অনাবাদি ও পতিত জমিতে সজিনা চাষ

441

সাজিনা-চাষ

জয়পুরহাট: জেলার বিভিন্ন উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলের অনাবাদি ও পতিত জমিতে লাগানো সজিনার গাছগুলো এখন ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে। পুষ্ঠিগুণে ভরপুর ও আঁশজাতীয় সবজি সজিনার ফুলের গন্ধে এখন মৌ মৌ করছে চারপাশ। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার সজিনার বাম্পার ফলনের আশ করছেন এলাকার কৃষক ও কৃষি বিভাগ।

সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও কৃষি অফিস সূত্র জানায়, জয়পুরহাট জেলায় এবার ১ হাজার ৭শ’ হেক্টর জমিতে সজিনা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা কয়েছে। কালাই উপজেলার মাত্রাই, উদয়পুর, পুনট, জিন্দারপুর ও আহম্মেদাবাদ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় অকৃষি বা পতিত জমিতে হাইব্রিড, বারোমাসি ও দেশী জাতের সজিনার চাষ হচ্ছে। বাসাবাড়ির আশপাশে, পুকুর পাড়ে, ছাদে ও হাসপাতাল, স্কুল, কলেজের মাঠে এবং রাস্তার দু’পাশে অকৃষি বা পতিত জমিতে পুষ্ঠিগুণে ভরপুর ও আঁশ জাতীয় সবজি সজিনার সারি সারি গাছগুলো ফুলে ফুলে ভরে গেছে আর মৌ মৌ গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে এলাকায়। এর মধ্যে কোন কোন সজিনার গাছে ফুল থেকে ছোট ছোট সজিনা বের হতে শুরু করেছে। এখান কার সজিনা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হয়ে থাকে বলে জানান স্থানীয় কৃষক আলম হোসেন।

এ ছাড়া সজিনা বিক্রি করে অনেকেই অর্থিক ভাবেও লাভবান হয়েছেন। সজিনা চাষ ইতোমধ্যেই অর্থকরী ফসল হিসেবে সকলের কাছে বিবেচিত হচ্ছে। প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না হলে এবার সজিনা বাম্পার ফলন হবে বলে আশ করছেন এলাকার সজিনা চাষিরা।

কালাই পৌরসভার বড়বেলা মহল্লার সজিনা চাষি মো.আলম হোসেন বলেন, বাড়ির সমনে রাস্তার দু’ধারে ১০টি সজিনার গাছ লাগানো হয়েছিল। গত বছর ওইসব সজিনার গাছ থেকে প্রায় ৬ মণ সজিনা বিক্রি করা হয়েছে। আশা করছি এবারও সজিনার বাম্পার ফলন পাব।

কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী সার্জন ডা. আখতার উজ্জামান বলেন, সজিনা পুষ্ঠিগুণে ভরপুর সবজি। সজিনার মধ্যে ভিটামিন-এ ও সি আছে। এটি মানব দেহের কোলেষ্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। সজিনা উচ্চরক্ত চাপের রোগীদের অনেক উপকারী। তাছাড়া সজিনার পাতা শাক হিসেবে খাওয়া যায়।

কালাই উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ফারজানা হক বলেন, সজিনা একটি পরিবেশবান্ধব ও অর্থকরি আঁশজাতীয় সবজি। এটি অনাবাদি ও পতিত জমিতে চাষ করা যায়। সজিনা চাষে পানির খরচ কম লাগে। সজিনা গাছের তেমন কোন রোগ-বালাই নেই বললেই চলে এবং অন্যান্য খরচও নেই। একটু পরিচর্যা করলেই অনেক ভালো ফলন পাওয়া যায়।