চট্টগ্রামের পুরো নগরজুড়ে পথচলায় খানাখন্দের ঝাঁকুনি থামাতে সিটি করপোরেশনকে তড়িৎ পদক্ষেপের দাগিদ

59

বর্ষা শেষে ভারী বৃষ্টি, জলাবদ্ধতার পর মাস পেরুলেও সংস্কার হয়নি চট্টগ্রাম মহানগরীর সড়কের ক্ষত। পুরো নগরজুড়ে সড়কে গর্ত আর খানাখন্দের ঝাঁকুনি খেয়ে চলতে হচ্ছে চালক ও যাত্রীদের। গাড়ি চলাচলে তৈরি হয়েছে মারাত্মক ঝুঁকি। মাসজুড়ে থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে দুর্ভোগের পারদ চরমে উঠেছে। জলাবদ্ধতায় মুরাদপুর, শুলকবহর ও বহদ্দারহাট অংশ মূল সড়কের ডুবেছিল। পানি নেমে যাওয়ার পর এসব অংশে সড়কের ক্ষত বেরিয়ে এসেছে। জলাবদ্ধতা শুরুর আগে আখতারুজ্জামান চৌধুরী ফ্লাইওভার ও এম এ মান্নান ফ্লাইওভারের (বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার) মধ্যবর্তী ষোলশবহর অংশ উঁচু করার জন্য ইটের খোয়া আর বালি ফেলেছিল সিটি করপোরেশন। কিন্তু জলাবদ্ধতায় তা অনেকটাই ভেসে গেছে। এতে সড়কে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় খানাখন্দ। এমনকি বহদ্দারহাট ফ্লাইওভারে পিচ উঠে গিয়ে তৈরি হয়েছে শত শত গর্ত। নামার অংশেও ভেঙেছে সড়ক। শুধু এসব সড়ক নয়, নগরীর বেশিরভাগ সড়কের পিচঢালাই (কার্পেটিং) নষ্ট হয়ে গেছে। কিছু কিছু জায়গায় সড়কে দুই থেকে ছয় ইঞ্চি গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। সড়কের ওপর ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে ছোট-বড় হাজার হাজার পাথর আর ধুলাবালির কারনে বাতাস ভারী হয়ে আছে। এগুলো পথ চলাচলে ঝুঁকি ও দুর্ভোগ বাড়িয়েছে। এমতাবস্থায় দ্রুত নগরীর খানাখন্দের ঝাঁকুনি থামাতে সিটি করপোরেশনকে তড়িৎ পদক্ষেপের তাগিদ দেশের ক্রেতা-ভোক্তাদের জাতীয় স্বার্থসংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগ ও নগর কমিটি।

ভারী বৃষ্টি, জলাবদ্ধতার মাস পেরুলেও নগর জুড়ে পথচলায় খানাখন্দের ঝাঁকুনিতে নগরজীবনে স্বস্তি ফেরাতে ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, সহ-সভাপতি সাংবাদিক এম নাসিরুল হক, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান প্রমুখ উপরোক্ত দাবি জানান।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্ষা ও জলাবদ্ধতায় মূল সড়কের পাশাপাশি শাখা সড়কগুলোরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। হাঁটলে যেমন উষ্টা খেয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে, তেমনি গাড়িযোগে চলাচলে ঝাঁকুনিতে কোমর যায় যায় অবস্থা নগরবাসীর। স্বাভাবিক সময়ে ওয়াসা, বিদ্যুত, গ্যাস, টিঅ্যান্ডটিসহ নানা সেবা সংস্থাগুলি প্রতিযোগিতাকারে রাস্তা কাটেন। কিন্তু কাটা রাস্তা সংস্কারে কালক্ষেপন করে জনদুর্ভোগ বাড়ালেও মনে হবে এই নগরের কোন অভিভাবক নেই। বর্ষা মৌসুমে নগরের সড়ক নষ্ট হওয়ার এই প্রবণতা নতুন নয়। প্রতিবছরই ভারী বর্ষণ ও জোয়ারে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরের রাস্তাঘাট বেহাল হয়ে পড়ে। কোনো বছর বেশি, কোনো বছর কম। অন্যান্য বছর রাস্তাঘাট থেকে পানি নামার পর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন প্রাথমিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ সড়কের তালিকা করে দ্রæত সংস্কার পরিচালনা করেন। কিন্তু এবার সেধরনের কোন উদ্যোগ দেখা যায়নি। ফলে পথচারীসহ সাধারন মানুষের দুর্বীসহ জীবন যাপনে বাধ্য হচ্ছে।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, বর্ষায় ক্ষতিগ্রস্থ সড়কগুলোর মধ্যে, নগরের কে বি আমান আলী সড়ক, জামালখান সড়ক, শহীদ সাইফুদ্দিন খালেদ সড়ক, লয়েল রোড, কে সি দে সড়ক, খাজা সড়ক, চান মিয়া সড়ক, বায়েজিদ বোস্তামী সড়ক, হাটহাজারী (মুরাদপুর-অক্সিজেন) সড়ক, সার্সন সড়ক, ডিসি সড়ক, ওমর আলী মাতব্বর সড়ক, মাইজপাড়া সড়ক, পিলখানা সড়ক, জাকির হোসেন সড়ক, সুন্নিয়া মাদ্রাসা সড়ক, মোহাম্মদপুর সড়ক, খতিবের হাট সড়ক হলেও এগুলো সংস্কারে কার্যকর উদ্যোগ না থাকায় সিটি করপোরেশনের সড়ক রক্ষনাবেক্ষনের দৈনন্দিন সেবা থেকে নগরবাসী বঞ্চিত হচ্ছে।