সর্বশেষ প্রযুক্তি কৃষকদের কাছে পৌঁছানোর ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা

302

কৃষি

রংপুর: কৃষি বিশেষজ্ঞরা শনিবার দিনাজপুরে আয়োজিত দিনব্যাপী এক আঞ্চলিক কর্মশালায় পরিবর্তিত জলবায়ু পরিস্থিতিতে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি অব্যাহত রেখে টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনের লক্ষ্যে গবেষণা প্রতিষ্ঠান হতে প্রাপ্ত সর্বশেষ প্রযুক্তি কৃষক পর্যায়ে পেীঁছানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।

তারা মাঠ পর্যায়ে কর্মরত কৃষি কর্মকর্তাদের বোরো ও আউশ ফসল আবাদের ন্যায় নির্বিঘ্নে আমন আবাদের জন্য সব ধরণের প্রস্তুতি গ্রহণের পাশাপাশি খরা ও জলমগ্নতা বিবেচনায় রেখে স্বল্প মেয়াদী, সুগন্ধি ও নাবীসহ এলাকাভিত্তিক জাত নির্বাচনে কৃষকদের সহায়তা করতে বলেছেন। কৃষি কর্মকর্তাদের তারা আমনের বীজতলা তৈরী থেকে শুরু করে ঘরে ফসল তোলা পর্যন্ত সার্বক্ষণিক কৃষকদেরকে সহায়তা করার পরামর্শ দিয়েছেন।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)-এর রংপুর আঞ্চলিক কার্যালয় দিনাজপুর ব্রাক লার্নিং সেন্টারে রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলে নির্বিঘ্নে আমন ধানের চাষ ও ফলন বৃদ্ধিতে করণীয় শীর্ষক উক্ত আঞ্চলিক কর্মশালা আয়োজন করে।

কর্মশালায় বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) এর মহাপরিচালক ড. মো. শাজাহান কবীর এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) এর মহাপরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ মহসীন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সরেজমিন উইং এর পরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. আবদুর মুঈদ ও ব্রি’র পরিচালক ড. মো. আনছার আলী।

অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন দিনাজপুরের নসিপুরস্থ গম গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক কৃষিবিদ ড. নরেশ দেব বর্মা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রংপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মো. শাহ আলম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর দিনাজপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মো. আব্দুল ওয়াজেদ প্রমুখ।

কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্রি’র রংপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কৃষিবিদ ড. মো. আবু বকর সিদ্দিক সরকার। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রংপুর অঞ্চলের পক্ষে কার্যপত্র উপস্থাপন করেন উদ্যান বিশেষজ্ঞ কৃষিবিদ খোন্দকার মো. মেসবাহুল ইসলাম এবং দিনাজপুর অঞ্চলের পক্ষে উপপরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. মাহবুবুর রহমান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন রংপুর কৃষি তথ্য সার্ভিসের আঞ্চলিক বেতার কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. আবু সায়েম।

ডিএই মহাপরিচালক তার বক্তব্যে মাঠ পর্যায়ে কর্মরত কৃষি কর্মকর্তাদেরকে আমন আবাদ নির্বিঘ্নে করার লক্ষ্যে আগাম বন্যা মোকাবেলাসহ সকল কলাকৌশল বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ে তদারকি জোরদার করার ওপর প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা প্রদান করেন। এছাড়া তিনি আমনের ফলন বৃদ্ধিতে কৃষি প্রযুক্তিসমূহের সঠিক প্রয়োগে মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

তিনি বলেন, দেশের কৃষকের চাহিদা অনুযায়ী নতুন নতুন জাত আবিষ্কার হচ্ছে। আমন মৌসুমে চাষাবাদের জন্য সর্বশেষ উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল জাতের মধ্যে ব্রি ধান৭০ (সুগন্ধি), ব্রি ধান৭১ (খরা সহিষ্ণু), ব্রি ধান৭৫ (হালকা সুগন্ধি), ব্রি ধান৭৯ (বন্যা সহিষ্ণু), ব্রি ধান৮০ (সুগন্ধিযুক্ত), উচ্চ ফলনশীল ব্রি ধান৮৭ ও ব্রি হাইব্রিড৬ অন্যতম জাত হিসেবে সংযুক্ত হয়েছে।

এছাড়া তিনি জাতগুলো সম্প্রসারণে ডিএই’র রাজস্ব খাতের চলমান প্রদর্শনীসমূহে বীজ উৎপাদন কার্যক্রমে ব্রিডার সীড সরবরাহের প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন।

কর্মশালায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রংপুর বিভাগের রংপুর ও দিনাজপুর কৃষি অঞ্চল, সকল জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা, কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানী, কৃষি তথ্য সার্ভিস, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন, বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সী, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তাসহ কৃষক প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনা অনুষ্ঠানের শেষে পাঁচ জন কৃষকের মাঝে ব্রি ধান৭০ ও ব্রি ধান৮০ ও আট জেলা উপপরিচালকের কাছে ব্রি ধান৭১ এর বীজ বিতরণ করা হয়। বাসস

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডট.কম/মোমিন