কৃষকদের মাঝে নতুন আশার সঞ্চার করেছে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) উদ্ভাবিত ‘বিনা মরিচ-১’। তুলনামূলক কম ঝালের এ মরিচে দেশীয় ও প্রচলিত জাতের তুলনায় ১৩০-১৪০ শতাংশ ফলন বেশি হয়। নতুন জাতের এ মরিচ একইসাথে মসলা, সালাদ ও সবজি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। ২০১৬ সালে বিনার কৃষি বিজ্ঞানীরা এ জাত উদ্ভাবন করেন।
এ মরিচ চাষে কৃষকদের মাঝে আগ্রহ বাড়াতে কৃষি বিভাগ বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছে। ভবিষ্যতে এ জাতের মরিচ চাষ এবং চাষির সংখ্যা বাড়বে। তাই জেনে নিন এ জাতের মরিচ চাষের সহজ পদ্ধতি—
জমি তৈরি: জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ বেলে দো-আঁশ মাটি এ মরিচ চাষের জন্য বেশ উপযোগী। স্বল্পমাত্রায় অম্ল বা মাটির পিএইচ ৬.০-৭.০ ফলন ভালো হয়। তিন থেকে চারটি চাষ ও মই দিয়ে আগাছা পরিষ্কার করে জমি তৈরি করতে হবে। শেষ চাষের সময় প্রয়োজনমত গোবর, ইউরিয়া, টিএসপি, এমওপি এবং জিপসাম সার দিতে হয়। এ ছাড়া জমিতে পানি নিষ্কাশনের জন্য কমপক্ষে ৩০ সেমি নালার ব্যবস্থা রাখতে হয়। মধ্য অক্টোবর-এপ্রিল মাসে এ জাতের মরিচ উৎপাদন সবচেয়ে ভালো হলেও উঁচু জায়গায় সারা বছরই চাষ করা যায়।
জমিতে বীজের পরিমাণ: ছিটিয়ে বপন করলে প্রতি হেক্টর জমির জন্য ৮০০-১০০০ গ্রাম দরকার। সারিতে চারা রোপণ করলে প্রতি হেক্টর ৪৫০-৬০০ গ্রাম বীজের প্রয়োজন হয়। প্রতি হেক্টরের চারার সংখ্যা ৩৮০০০টি, একরে ১৫৫০০টি এবং বিঘায় ৫০০০টি। বীজ জমিতে বপনের আগে ছত্রাকনাশক দিয়ে বীজ শোধন করলে অঙ্কুরোদগম হার বাড়ে এবং স্বাস্থ্যবান চারা পাওয়া যায়।
সার ও সেচ প্রয়োগ: ইউরিয়া ও পটাশ সার তিন কিস্তিতে চারা লাগানোর ১০-১৫ দিন পর ৪০-৫৫ দিন পর ও ৭০-৭৫ দিন পর এবং টিএসপি সার জমি চাষের সময় প্রয়োগ করতে হবে। প্রতি হেক্টর জমিতে ৫.০ টন গোবর, ১০০ কেজি জিপসাম এবং ১০ কেজি জিঙ্ক সালফেট প্রয়োগ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। চারা রোপণের পর ৪-৫ বার সেচ প্রয়োগের প্রয়োজন হয়।
আগাছা দমন ও বালাই ব্যবস্থাপনা: চারা লাগানোর পর সার ও পানি দেওয়ার ফলে আগাছার প্রকোপ বাড়ে। তখন আগাছা পরিষ্কার করা প্রয়োজন। বিনা মরিচ-১ জাতে অ্যানথ্রাকনোজ রোগ, থ্রিপস এবং জাপপোকার প্রতি সহনশীলতা লক্ষ্য করা গেছে। চারা রোপণের আগে ডিডি মিকচার বা ফুড়াডন-৫জি দিয়ে মাটি শোধন করে নিলে এসব রোগের আক্রমণ কমে যায়। যদি কোনো রোগ দেখা দেয়, তাহলে উপজেলা কৃষি অফিসারের পরামর্শ অনুযায়ী বালাইনাশক বা কীটনাশক প্রয়োগ করা উচিৎ।
সূত্র: জাগো নিউজ
ফার্মসএন্ডফার্মার/১৬জুলাই২০