আবুল কাশেমের বারোমাসি থাই আমবাগান

430
সংগৃহিত
সংগৃহিত
সংগৃহিত

চুয়াডাঙ্গা : থাই বারোমাসি আমাচাষে সফল হয়েছেন জীবননগরের নার্সারী মালিক আবুল কাশেম। গাছে বারো মাস ধরে এ আম। এ জন্য এ আমের নাম থাই বারোমাসি আম।

আবুল কাশেম ২২ বিঘা বাগান হতে এবার অসময়ে প্রায় ১৬ লাখ টাকার আম বিক্রি করেছেন। বাগানের গাছে এখন ভরপুর আম রয়েছে। আগামীতে আম বিক্রি করে লাভের আশা করছেন আবুল কাশেম।

আবুশ কাশেম জানালেন, তার এক ব্যবসায়ী আত্মীয় ছয় বছর আগে থাইল্যান্ডে যান সফরে। সেখানে তাদের একটি আম বাগান পরিদর্শনে নেওয়া হয় এবং ওই বাগান হতে পাকা আম পেড়ে খেতে দেয়া হয়। সুমিষ্ট ওই আম খেয়ে ভালো লাগে সার-কীটনাশক ব্যবসায়ী নূর ইসলামের।

তিনি বাগান থেকে গাছের একটি ডাল ভেঙে ব্যাগে নেন। দেশে ফিরে ওই ডগাটি নার্সারি মালিক আবুল কাশেমকে দেন চারা তৈরির চেষ্টা করার জন্য। সেই ডগা থেকে চারা তৈরি করে সে সময় সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন আবুল কাশেম। পরের বছর ওই গাছে ৮-১০টি আম ধরে। একে একে তিন বার আম ধরে গাছটিতে। পাকা আম খেতে স্বাদ ও গন্ধে অত্যন্ত সুমিষ্ট হওয়ায় কাশেম উদ্বুদ্ধ হয়ে ওই চারা থেকে আবার কলম চারা তৈরি শুরু করেন।

তিনি জানান, কলম চারা দিয়ে অবুল কাশেম উপজেলার বাঁকা গ্রামের মাঠে ২২ বিঘা আমবাগান গড়ে তুলেছেন। ২ হাজার ২০০ গাছ রয়েছে তার বাগানে। বাগানের বয়স এখন ৪ বছর। তার নার্সারিতে বিক্রির জন্য রয়েছে পর্যান্ত থাই বারোমাসি আমের চারা।

গত শুক্রবার সরেজমিনে পরিদর্শনকালে দেখা যায়, বাগানের গাছের বোটায় থোকাই থোকাই আম ঝুলছে। কোনটাতে পাক ধরেছে, আবার কোনটা কাঁচা। কোন গাছে মুকুল ধরেছে, আবার কোনটাতে গুটি। বছরে তিন বার ফল দিচ্ছে এ গাছ। প্রতিটি গাছ থেকে ৩ বারে গড়ে ৫০ কেজি মত আম পাওয়া যাচ্ছে। অসময়ে উৎপাদিত হওয়ায় এ আমের দামও চড়া। থাই বারোমাসি আম পাকলে হলুদ বর্ণ ধারণ করে। দেখতে আকারে অনেকটা আম্রপালি আমের মত। স্বাদ ও গন্ধে অতুলনীয়। আঁটি আকারে অত্যন্ত ছোট ও পাতলা।

আবুল কাশেম জানালেন, উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে তাকে সার্বক্ষণিক সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। খবর পেয়ে গত ৮ অক্টোবর টিভি ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ তার বাগানটি পরিদর্শন করে ডকুমেন্টারি তৈরি করেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ জানান, জাতটি আমাদের দেশে নতুন। আবুল কাশেমই এটি তৈরি করেছেন। এটি দ্রুত সম্প্রসারণযোগ্য একটি জাত। এ আম খেতে অত্যন্ত সুমিষ্ট। ঘ্রাণও সুন্দর। আমের খোলার নিচের অংশ খুব শক্ত হওয়ায় ঘরে অনেক দিন রেখে খাওয়া যায়। এ আম চাষে কৃষক লাভবান হবেন বলে তিনি আশা করছেন। বিএসএস

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/মোমিন