যেভাবে পুকুরে পাবদা মাছের একক চাষ করবেন

3697

84700116_1368582966648008_3414945088508264448_n

পুকুরে পাবদা মাছের একক চাষে করণীয় সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই জানা নেই। আমাদের দেশে মাছ চাষ একটি লাভজনক পেশা। মাছ চাষ করে অনেকেই তাদের বেকারত্ব দূর করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। পুকুরে পাবদা মাছ চাষ করে সহজেই লাভবান হওয়া যায়। আসুন জেনে নেই পুকুরে পাবদা মাছের একক চাষে করণীয় সম্পর্কে-

পুকুরে পাবদা মাছের একক চাষে করণীয়:

পুকুর প্রস্তুতি:

পাবদা মাছের পুকুরের তলায় অবাঞ্চিত গ্যাস থাকলে বিশেষ করে অ্যমোনিয়া গ্যাস যাতে না জন্মাতে পারে সে জন্য পুকুর প্রস্ত্তুতির সময় প্রথমেই ভাল করে শুকিয়ে নিতে হইবে।

অতিরিক্ত কাঁদা থাকলে কাদা সরিয়ে দিতে হইবে। শতাংশ প্রতি ১ কেজি চুন দিয়ে পুকুরে অগভীর বা গভীর নলকুপ দিয়ে পানি দিয়ে পূর্ণ করতে হবে।

ভাল পানি ব্যবহারে খামারীরা খুব একটা নজর দেন না। বিশেষ করে আয়রন মুক্ত পানি ব্যবহারে। অধিকাংশ খামারীরা শ্যালু দিয়ে কোন মতে পানি উঠলেই এই পানি ব্যবহারেই মনোনিবেশ করে।

আপনার টিউবওয়েলের পানিকে একটি স্বচ্ছ কাচের গ্লাসে নিয়ে তাতে পেয়ারা গাছের কচি পাতা হাতের তালুতে ভালভাবে ঘষে হালকা রস বের করে রস সমেত পাতা ঐ পানি ভর্তি কাচের গ্লাসে রেখে দিলেই action. শুরু হয়ে গেল।

যদি পানিতে আয়রন থাকে তাহলে পানির রং পরিবর্তন হতে থাকবে। পানিতে যদি আয়রন থাকে তাহলে পানির রং পরিবর্তন হয়ে বেগুনী বর্ণে পরিবর্তন হতে থাকবে। রং যত তাড়াতাড়ি পরিবর্তন হবে পানিতে আয়রনের পরিমান তত বেশী।

আর যদি ১২ ঘন্টা রেখে দেয়ার পরও পানির রং পরিবর্তন না হয় তাহলে সে পানিই হল এক্কেবারে perfect পানি।

এই পানির সহজ পরীক্ষা যতক্ষনে পেলাম ততক্ষনে হ্যাচারীর ১২ টা বেজে গিযেছিল।

অথচ এখন একজন বোরিং মিস্ত্রী অনায়াসে বলে দিতে পারে কোন স্তরে আয়রন নাই।একটা কথা সব পানিতেই কিন্তু কম বেশী আয়রন থাকে)।

পাবদা মাছের পুকুর প্রস্তুতি শেষে পানি দিয়ে ভরে তাতে শতাংশ প্রতি ১০০ গ্রাম আটা ও ১০০ গ্রাম চিটাগুড় একত্রে মিশিয়ে পানিতে ছিটিয়ে দিতে হইবে।

এক্ষেত্রে অটো কুড়া ব্যবহারেও চলে। তাতে প্রাণী প্ল্যাংটনের আধিক্যের সৃষ্টি হবে।রেনু অবস্থায় ফাইটোপ্ল্যাংটনের প্রতি আকর্ষন থাকলেও যত বড় হতে থাকবে ততই জু প্ল্যাংটনের প্রতি দিকে আকর্ষিত হতে থাকে।

এভাবে সপ্তাহ খানেক পড়ে পুকুরে পাবদা মাছের পোনা ছাড়তে হবে। নার্সিং পদ্ধতির চেয়ে সরসরি পাবদা মাছের পোনা ছাড়লে মৃত্যহার কম হয়।

তারপরেও মজুদের ৩০% মৃত্যহার ধরে খাবার দেয়া জরুরী। পাবদার পোনা পুকুরে ছাড়ার সময় কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরী।

পোনাগুলোকে একটা হাপায় রেখে পটাসিয়াম পার ম্যাঙ্গানেট দ্রবনে হালকা ভাবে গোসল দিয়ে ছাড়তে হবে।

এখন পাবদা মাছের অনেক ভালমানের ভাসমান খাবার বাজারে এসেছে। শুরুতে ৪০% আর ১০ গ্রাম ওজনের পরে ৩৫% প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার দিলেই চলবে।

মজুদ ঘনত্ব:

শতাংশ প্রতি ৫০০ থেকে ১০০০ টি মজুদ করা যেতে পারে।

পাবদা মাছ সৌখিন মাছ বিধায় পানিতে অক্সিজেনের প্রাপ্যতা পর্যাপ্ত পরিমান নিশ্চিত রাখতে হবে।

তা না হলে ভোর বেলায় মাছ ভেসে উঠে মারা যেতে পারে। সে জন্য পুকুরের পাড়ে নলকুপের পানি দেয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে।

যখনই মাছ ভেসে উঠবে তখনি পানি ছেড়ে পর্যাপ্ত অক্সিজেনে ব্যবস্থা রাখতে হবে। আরেকটি কথা মাটির নীচের পানিতে অক্সিজেনের পরিমান কিন্তু কম থাকে।

সে জন্য শ্যালু পানিকে উপর হতে বাধাগ্রস্থ করে ফেলালে পানিতে অক্সিজেনের পরিমান বাড়বে।

এভাবে ৫/৬ মাসেই এক একটি পাবদার ওজন ঘনত্ব ভেদে ৪০/৫০ গ্রাম হবে।অধিক ঘনত্বে যারা চাষ করবেন তারা অবশ্যই এয়ারেটর ব্যবহার করবেন।

ফার্মসএন্ডফার্মার/১৮ফেব্রু২০২০