যশোরে শিম চাষে ফলন বিপর্যয়, খরচ না ওঠার আশঙ্কা

553

শিম

তরিকুল ইসলাম মিঠু, যশোর থেকে: যশোর চলতি বছরে ১৩শ ৬৭ হেক্টর জমিতে শিম চাষ হয়েছে। তবে শিম চাষে আবাওয়া অনুকুলে না থাকায় কয়েক হাজার কৃষক ক্ষতির মুখে পড়েছে। এর ফলে ভাইরাসও পোকামাকড়ের আক্রমণে কাঙ্খিত উৎপাদন পাচ্ছে না কৃষকরা।

সবজি উৎপাদনে খ্যাত যশোর জেলায় এ বছর ১৩শ ৬৭ হেক্টর জমিতে শিম চাষ হয়েছে। আর এ শিম চাষের সাথে সংশ্লিষ্ট রয়েছে জেলার প্রায় ১০ হাজার কৃষক।

বিশেষ করে যশোরের বারীনগর, মানিকদিহি, হৈবতপুর, খাজুরা, তীরেরহাট, চুড়ামনকাঠি, শাহবাজপুর ও চৌগাছা ,বাঘারপাড়া উপজেলার কৃষকরা এ শিম চাষের দিকে ঝুকে পড়েছে। চারা উৎপাদান ও চারা রোপন ভাল হলেও আবাওয়া অনুকুল না থাকায় এলাকার অধিকাংশ কৃষকরা ক্ষতির মুখে পড়েছে। সম্প্রতি মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, মাঠ জুড়ে সবুজ আর বেগুনি রঙের বাহার। তার মাথায় সাদা সাদা ফুলে ভরে গেছে। তবে এ বছর বৃষ্টিপাত কম ও তীব্র তাপমাত্রার কারণে শিমের মারাত্মক ফলন বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।

যশোর নতুন হাটের শিম চাষি মোকলেছুর রহমান জানান, তিনি চলতি মৌসুমে ৪ বিঘা জমিতে শিম চাষ করেছি। দিন পনের আগে গাছে গাছে প্রচুর ফুল এসেছে। তবে সেই ফুল ফলে পরিণত হচ্ছে না। শিমে পরিণত হওয়ার আগেই ফুলগুলো ঝরে পড়ছে। তাই তিনি শঙ্কা প্রকাশ করছে এ বছর শিম চাষ করে উৎপাদনের টাকাই উঠবে না।

শিম চাষি রমজান আলী জানান, অন্যান্য বছরে এই মৌসুমে শিম চাষ করে বিঘা প্রতি তারা এক থেকে দুই লাখ টাকা আয় করলেও ফলন বিপর্যয়ের কারণে এখন একবিঘা জমিতে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারছেন না। ফলে শিম চাষ করে তাদের পথে বসার উপক্রম হয়েছে। তিনি বলেন, দিনে-রাতে তাপমাত্রা একই রকম থাকায় শিম চাষের জন্য মারাত্মক সমস্যা দেখা দিয়েছে। শিম চাষের জন্য রাতের তাপমাত্রা কিছুটা কম থাকলে ভালো হয়। কিন্তু বর্তমান আবহাওয়া শিম চাষের জন্য মোটেও অনুকূলে নয়।

বাঘারপাড়া দরাজহাট এলাকার শিম চাষী রতন খাঁ জানান, চলতি বছরে বৃষ্টি হয়নি বলেলেই চলে। যে কারণ তাপমাত্রা খুবই বেশি। ক্ষেতের অনেক জায়গায় মাটিতে আদ্রতা না থাকায় শিম গাছ মরা গেছে। প্রতিদিন শিম ক্ষেতে সেচ দিয়ে গাছকে রক্ষা করা যাচ্ছে না। তার পরেও পোকা-মাকড়ের উপদ্রের কারণে শিমের ফুল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এক বিঘা শিম ক্ষেত থেকে এক মণ শিমও তুলা যাচ্ছে না। অথচ আগের বছরে একবিঘা জমিতে আমরা দুই থেকে তিন মণ পর্যন্ত শিম পেয়েছি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর যশোরের উপপরিচালক কৃষিবিদ কাজী হাবিবুর রহমান জানান, কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে এ অঞ্চালের কৃষকদের শিম চাষের উপর প্রশিক্ষণও পোকা-মাকড় দমনের ওপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে থাকে। তবে বৈশ্বিক তাপমাত্রার কারণে এ অঞ্চলে শিম চাষ ব্যবহত হচ্ছে। বৃষ্টি কম ও বেশি হওয়ায় শিম চাষে ফলন কম হচ্ছে। একই কারণে শিমে ভাইরাসও পোকামাকড়ের আক্রমণও বেড়ে গেছে কয়েকগুনে। এসব কারণে কৃষকের কাঙ্ক্ষিত উৎপাদন হচ্ছে না বলে তিনি জানান। সূত্র: এনবি

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/মোমিন