ঠাকুরগাঁওয়ে গম কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত কৃষক

91

ঠাকুরগাঁওয়ের গম চাষ করে মুখে হাসি ফুটেছে চাষিদের। গত ৬ বছরে গমের দাম ভালো না পেলেও এবারের চিত্র ভিন্ন। প্রত্যাশা অনুযায়ী দাম পাওয়া তাদের খুশির কারণ। এখন গম কাটা ও মাড়াইয়ের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলায় এ মৌসুমে গম আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৪৪ হাজার ৬৯৯ হেক্টর। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১ লাখ ৮৫ হাজার ৫০১ মেট্রিক টন। আবাদ হয়েছে ৩৬ হাজার ৫৬৭ হেক্টর জমিতে; যা গত বছরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৭ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে। যার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১ লাখ ৯৪ হাজার ৭১ মেট্রিক টন। আবাদ হয়েছিল ৪৫ হাজার ১৯২ হেক্টর জমিতে।

ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন উপজেলার বিভিন্ন জাতের গম যেমন বারি গম-৩০, ও ৩৩ জাতের গম আবাদ করেছে কৃষকরা। তাছাড়া গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আওতায় প্রদর্শনীর মাধ্যমে অনেক জমিতে গম আবাদ হয়েছে।

সরেজমিন ঠাকুরগাঁও জেলার পাঁচটি উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, চৈত্র মাসের শুরু থেকে গম কাটা-মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন কৃষকরা। প্রতি বস্তা গম বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ২০০ থেকে ৩ হাজার ৩০০ টাকা।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আখানগর ইউনিয়নের গ্রামের কৃষক বদিরুল ইসলাম জানান, তিনি গত বছর সাড়ে ৬ বিঘা জমিতে গম আবাদ করেছিলেন। ওই বছর গম মাড়াই করার পর গমের ফলন ও দাম কম পাওয়ায় এ বছর ৪ বিঘা জমিতে গম আবাদ করেছেন। গত বছর কৃষকের কাছ থেকে গম কিনে ব্যবসায়ীরা লাভবান হয়েছেন। তাই এবার আমরা ভালো দাম আশা করছি।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ভেলাজান গ্রামের কৃষক হাকিম বলেন, প্রায় ৫ বিঘা জমিতে গম আবাদ করছি। প্রতি বস্তা গম বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৭০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা। ধারণা করছি, প্রতি বিঘায় গম ১৫-২০ মণ হবে। এবারের মতো গমের দাম থাকলে গম আবাদ করে লাভ হবে।

সদর উপজেলার দেহন গ্রামের কৃষক মো. আলম জানান, এবার ৬ একর জমিতে ৩৩ বারি গমের জাত রোপণ গম আবাদ করছি। গম কাটা ও মাড়ার পর প্রতি বিঘায় ১৫ মণ করে গম পেয়েছি। বাজারে প্রতি মণ গম ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আশা করি লাভবার হবে।

সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন জানান, কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়া; তাই এবার গমের ফলন বাম্পার হয়েছে।

ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, এ জেলায় বেশি পরিমাণ জমিতে কৃষকরা গম আবাদ করে থাকে। গমের আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার গমের ভালো ফলন হয়েছে।