বাসার ছাদ বা বারান্দায় ফুলকপি চাষে যে ধরণের টব বা পাত্র প্রয়োজন

37

 

শীতকালিন সবজি হিসেবে ফুলকপির জবাব নেই। কেনোনা এই সবজি দিয়েই তৈরি করা যায় বহু রেসিপি। কিন্তু সবজিটি শুধু মাত্র শীতেই বাজারজাত হয়ে থাকে। তবে আপনি চাইলে পছন্দের এই সবজিটি আপনার বাসার ছাদে, বারান্দা অথবা চিলেকোঠায় গ্রীষ্মকালিন সময়েও চাষ করতে পারেন।

তাহলে চলুন জেনে নিই কিভাবে আপনি নিজের বাড়ীতেই মজাদার এই ফুলকপির চাষ করবেন।

ফুলকপি চাষে যে ধরণের টব বা পাত্র প্রয়োজন:

বাড়িতে ফুলকপি চাষ করার জন্য আপনাকে উপযুক্ত পাত্র নির্বাচন করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি ছোট অথবা মাঝারি সাইজের টব অথবা হাফ ড্রাম নির্বাচন করতে পারেন।

জাত পরিচিতি:

আমাদের দেশে সাধারণত সংকর জাতের ফুলকপি চাষ হয়ে থাকে। বা দেখা যায় ৫০ জাতের ফুলকপি এমনিতেও চাষ করা হয়ে থাকে। শীতকালেই আগাম, মধ্যম ও নাবী মৌসুমে বিভিন্ন জাতের ফুলকপি চাষাবাদ করা যায়।এছাড়াও যেমন মাঘী, অগ্রহায়ণী, পৌষালী, বারি ফুলকপি-১, ২ ইত্যাদি।

ফুলকপির চারা তৈরী:

ফুলকপির চারা বীজতলায় উৎপাদন করে জমিতে লাগানো হয়। বীজতলার আকার ১ মিটার পাশে ও লম্বায় ৩ মিটার হওয়া উচিত। সমপরিমাণ বালি, মাটি ও জৈবসার মিশিয়ে ঝুরাঝুরা করে বীজতলা তৈরি করতে হয়। দ্বিতীয় বীজতলায় চারা রোপণের আগে ৭/৮ দিন পূর্বে প্রতি বীজতলায় ১০০ গ্রাম ইউরিয়া, ১৫০ গ্রাম টিএসপি ও ১০০ গ্রাম এমওপি সার ভালভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। পরে চারা ঠিকমত না বাড়লে প্রতি বীজতলায় প্রায় ১০০ গ্রাম পরিমাণ ইউরিয়া সার ছিটিয়ে দেয়া ভাল।

চারা রোপনের সময়:

ডহবাড়িতে ফুলকপি চাষ করার জন্য উপযুক্ত সময় হল আগস্ট মাস থেকে সেপ্টেম্বর মাস। বীজ গজানোর ১০-১২ দিন পর গজানো চারা দ্বিতীয় বীজতলায় স্থানান্তর করতে হয়। চারায় ৫-৬টি পাতা হলেই তা রোপণের উপযুক্ত হয়। সাধারণত ৩০-৩৫ দিন বয়সের চারা রোণ করা হয়। সারি থেকে সারির দূরত্ব দেয়া লাগে ৬০ সেন্টিমিটার বা ২ ফুট এবং প্রতি সারিতে চারা থেকে চারার দূরত্ব দিতে হবে ৪৫ সেন্টিমিটার বা দেড় ফুট।

ফুলকপি চাষাবাদ পদ্ধতি:

ঠাণ্ডা ও আর্দ্র জলবায়ুতে ফুলকপির ভাল ফলন পাওয়া যায়। বীজ থেকে চারা বের হলে সেখান থেকে সুস্থ সবল চারা তুলে নিয়ে উপযুক্ত পাত্রে লাগাতে হবে। এবং প্রতিটি পাত্রের একটি করে চারা লাগাতে হবে। এবং পাত্র গুলো একটি নির্দিষ্ট দূরত্বে স্থাপন করতে হবে।

সার প্রয়োগ পদ্ধতি:

ফুলকপি চাষে আপনি বাড়িতে তৈরি জৈব সার দিতে পারেন। যেমন তরকারীর খোসা, ময়লা আবর্জনা, ইত্যাদি। এছাড়াও আপনি অজৈব সার হিসেবে পাত্রের মাটিতে গোবর, ইউরিয়া, টিএসপি, এমওপি দিতে পারেন। ১ম ও ২য় কিস-ও সার দেয়ার সময় আপনার গাছ অনুযায়ী সামান্য বোরিক পাউডার গুলে পাতায় স্পে করে দেয়া যায়। তবে সকালে শিশির ভেজা পাতায় যেন দানা সার না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

ফুলকপি চাষে পোকামাকড় দমন:

এদেশে ফুলকপির সবচে ক্ষতিকর পোকা হল মাথা খেকো লেদা পোকা। নাবী করে লাগালে সরুই পোকা বা ডায়মন্ড ব্যাক মথ বেশি ক্ষতি করে। বীজ উৎপাদনের জন্য চাষ করলে পুষ্পমঞ্জরীকে জাব পোকার হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। অন্যান্য পোকার মধ্যে ক্রসোডলমিয়া লেদা পোকা, কালো ও হলুদ বিছা পোকা, ঘোড়া পোকা ইত্যাদি মাঝে মাঝে ক্ষতি করে থাকে। এক্ষেত্রে আপনি কিছুদিন পর পর গাছে কীটনাশক স্প্রে করে দিতে পারেন।

ফসল তোলা ও ফলন:

সাদা রঙ ও আঁটো সাঁটো থাকতে থাকতেই ফুলকপি তুলে ফেলা উচিত। মাথা ঢিলা ও রঙ হলদে ভাব ধরলে দাম কমে যায়। একর প্রতি ফলন ১৫-২৫ টন, হেক্টরে ৩৫-৬০ টন।