স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী মাছ চাষে করণীয়

1220

hqdefault (1)
স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী মাছ চাষে করণীয় সম্পর্কে মাছ চাষিদের জেনে রাখা জরুরী। মাছ চাষের সময়কালের উপর নির্ভর করে স্বল্প ও দীর্ঘ মাছ চাষ নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। আসুন জেনে নেই স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী মাছ চাষে করণীয় সম্পর্কে-

স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী মাছ চাষে করণীয়ঃ
স্বল্প মেয়াদী চাষঃ

স্বল্প মেয়াদী চাষে মাছের স্টক ডেনসিটিকে কাজে লাগিয়ে অল্প জায়গায় বেশী মাছ উৎপাদন করার কথা মাথায় রাখতে হয়। স্বল্প মেয়াদী চাষে তেলাপিয়া, পাঙ্গাশের সাথে বাংলা মাছ অল্প করে দিয়ে চাষ করা যেতে পারে, ৪ মাস পর উত্তোলনের উপযোগী হয় সেগুলো। তাই স্বল্প মেয়াদী চাষে শতকে ১৬০ থেকে ২০০ পিস করে পাঙ্গাশ অথবা তেলাপিয়া দিতে পারেন, সাথে বিভিন্ন বাংলা মাছ ২০টি।

স্বল্প মেয়াদী চাষে বেশী বেশী খাবার ইউজ করতে হয় এবং বেশী পরিচর্যার প্রয়োজন হয়। মূলত স্বল্প মেয়াদী চাষে কেজিতে চারটা বা তিনটায় এনে তেলাপিয়া বিক্রি করা হয়। পাঙ্গাশকে খাবার ঠিক মতো দিলে ৪-৬ মাসে কেজিতে চলে আসে। সেক্ষেত্রে সেটাও বিক্রয় উপযোগী হয়ে যায়। এবং বাংলা দুই পিসে কেজি অথবা বড় পোনা ছাড়লে কেজি খানেক বা তার বেশী হয় নিবিড় পরিচর্যা করলে এবং ঠিক পোনা নির্বাচন করতে পারলে।

আর আরেকটা উপায় আছে স্বল্প মেয়াদী চাষে, সেটা হচ্ছে শতকে দুইশো করে তেলাপিয়া বা পাঙ্গাশ দিয়ে সাথে সবরকম কার্প মাছ শতকে একটা করে দিলে আরো ভালো প্রোডাকশন হয়। প্রায় ৩০ কেজির কাছাকাছি চলে যায়, তবে সাবধান কালিবাউশকে এই চাষে প্রাধান্য দিবেন না।

এছাড়াও শিং-মাগুর বা পাবদাও স্বল্প মেয়াদী চাষের তালিকায় রাখা যায়।নতুন পুকুরে স্বল্প মেয়াদী চাষ করা উত্তম,সাথে পুকুর পাড়ে সুপারী,লেবু,দেশী নারকেল হলে ভালো!তাহলে শীতের শেষেই পুকুর প্রস্তুত করে নেমে যান মাঠে,দেখিয়ে দিন আপনিও পারেন।

দীর্ঘ মেয়াদী চাষঃ

দীর্ঘ মেয়াদী চাষে মূলত কার্প ফ্যাটেনিংকে প্রাধান্য দেয়া হয়,শতকে বিভিন্ন স্তরের দশ থেকে বারোটা মাছ দিয়ে প্রায় ৩০-৩৫ কেজি প্রোডাকশন পাওয়াই এর মূল লক্ষ্য থাকে।পুকুরে প্লাংকটন উৎপাদন,প্রাকৃতিক খাবার এবং দীর্ঘ সময় মাছকে আধা নিবিড় অথবা নিবিড় পদ্ধতিতে পরিচর্যা করা হয় এই চাষে।

দীর্ঘ মেয়াদী চাষে চাপের পোনা অথবা নতুন রেণুর বড় পোনা ছাড়তে হয় যেমন- ৩০০ থেকে ৫০০ গ্রাম সাইজের মাছ ছাড়লে এই চাষ লাভজনক হয়। এই চাষে পোনা নির্বাচন বড় বিষয় হিসাবে কাজ করে। জেনেশুনে ভালো হ্যাচারির পোনা নিতে হয় এবং বড় ব্রুড মাছের পোনা নির্বাচন করতে হয়। এক্ষেত্রে শতকে রুই চারটা,মৃগেল দুটো,কাতলা একটা,সিলভার/বিগহেড একটা,গ্রাসকার্প একটা,মিনার/মিরর কার্প একটা,কালি বাউশ একটা দেয়াই উত্তম বলে গণ্য হয়।

শতকে ১ কেজি ঘাস এবং খড় ব্যবহার খুবই উত্তম পন্থা এই চাষে, সাথে আশেপাশে থাকা প্রাকৃতিক খাবারের ব্যবহার এবং প্লাংকটনের ব্যবস্থা করে দিতে হয়। খাবার ব্যবহারের ক্ষেত্রে বডি ওয়েটের দুই পার্সেন্ট খাবার দিতে হয়, আসে একবার জাল টান দিয়ে মাছের শারীরিক অবস্থা এবং ওজন করতে হয়, সব সময় চুন-লবণের নরমাল ডোজ দিতে হয়।

দীর্ঘ মেয়াদী চাষে মাছকে ৩-৫ কেজি বানিয়ে বিক্রি করা হয়, কেউ কেউ আরো বড় করেন, যা প্রতি পিস ৮-১০ কেজিও হয়। দীর্ঘ মেয়াদী চাষে মাছকে দূরের বাজারে জীবিত অবস্থায় ট্রাকে করে রিভার্স সিস্টেমে পানি দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় এবং ভালো দামে বিক্রি করা হয়। বাজার রেট এক্ষেত্রে অনেক প্রভাব ফেলে। যাদের পুকুর পুরনো এবং বেশী জায়গা আছে তাদের জন্য এই চাষ সবচেয়ে ভাল।

ফার্মসএন্ডফার্মার/২৫ফেব্রু২০২০