গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে কাঁঠাল

1930

আয় ছেলেরা, আয় মেয়েরা ফুল তুলিতে যাই। ফুলের মালা গলায় দিয়ে মামার বাড়ি যায়। মামার বাড়ি ঝড়ের দিনে আম কুড়াতে সুখ। পাঁকা আমের মধুর রসে রঙ্গিণ করে মুখ। পল্লী কবি জসিম উদ্দীনের লেখা কবিতার এ কথাগুলো যেনো জ্যৈষ্ঠ মাসের কথা মনে করিয়ে দেয়। কারণ বৈশাখ মাস পেরিয়ে জ্যৈষ্ঠতে পা দিলেই আমাদের দেশের স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ হয়ে যায়।

আর তখনি শুরু হয় নানা-মামাসহ অন্যান্য আত্মীয় বাড়ি বেড়ানো। তাই তো বাংলা জ্যৈষ্ঠ মাসকে মধু মাস বলা হয়ে থাকে। কারণ এ মাসে থাকে বাহারী রসালো ফলের সমারোহ। তারই ধারাবাহিকতায় কৃষি ও ফল খ্যাত মেহেরপুর জেলা এখন যেনো কাঁঠালের জেলা। প্রকৃতি দিয়ে সাজানো মেহেরপুর জেলার তিনটি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের রাস্তার দু,পাশে যেনো দাঁড়িয়ে আছে অসংখ্য কাঁঠাল গাছ। এছাড়াও প্রত্যেকটি গ্রামের বাড়ির আঙ্গিনা ও মাঠে কাঁঠালের বাগানও রয়েছে। এক মাস পরেই মন কাড়ানো লোভনীয় কাঁঠাল ফলের মৌ-মৌ গন্ধে মুখরিত হয়ে পড়বে রাস্তার দু’পাশ ছাড়াও বিভিন্ন মাঠ-ঘাট। কাঁঠাল ফলটি শুধু জাতীয় ফলই নয়।

এটি গরীবের ফল নামেও খ্যাতি আছে এ অঞ্চলে। ফলটি মূল্য নিম্ন আয়ের মানুষের সাধ্যের মধ্যে ধরা হয়ে থাকে। এ ফলটি কাঁচা অবস্থায় সবজি হিসাবে খায় মানুষ। মোট কথা কাঁঠালের কিছুই ফেলা যায় না। কাঁঠালের বীজ সিদ্ধ করে ডাল হিসাবেও খাওয়া যায়। কেউ-কেউ আবার বীজ আগুনে পুড়িয়েও খায়। এছাড়াও কাঁঠাল গাছের পাতা গরু-ছাগলসহ বিভিন্ন জীবের খাদ্য হিসাবে মানুষ সংগ্রহ করে থাকে। কাঁঠাল গাছের কাঁঠ দিয়ে আসবাবপাত্র যেমন-খাট-চৌকি, চেয়ার-টেবিল, আলনা, সুকেস, জানালার পাসিসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

মেহেরপুরের কাঁঠাল স্থানীয়দের চাহিদা মেটানোর পরও রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি হয়ে থাকে। মেহেরপুরের কাঁঠাল একটু সুস্বাদু হওয়ায় বিশেষ করে ঢাকা, বরিশালসহ বিভাগীয় শহরে এ ফলের কদর একটু বেশি। মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার হাড়িয়াদহ গ্রামের সমাজ সেবক হযরত আলী জানান গত বছরের তুলনায় এবার গাছে কাঁঠাল ফল বেশি ধরেছে। তবে কারোর কারোর গাছে এটার একটু ব্যতিক্রম আছে। সব মিলিতে অন্যবারের তুলনায় কাঁঠাল বেশি ধরেছে। চলতি মাসে কাঁঠাল ফল পাঁকার সময় না হলেও অনেকে এটি সবজি তরকারি হিসাবে এখন খাচ্ছে।

ফার্মসএন্ডফার্মার/১৪এপ্রিল২০