃদ্ধি পাবে। নিয়মিত ব্রাশ করলে লোম উজ্জ্বল দেখাবে ও চামড়ার মান বৃদ্ধি পাবে।
৭। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে দুগ্ধবতী ছাগীর দুধ দোহন করতে হবে। দুধ দোহনের সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে।
৮। কোন ছাগল অসুস্থ হয়েছে কিনা তা নিয়মিত লক্ষ্য রাখতে হবে। যদি কোন ছাগলের মধ্যে অসুস্থতার লক্ষণ দেখা গেলে সঙ্গে সঙ্গে তাকে পৃথক করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।
৯। পালিত ছাগলগুলোকে নিয়মিত কৃমিনাশক ওষুধ খাওয়াতে হবে ও টিকা প্রদান করতে হবে। এতে করে ছাগলগুলো শারীরিকভাবে সুস্থ হয়ে বেড়ে উঠবে এবং বেশি উৎপাদনশীল হবে।