চলতি বর্ষায় ঠিক সময়ে নদনদী ও খালবিলে পানি এসেছে। এতে স্বস্তিতে রয়েছেন মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখান উপজেলার পাটচাষিরা। ক্ষেত থেকে পাট কেটে জাগ দিয়েছেন আগেই। এখন আঁশ ছাড়িয়ে শুকানোর পালা।
বাড়তি আয়ের জন্য উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকায় নারীদের এ কাজে ব্যস্ত দেখা গেছে। তাদের কেউ নগদ টাকার চুক্তিতে কাজ করছেন। কেউ আবার আঁশ ছাড়িয়ে দেওয়ার বিনিময়ে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন পাটখড়ি। সেই পাটখড়ি বিক্রি করে আয় হচ্ছে তাদের।
উপজেলার কেয়াইন ইউনিয়নের শিকারপুর গ্রামের পাটচাষি সাখাওয়াত হোসেন বলেন, তাঁর পাটের আঁশ নারী শ্রমিকদের মাধ্যমে ছাড়িয়ে নিচ্ছেন। পারিশ্রমিক হিসেবে তাদের পাটখড়ি দিচ্ছেন। রশুনিয়া ইউনিয়নের রশুনিয়া গ্রামে শনিবার আঁশ ছাড়াচ্ছিলেন হাফিজা বেগম। তিনি বলেন, আঁশ ছাড়ানোর পর পাটখড়ি দুই ভাগ করা হয়। এর এক ভাগ তারা নেন। বাকিটা কৃষকের।
অন্য নারী শ্রমিকরা জানিয়েছেন, আঁশ ছাড়িয়ে পাওয়া পাটখড়ি তাঁরা আঁটি হিসেবে বিক্রি করেন। ২০টি পাটখড়ি দিয়ে বাঁধা একটি আঁটি ২০ টাকায় বিক্রি হয়। অনেকে আবার রান্নার কাজে জ্বালানি হিসেবে এসব ব্যবহার করেন। কেউ বাড়ির বেড়া-চালা তৈরি করেন।
প্রতি বছর পাটের মৌসুমে আঁশ ছাড়ানোর কাজ করেন রাবেয়া বেগম। কুচিয়ামোড়া গ্রামের এই নারী দুই সন্তানের মা। তাঁর স্বামী সুজন মিয়া পেশায় ট্রাকচালক। রাবেয়া বেগম বলেন, বছরে এক মাসের মতো এ কাজ থাকে। দিনে ৩০-৩৫ আঁটি পাটখড়ি পান। এর বাজারমূল্য ৬০০-৭০০ টাকা। সব আঁটি বিক্রি করেন না রাবেয়া। কিছু রান্নার জন্যও সংরক্ষণ করেন।
সিরাজদীখানে পাটের আঁশ ছাড়ানোর কাজ নারীরাই বেশি করেন বলে জানান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সাঈদ শুভ্র। তিনি বলেন, গতবারের তুলনায় এ বছর জেলায় পাটের আবাদ বেশি হয়েছে। ভালো ফলন ও দাম পেয়ে কৃষকরাও খুশি।