প্রতিদিন ২টি ডিম খেলে শরীরের যে অভাবনীয় পরিবর্তন ঘটে!

573

full_1906344387_1437526225

সবারই পছন্দের খাবার হল ডিম। সকালের নাস্তায় ডিম ছাড়া যেন নাস্তাই করা হয় না। ডিম অত্যন্ত কম দামের পুষ্টিকর খাবার হিসেবে পরিচিত। আর ডিমে রয়েছে বেশ কিছু পুষ্টি উপাদান, যা দেহের ক্যালরি সরবরাহ থেকে শুরু করে নানা খাদ্যপ্রাণও সরবরাহ করে। মুরগির ডিম আমাদের নিত্যদিনের খাবারের একটি অংশ হলেও এর গুণাগুণ নিয়ে সন্দেহ আছে অনেকেরই। কেউ কেউ ভাবেন তা কোলেস্টেরল বাড়ায়, বাড়ায় ওজন।

কেউ কেউ ভাবে এতে অ্যালার্জির উদ্রেক হয়। কিন্তু শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের জন্য দিনে ২টি ডিম খাওয়া যে কতটা উপকারী তা জানেন না অনেকেই। ডিমের জনপ্রিয়তার পাশাপাশি অনেক দিন ধরেই এই ধারণাও ব্যাপকভাবে প্রচারিত যে, ডিমের কুসুম খাওয়া অনেক সময়ই প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে উঠতে পারে। বিশেষত যাদের হূদরোগ বা এ রোগের ঝুঁকি আছে, তাদের ডিমের কুসুম খেতে নিষেধ করা হয়। বলা হয়ে থাকে, ডিমের কুসুমে থাকা ‘স্যাচুরেটেড ফ্যাট’ ও ‘উচ্চমাত্রার কোলেস্টরল’ উচ্চ রক্তচাপজনিত স্বাস্থ্যসমস্যা এবং হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। কিন্তু বিশ্বজুড়ে বহুল প্রচলিত এ ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছেন হালের বিজ্ঞানীরা।

ডিমের কুসুম না খেলে লাভের চেয়ে লোকসানই বেশি। কেননা, কুসুম না খেলে ভালো মানের পুষ্টি থেকে বঞ্চিত হবেন আপনি। কুসুম খেলে শারীরিক ক্ষতির ঝুঁকি নিয়েও বিশদ আলোচনা করেছেন উলফি।

চলুন দেখে নিই সাধারণ ডিমের অসাধারণ কিছু উপকারিতা-

১) মস্তিষ্ককে নিরাপদ রাখে কোলিন:
মস্তিষ্কের কোষগুলোর মাঝে যোগাযোগ স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে বিভিন্ন ফসফোলিপিড আর এর মাঝে একটি হলো কোলিন। মস্তিষ্কের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানগুলোর মাঝে কোলিন অন্যতম। প্রতিদিন ২টি করে ডিম খাওয়া হলে যথেষ্ট পরিমাণে কোলিন পায় আপনার শরীর। কোলিনের অভাবে স্মৃতিশক্তি কমে যেতে পারে।

২) দৃষ্টিশক্তি সুরক্ষিত রাখে: লুটেইন মুরগির ডিমে যথেষ্ট পরিমাণে লুটেইন থাকে। এই উপাদানটি দৃষ্টিশক্তি পরিষ্কার ও তীক্ষ্ণ রাখতে সহায়ক।

৩) ভিটামিন ডি ক্যালসিয়াম শোষণে সাহায্য করে:
এক চামচ মাছের তেল এবং একটি সেদ্ধ ডিমে একই পরিমাণ ভিটামিন ডি থাকে। শুধু তাই নয়, এই ভিটামিন ডি শরীরে ক্যালসিয়াম শোষণেও কাজে আসে। এটা আপনার হাড় ও দাঁত মজবুত করে।

৪) ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ত্বক, চুল ও যকৃৎ ভালো রাখে:
বায়োটিন, ভিটামিন বি ১২ এবং কিছু প্রোটিন চুল ও ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখে। ডিমে থাকা ফসফোলিপিড যকৃৎ থেকে টক্সিন বের হয়ে যেতে সাহায্য করে।

৫) কার্ডিওভাস্কুলার রোগের ঝুঁকি কমায়:
আপনি ভাবতে পারেন ডিম খেলে কোলেস্টেরল বাড়ে। আসলে কিন্তু ডিমের কোলেস্টেরল আমাদের শরীরের জন্য খারাপ নয়। এর পাশাপাশি ডিমে থাকে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।

৬) ওজন কমাতে সহায়ক:
লো-ক্যালোরি ডায়েটের সাথে সকালের নাশতায় ডিম খাওয়া হলে দ্রুত কমতে থাকে ওজন- মত দেন আমেরিকাল গবেষকেরা। ব্রেকফাস্টে ডিম খাওয়া হলে অনেকটা সময় পেট ভরা থাকে, ফলে বারবার জাঙ্ক ফুড খাওয়া থেকে বিরত থাকা যায়।

৭) ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়:
মস্তিষ্কের জন্য উপকারী কোলিন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতেও কাজে আসে। গবেষণায় দেখা যায়, যেসব তরুণীরা প্রতিদিন ডিম খেতেন, পরবর্তীতে তাদের ব্রেস্ট ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা কমে ১৮ শতাংশ।

৮) সন্তান ধারণে শরীরকে প্রস্তুত করে:
ডিমে থাকা ভিটামিন বি ৯ বা ফলিক এসিড ভ্রূণের মস্তিষ্কে কোনো সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি কমায়। এ কারণে গর্ভবতী এবং গর্ভধারণে উৎসাহী নারীদের জন্য ডিম খাওয়া জরুরী।

৯) বয়স বৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে ধীর করে দেয়:
হল্যান্ডের এক গবেষণায় দেখা যায়, নিয়মিত ডিম খাওয়ার ফলে ৩৫-৪০ বছর বয়সী নারীদের বয়সজনিত দাগ দূর হয় এবং ত্বক আগের মতো টানটান হয়ে আসে। চোখের আশেপাশের বলিরেখাও কমে আসতে দেখা যায়।

১০) ডিম সহজেই হজম হয়:
ডিম খুব দ্রুত হজম হয়ে যায় আমাদের দেহে। ডিম আপনি যেভাবেই খান না কেন এটি আমাদের দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

১১) নখ ও চুলের স্বাস্থ্য উন্নত কর:
ডিমে আছে সালফার সমৃদ্ধ অ্যামিনো অ্যাসিড যা আমাদের হাতের নখের স্বাস্থ্যই শুধু উন্নত করেনা আমাদের চুলের স্বাস্থ্য মজবুত করে ও আকর্ষণীয় করে তুলে। ডিমের অন্যান্য খনিজ পদার্থ সেলেনিয়াম, আয়রন ও জিঙ্ক দেহের নখ ও চুলের স্বাস্থ্য রক্ষার্থে সহযোগিতা করে। সূত্র: ফেইসবুক

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/এম