গাভীর দুধ উৎপাদন বৃদ্ধির গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ

410

পুষ্টিকর খাবারের ওপর নির্ভর করে দুধ উৎপাদনক্ষমতা। তাই গাভীকে বিশেষ ভাবে সুষম দানাদার খাদ্য সরবরাহ করতে হবে। পরিমিত পরিমাণে খাদ্য সুষম দানাদার খাদ্য উপাদান মিশ্রনের সঠিক মাত্রা থাকে।

পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি সরবরাহঃ- গাভীর শরীরে ৫০% এবং দুধে প্রায় ৮৭% পানি থাকে তাই গাভীকে ইচ্ছামত পানি পান করার ব্যবস্থা করলে দুধ উত্পাদন বেশি হয় এবং দুধে মাখনের পরিমাণ বেশি থাকে। এক লিটার দুধ উৎপাদনের জন্য গাভীর প্রায় চার লিটার পানির প্রয়োজন হয়। অথচ অধিকাংশ সময় গাভীকে পর্যাপ্ত পানি দেয়া হয় না। যেমন- রাতের বেলা পিপাসা লাগলেও গাভী পানি পান করতে পারে না। পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গাভীকে পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি দিলে দুধের উৎপাদন প্রায় ২০ শতাংশ বেড়ে যায়। তাই গাভী যেন প্রয়োজনমত পানি পান করতে পারে সে জন্য চব্বিশ ঘণ্টা পানির পাত্রে পানি দিতে হবে। দেহের পরিপাকতন্ত্র সঠিকভাবে পরিচালিত হওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সুষম পানি প্রয়োজন। পরিমিত পানি দেহের মেটাবলিজম ঠিক রাখে।

অতিরিক্ত খাদ্য সরবরাহ না করাঃ- প্রচলিত ধারণা হচ্ছে গাভীকে বেশি খাবার দিলে দুধ উত্পাদন বেশি হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে সুষম, পুষ্টিকর খাবার গাভীর শারীরবৃত্তীয় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এবং দুধ উত্পাদনের জন্য অপরিহার্য কিন্তু অতিরিক্ত খাবার কখনোই নয়। বরং এতে হিতে বিপরীত হয়। খাবার হজমের জন্য পাকস্থলীর রাসায়নিক পরিবেশ হচ্ছে ক্ষারীয়। গাভী যত বেশি জাবর কাটবে খাবারের সাথে বেশি লালা মিশ্রিত হবে এতে খাবার বেশি হজম হবে। গাভী জাবর কাটার সময় না পেলে খাবার হজম হবে না। আর এ কারণে পুষ্টিও কম পাবে। আর পুষ্টি কম পেলে দুধ উত্পাদনও কমে আসবে। তাই খাবার হজমের জন্য গাভীকে কমপক্ষে আট ঘণ্টা জাবর কাটার সময় দিতে হবে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর আর কোনো খাবার দেয়া ঠিক হবে না।

অতিরিক্ত খড় সরবরাহ না করাঃ- আমাদের কৃষকের নিকট গো- খাদ্যর অভাব একটি নিয়মিত সংকট। দেশের গবাদি পশুর প্রধান খাদ্য হল খড়। কিন্তু খড়ের পুষ্টিমান খুবই কম। অনেকে খামারী আছেন যারা খড় কে ঘাসের বিকল্প ভাবেন। পর্যাপ্ত ঘাস সরবরাহ না করতে পেড়ে খড়ের পরিমান বাড়িয়ে দেন এতে গভীর শরীর শুকিয়ে যায় ও দুধের উৎপাদন কম হয়। পরিমাণ মত খড় সরবরাহ করা যেতে পারে। তবে তা ঘাসের বিকল্প হিসেবে নয়।

পর্যাপ্ত কাঁচা ঘাসের সরবরাহ করাঃ- গাভীর দুধ উৎপাদন বাড়াতে কাঁচা ঘাসের কোনো বিকল্প নেই। সুষম খাদ্যের পাশাপাশি কাঁচা ঘাস দুধ উৎপাদন বাড়ায়। পর্যাপ্ত পরিমানে পুষ্টিকর কাঁচা ঘাসের অভাবে দুধের উৎপাদন কম হতে পারে। তাই গাভীকে সঠিক মাত্রায় পুষ্টিকর ঘাস সরবরাহ করতে হবে। ঘাস যদি ১-১.৫ ইঞ্চি প রিমানে কেটে দেয়া যায় তাহলে আর ও ভাল হয়। ঘাসের বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও মিনারেল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের উপস্থিতিতে দুধের উৎপাদন বাড়ায়।

ফার্মসএন্ডফার্মার/২৩সেপ্টেম্বর২০