মৎস্যখাতে ২২ প্রকল্পে অনিয়মে প্রতিমন্ত্রীর ক্ষোভ

313

মৎস্য প্রতিমন্ত্রী

নিম্নমানের কাজ, কাজে ধীরগতি, বারবার সময় দেওয়ার পরও যথাসময়ে করতে না পারাসহ মৎস্য খাতের চলমান ২২টি প্রকল্পে নানা অনিয়মে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মৎস ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে মৎস্য উপখাতের ২২টি চলমান প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় তিনি প্রকাশ্য অসন্তুষ্টির কথা জানান।

প্রকল্পকাজে ব্যর্থতার জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের সঙ্গে প্রকল্প পরিচালকদের উপরও ক্ষোভ ঝাড়েন প্রতিমন্ত্রী। এসময় তিনি চুক্তি অনুযায়ী কাজে ব্যর্থ ঠিকাদারদের অগ্রিম বিল দেয়া বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। বারবার সময় দেওয়ার পরও যেসব ঠিকাদার কাজ করতে পারেনি তাদের কালো তালিকাভুক্ত করতে প্রকল্প পরিচালকদের নির্দেশ দেন। যারা নিম্নমানের কাজ করেছে সেগুলো চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনাও দেন তিনি।

বৈঠক সূত্র জানায়, চলমান ২২টি প্রকল্প কাজের পর্যযালোচনা সভায় ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠে আসে। এসব প্রকল্পকাজে কোনটিতে মান বজায় রেখে কাজ হয়নি। কোনটিতে সময়মতো কাজ শেষ করতে পারেনি, কিন্তু অগ্রিম বিল নেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে কাজ তো করতে পারেনি বরং বারবার সময় বাড়িয়েও কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদাররা।

জানা গেছে, শর্তানুযায়ী ঠিকাদারদের নির্ধারিত সময়ে কাজ সমাপ্তিতে ব্যর্থতা, বর্ধিত সময় দেয়ার পরও ঠিকাদারদের কাছ থেকে কাজ আদায় করতে না পারা এবং নিম্নমানের প্রকল্পের কাজের জন্য প্রকল্প পরিচালকরাও কোন অংশে কম দায়ী নন। তাদের দায়িত্বে অবহেলার বিষয়টিও বৈঠকে উঠে আসে। এজন্য প্রতিমন্ত্রী প্রকল্প পরিচালকদের প্রতিও অসন্তোষ প্রকাশ করেন।

বৈঠকে প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দুর্বল ও গৎবাঁধা চুক্তির কারণে প্রায়ই লিজ দেওয়া সরকারি সম্পত্তি বেহাত হয়। এভাবে আর হতে দেওয়া যাবে না।

দুঃখ করে তিনি বলেন, অন্যান্য মন্ত্রণালয় যখন প্রকল্পের বাড়তি অর্থ বরাদ্দের জন্য মরিয়া, তখন আমাদের মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পের বরাদ্দকৃত অর্থ ফেরত যাওয়াটা আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জার।

বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন বিভাগের প্রধান, প্রকল্প পরিচালকসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে মৎস্য উপখাতের ২২টি প্রকল্পে বরাদ্দকৃত ৪১৩ কোটি ৮ লাখ টাকার মধ্যে ৯ মাসে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১৯৬ কোটি টাকা। বিগত অর্থবছরে ২৬টি প্রকল্পে বরাদ্দকৃত ৪০৭ কোটি ৩ লাখ টাকার মধ্যে একই সময়ে ব্যয় হয়েছিল প্রায় ১৭৮ লাখ টাকা।

২২টি প্রকল্পের মধ্যে মৎস্য অধিদফতর ১৪টি, মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট ৫টি, মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন ২টি ও ই-সেবাখাতে একটি প্রকল্প বর্তমানে বাস্তবায়নাধীন।

মন্ত্রণালয়ের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপখাতের মোট ৪৫টি প্রকল্পের জন্য চলতি অর্থবছরে মোট বরাদ্দ আছে ৭৭৬ কোটি ১০ লাখ টাকা। উভয়খাতে এই ৯ মাসে ব্যয় হয়েছে মোট ৩৫১ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। এ সময়ে প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি হয়েছে প্রায় ৫৩ ভাগ। কিন্তু ২০১৭-১৮ অর্থবছরে মোট ৪৮টি প্রকল্পে বরাদ্দকৃত ৮২৪ কোটি ২৫ লাখ টাকার মধ্যে একই সময়ে ব্যয় হয়েছিল ৪০০ কোটি ২৬ লাখ টাকা।

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/ মোমিন